এক সময়ের সহজ প্রতিপক্ষ মালদ্বীপ হঠাৎ হয়ে উঠেছিল বাংলাদেশের জন্য ভীতির এক নাম। সর্বশেষ ১০ ম্যাচে বাংলাদেশের চেয়ে মাঠের পারফম্যান্স অনেক ভালো ছিল দ্বীপ দেশটির। এর মধ্যে ২০১৬ সালে ফ্রেন্ডলি ম্যাচ খেলতে গিয়ে ৫ গোল খেয়ে আসার পর মালদ্বীপের বিপক্ষে খেলতে নামলে হাঁটু কাঁপাকাঁপি শুরু হয়ে যেতো বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের।
ওই ম্যাচের পর বাংলাদেশ আরো দু’বার হেরেছে মালদ্বীপের কাছে। তবে গত সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ থেকে বাংলাদেশ আগের ধারায় ফিরতে শুরু করেছে। সর্বশেষ তিন ম্যাচের দুটি জিতেছে, একটি ড্র।
মালদ্বীপের বিপক্ষে বাংলাদেশের ফুটবলারদের শারীরিক ভাষার পরিবর্তন এসেছে। ম্যাচের আগে হেরে বসার আতঙ্কে এখন আর ভোগে না লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। ২০২৬ বিশ্বকাপ বাছাইয়ের প্রথম রাউন্ডে এই মালদ্বীপ বাধাই টপকেছে বাংলাদেশ। অ্যাওয়ে ম্যাচে ১-১ গোলে, ঘরের মাঠে ২-১ গোলের জয়ে বাংলাদেশ উঠেছিল বিশ্বকাপ বাছাইয়ের দ্বিতীয় রাউন্ডে। তার আগে গত বছর সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশ জিতেছিল ৩-১ গোলে।
সাম্প্রতিক সময়ের এই পারফরম্যান্স মালদ্বীপের বিপক্ষে বাংলাদেশকে বেশ সাহসী করে তুলেছে। আগামী ১৩ ও ১৬ অক্টোবর ঘরের মাঠের দুই প্রীতি ম্যাচ সামনে রেখে অনুশীলন করছে বাংলাদেশ দলের ফুটবলাররা। এই সিরিজের সম্ভাব্য ফলাফল কি হতে পারে, সে বিষয়ে বলতে গিয়ে ফরোয়ার্ড রাকিব হোসেন এখন মালদ্বীপকে ভয় পান না বলেই উল্লেখ করেছেন।
বৃহস্পতিবার অনুশীলন শেষে রাকিব হোসেন বলেন, ‘মালদ্বীপ দলকে আগে ভয় লাগতো। শেষ তিন ম্যাচ খেলেছি। জিতেছি ও ড্র করেছি। পারফরম্যান্স আমাদের ভালো হয়েছে। এখন আর ভয় করে না। তাই চেষ্টা করবো তাদের বিপক্ষে ভালো ফলাফল অব্যাহত রাখতে। এক কথায় জিততে।’
গোলের জন্য এখন কোচকে রাকিবের দিকে তাকিয়ে থাকতে হয়। প্রথাগত স্ট্রাইকার না থাকায় অনেক ম্যাচেই রাকিব উদ্ধার করেছেন দলকে। এ বিষয়ে বসুন্ধরা কিংসের এই ফরোয়ার্ড বলেছেন, ‘আসলে স্ট্রাইকার হিসেবে চেষ্টা করি গোল করতে। গোল করাতে। সামনের ম্যাচেও তাই করবো। ম্যাচের গুরুত্বপূর্ণ গোল করা। না করতে পারলে তা আমাদের ব্যর্থতা। গোল করতে হলে মানসিকভাবে শক্তিশালী হতে হয়। কোচ কাজ করছে। আমরা কাজ করছি। ম্যাচের পরিস্থিতি নিয়ে অনুশীলন হয় আমাদের। চেষ্টা করছি কোচ যা শিখাচ্ছেন তা কাজে লাগানোর। আগের চেয়ে ভালো খেলার।’
সহকারী কোচ হাসান আল মামুন বলেছেন, ‘আমরা এখানে জিততে চাইবো। জেতার জন্য যে কৌশল দরকার তা নিচ্ছি। ছেলেরা প্রস্তুতি নিচ্ছে। সবাই জানে এই বছরের শেষ ম্যাচ খেলতে যাচ্ছে। এই দলটি অনেকদিন ধরে খেলছে। হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা আসার পর সবাই একসঙ্গে খেলছে। কিছু খেলোয়াড় পরিবর্তন হচ্ছে। একটি দল হিসেবে তারা জানে তাদের দায়িত্ব কতোটুকু। তারা কি করতে পারে।’
দেশের মাটিতে অনেক দিন পর খেলা হচ্ছে। সেই অস্ট্রেলিয়া ম্যাচের পর। এ দুই ম্যাচে সবাই সর্বোচ্চটা ঢেলে দেবে উল্লেখ করে সহকারী কোচ বলেন, ‘সবার সামনে সর্বোচ্চ দেওয়ার লক্ষ্য। লক্ষ্য থাকবে মালদ্বীপের বিপক্ষে জিততে। দর্শকদের সামনে গোল করতে হবে। জিততে হলে তো অবশ্যই গোলের বিকল্প নেই। দর্শক হলো আমাদের প্রেরণা। হোমে আমরা যে কোনও দলের কাছে শক্ত প্রতিপক্ষ। সমমানে দলের বিপক্ষে জয়ের জন্য খেলবো। সেই রসদ আছে। দর্শক যারা আসবে কাউকে নিরাশ করবো না। সবাই যেন বলে, বাংলাদেশ দল উন্নতি করেছে। দিন শেষে বাংলাদেশের পতাকা ওপরেই থাকবে।’
আরআই/আইএইচএস/