সরকারি তথ্যের এসএমএস পাঠাতে মোবাইল অপারেটরের ‘গড়িমসি’

0
4


দ্রুততম সময়ে নাগরিকদের কাছে জনগুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন তথ্য এসএমএসের মাধ্যমে পাঠিয়ে থাকে সরকার। সম্পূর্ণ বিনামূল্যে এসএমএস পাঠাতে এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশিকাও রয়েছে। সেই নির্দেশিকা মেনে এসএমএস পাঠাতে ‘গড়িমসি’ করছে মোবাইল অপারেটরগুলো। অথচ নিজেদের প্রমোশনাল (প্রচারমূলক) এসএমএস দিয়ে গ্রাহকদের অতিষ্ঠ করায় কিছুদিন আগে জরিমানার মুখে পড়েছে শীর্ষ তিন অপারেটর। এতে ক্ষুব্ধ সরকারের ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ।

রোববার (২৭ অক্টোবর) সরকারের ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের টেলিকম শাখার এক চিঠি থেকে এ তথ্য জানা গেছে। চিঠিতে সই করেছেন বিভাগের উপ-সচিব মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম।

বিটিআরসি মোবাইল অপারেটরগুলোকে ‘বিনামূল্যে সরকারি তথ্য (গভর্নমেন্ট ইনফো) এসএমএস প্রেরণ সংক্রান্ত নির্দেশিকা, ২০২৪’ যথাযথভাবে অনুসরণ করতে নতুন করে নির্দেশনাও জারি করা হয়। একই সঙ্গে এ সংক্রান্ত তথ্য ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের ওয়েবসাইটে আপলোড ও স্থায়ীভাবে দৃশ্যমান রাখার জন্যও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়, জনসচেতনতা বৃদ্ধি, শিক্ষা ও সেবামূলক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে রাষ্ট্রের সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও সংবিধিবদ্ধ সংস্থার অনুরোধে বিভিন্ন তথ্য জনগণের কাছে মোবাইল অপারেটরদের সহযোগিতায় বিনামূল্যে ‘গভ. ইনফো’ মাস্কিংয়ের মাধ্যমে পাঠানো হয়। মোবাইল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে বিনামূল্যে জনগুরুত্বপূর্ণ এসব সেবা সব গ্রাহকের কাছে দ্রুততম সময়ের মধ্যে পৌঁছানোর জন্য ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ থেকে গত ৬ ফেব্রুয়ারি একটি নির্দেশনা জারি করা হয়।

এতে আরও বলা হয়, সম্প্রতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে, অনেকে এ নির্দেশনা যথাযথভাবে অনুসরণ করছে না। সেজন্য এ নির্দেশিকা ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের ওয়েবসাইটে আপলোড করে স্থায়ীভাবে দৃশ্যমান রাখার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে জানতে মোবাইল অপারেটরগুলোর কমিউনিকেশন্স বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা এ নিয়ে গণমাধ্যমে কথা বলতে রাজি হননি। পরে তারা এ বিষয়ে তাদের অবস্থান জানাবেন বলে উল্লেখ করেছেন।

নির্দেশিকায় যত নিয়ম

চলতি বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি সরকারের ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় থেকে মোবাইল অপারেটরদের সহযোগিতায় বিনামূল্যে সরকারি তথ্য গ্রাহককে পাঠানোর নির্দেশ জারি করা হয়। এ ক্ষেত্রে কিছু শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়।

শর্তসমূহ হলো

>> ‘গভ. ইনফো’ মাস্কিংয়ে কেবল সরকারি প্রতিষ্ঠান, স্বায়ত্তশাসিত ও সংবিধিবদ্ধ সংস্থার এসএমএসসমূহ প্রচার করা হবে।

>> এসএমএস প্রেরণকারী প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রেরিতব্য এসএমএসের কনটেন্ট ও এসএমএস প্রচারের তারিখ উল্লেখ করে প্রেরণকারী প্রতিষ্ঠানের স্ব স্ব প্রশাসনিক মন্ত্রণালয় বা বিভাগ কর্তৃক ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের মাধ্যমে বিটিআরসিতে চিঠি পাঠাতে হবে।

>> এসএমএসের কনটেন্ট অবশ্যই বাংলায় এবং ২০০ ক্যারেক্টারের (স্পেসসহ) মধ্যে থাকতে হবে। কেবল ওয়েবসাইটের লিংক, ই-মেইল অ্যাড্রেস, ট্রেডমার্ক করা শব্দ, কোনো বৈজ্ঞানিক ফর্মুলা এবং ইকুয়েশন ইংরেজিতে দেওয়া যাবে।

>> এসএমএস প্রেরণ সংক্রান্ত পত্র এসএমএস প্রচারের জন্য নির্ধারিত তারিখের ৭ কার্যদিবস আগে বিটিআরসিতে পাঠানো নিশ্চিত করতে হবে।

>> ‘গভ. ইনফো’ মাস্কিং ব্যবহার করে দিনে সর্বোচ্চ দুটি সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের এসএমএস প্রচার করা হবে।

>> একটি সরকারি সংস্থা থেকে মাসিক সর্বোচ্চ একটি এসএমএস প্রচার করা হবে।

>> জাতীয় দিবস, জাতীয় অনুষ্ঠান, জাতীয় দুর্যোগ ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী সংবলিত শুভেচ্ছা বার্তা বা এসএমএস সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পাবে।

>> বিভিন্ন জাতীয় দিবস বা উৎসবের বিষয়ে শুধুমাত্র দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রণালয়ের এসএমএস প্রচার করা হবে। যেমন-২৬ মার্চ বা ১৬ ডিসেম্বরের এসএমএস প্রচারের ক্ষেত্রে কেবল মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কনটেন্ট বা টেক্সট প্রচার করা হবে।

>> একই তারিখে একের অধিক এসএমএস প্রচারের পত্র গৃহীত হলে সেক্ষেত্রে জনসচেতনতামূলক বা জনগুরুত্বপূর্ণ এসএমএস অগ্রাধিকার পাবে।

>> নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি বা ভর্তি বিজ্ঞপ্তি সম্পর্কিত কোনো এসএমএস প্রচার করা হবে না।

>> এসএমএস পাঠানোর ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট অডিয়েন্স, গ্রুপ, এলাকা উল্লেখ করে আবেদন করাকে উৎসাহিত করা হচ্ছে।

>> দলীয় নির্বাচনী প্রচার সংক্রান্ত বিষয়ে এ এসএমএস সেবা ব্যবহার করা যাবে না।

>> এসএমএস প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ, সংস্থার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার কাছ থেকে এসএমএস প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ বা সংস্থার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের মোবাইল নম্বর অপারেটর অনুযায়ী এক্সেল ফরমেট বিটিআরসিতে পাঠাতে হবে।

এএএইচ/এমআইএইচএস/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।