শেখ হাসিনার জায়গা একমাত্র ফাঁসির মঞ্চ: জামায়াত

0
2


বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের গুম, খুন, হত্যা এবং দুর্নীতি ও লুটপাটের দায়ে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার জায়গা একমাত্র ফাঁসির মঞ্চ বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মুহাম্মদ শাহজাহান চৌধুরী।

সোমবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে চট্টগ্রাম ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে নগর জামায়াতের সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর আওয়ামী লীগের লগি-বৈঠার নৃশংস হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের খুনিদের অবিলম্বে গ্রেফতার এবং বিচারের দাবিতে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

মুহাম্মদ শাহজাহান বলেন, ‘জামায়াতের তিনজন মন্ত্রী গোটা পৃথিবীকে জানিয়েছিল তারা দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেয় না। জামায়াত প্রমাণ করেছিল তারা সৎভাবে দেশ পরিচালনায় সক্ষম। শান্তিপূর্ণ সমাবেশে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ লগি-বৈঠা নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। সেদিনের সেই ঘটনা ইতিহাসের সব বর্বরতাকে হার মানিয়েছিল। শেখ হাসিনা খুন, হত্যা, দুর্নীতি, লুটপাট, বিরোধীদলকে হত্যার ক্ষেত্রে চ্যাম্পিয়ন। তার জায়গা হবে একমাত্র ফাঁসির মঞ্চে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সব ষড়যন্ত্র রুখে দিতে সবাইকে প্রস্তুত থাকতে হবে। ফ্যাসিবাদের জায়গা এই দেশের মাটিতে আর হবে না। ৫ আগস্টকে কোনোভাবে ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না। চট্টগ্রামের মাটিতে ফ্যাসিবাদের উত্থান হতে দেওয়া যাবে না।’

নগর জামায়াতের আমির, সাবেক এমপি শাহজাহান চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মুহাম্মদ নুরুল আমিন, নগর জামায়াতের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মোহাম্মদ উল্লাহ ও ফয়সাল মুহাম্মদ ইউনুছের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন নেজামে ইসলাম পার্টির নায়েবে আমির আব্দুর রহমান চৌধুরী, নগর জামায়াতের নায়েবে আমির ড. আ. জ. ম. ওবায়েদুল্লাহ ও মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম, নগর জামায়াতের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মাওলানা খাইরুল বাশার, মুহাম্মদ উল্লাহ, ফয়সাল মুহাম্মদ ইউনুছ ও মোরশেদুল ইসলাম চৌধুরী, নগর জামায়াতের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক কাউন্সিলর অধ্যক্ষ শামসুজ্জামান হেলালী, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন চট্টগ্রাম মহানগরী সভাপতি এস এম লুৎফর রহমান। সমাবেশে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ছাত্রশিবির চট্টগ্রাম মহানগরী দক্ষিণের সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি নাহিদুল ইসলাম প্রমুখ।

সভাপতির বক্তব্যে নগর জামায়াতের আমির শাহজাহান চৌধুরী বলেন, ‘২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর শেখ হাসিনা লগি-বৈঠা দিয়ে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের হত্যা করেছিল। যার মাধ্যমে তারা দীর্ঘ ১৭ বছর ফ্যাসিস্ট সরকার প্রতিষ্ঠা করেছিল। জামায়াতে ইসলামীসহ সব বিরোধীদলকে কথা বলতে দেওয়া হয়নি।’

তিনি আরও বলেন, ‘ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা লগি-বৈঠা দিয়ে জামায়াতের কর্মীদের হত্যা করেছিল। হত্যাকারীদের বিচার বাংলার মাটিতে হতে হবে। আমরা ফ্যাসিস্টদের মতো প্রতিশোধ নেবো না। আমরা দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে জুলুম-নির্যাতন সহ্য করেছি। আওয়ামী লীগ ১৮ ঘণ্টাও সহ্য করতে পারেনি। তারা পালাতে বাধ্য হয়েছে। বাংলাদেশে কোনো আগ্রাসন জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবির আর সহ্য করবে না।’

নগর জামায়াতের নায়েবে আমির ড. আ. জ. ম. ওবায়েদুল্লাহ বলেন, ‘স্বৈরাচারের উত্থান যেভাবে ঘটেছিল জনরোষে সেভাবে পতন হয়েছে। যারা পতিত স্বৈরাচারকে পুনর্বাসন করতে চায় তাদের প্রতিহত করতে হবে।’

নগর জামায়াতের নায়েবে আমির মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, ‘২৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া হত্যাকাণ্ড ২৮ অক্টোবর ষোলোকলা পূর্ণ করেছিল। অন্তত ৪০ জনকে হত্যা করেছিল আওয়ামী লীগ।’

সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম নগর জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য ডা. ছিদ্দিকুর রহমান, আবু হেনা মোস্তফা কামাল, আবু বকর, মোহাম্মদ আমির হোসাইন, নেজামে ইসলাম পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা হাফেজ ফজলুল করিম জিহাদী, ছাত্রশিবির আইআইইউসির সভাপতি হাসনাঈন আহমেদ, ছাত্রশিবির নগর উত্তর সেক্রেটারি তানজির হোসেন জুয়েল ও মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি ইব্রাহিম হোসাইন রনি, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহীদ ফয়সাল আহমেদ শান্তর বাবা জাকির হোসাইন প্রমুখ।

সমাবেশে সাংস্কৃতিক পরিবেশন করে পারাবার শিল্পী গোষ্ঠী, পাঞ্জেরি শিল্পী গোষ্ঠী ও দর্পণ শিল্পী গোষ্ঠী। সমাবেশ শেষে ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর আওয়ামী ফ্যাসিস্টের পেটুয়া বাহিনীর পল্টনে নারকীয় হত্যাকাণ্ডের প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

এএজেড/বিএ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।