সারারাত ঘুমাতে পারেনি রানু। আর মাত্র দুদিন বাকি।
মাঝে মাঝে বিছানা ছেড়ে নির্জন নিশিকে উপভোগ করছে ঘরের ছাদে উঠে। তবুও কিছুতেই যেন স্বস্তি পাচ্ছে না। বাবা-মা, ভাই-বোনের মুখ সামনে ভেসে এলেই তার দুচোখ বেয়ে অশ্রুতে বুক ভেসে যাচ্ছে।
মাঝে মাঝে জোনাকির নিভু নিভু আলো ও ঝিঁ-ঝিঁ পোকার ডাক রাতের স্তব্ধতাকে ছেদ করছে। এক ঘুটঘুটে অন্ধকার রানুর জীবনকে যেন আচ্ছন্ন করে ফেলছে। রানু জানে না এর শেষ কোথায়?
রাতের একাকিত্বে ছাদের এপাশ-ওপাশ পায়চারি করে চলছে সে। হঠাৎ রানুর চোখ গেল তার ভাই ফাহিমের ঘরের দিকে। একটা জ্বলন্ত সিগারেটের আলো তার ঠোঁটের কোণে জ্বলছে আর নিভছে। কী করছে ভাই এত রাতে? নাকি আমার মতো তারও অস্থিরতা কাজ করছে।
রানু জানালার পাশে দাঁড়ালো নিঃশব্দে। সিগারেটের ধোয়ার কুণ্ডলি গোল গোল করে ফাহিম ওপর দিকে ছাড়ছে আর অবাক হয়ে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছে। যেন এক ভয়াবহ দুঃসময়ের সংকেত।
একটার পর একটা সিগারেটের ছাইয়ে কখন যে অ্যাসট্রেটা ভরে গেছে খেয়াল করেনি। এগুলো কি সিগারেটের ছাই? নাকি ভাইয়ের চোখের স্বপ্নগুলো পুড়ে পুড়ে ছাই হয়ে পড়ছে অ্যাসট্রেতে।
ভাবতে ভাবতে কখন যে ফজরের আজান পড়েছে টের পায়নি রানু। ততক্ষণে পাখির কলরবে রবির আলো ছড়িয়ে পড়েছে চারিদিকে।
এসইউ/জেআইএম