ক্রেমলিনের ভেতরে কী আছে? কেন হলো হামলা?

0
3


শত শত বছর ধরে রুশ ক্ষমতার কেন্দ্র ক্রেমলিন। নিরাপত্তার ঘেরাটোপে সুরক্ষিত এক দুর্গ। মস্কোর এই প্রাণকেন্দ্রে হামলার পর প্রশ্ন উঠছে এর নিরাপত্তা নিয়ে।

সত্যিকার হামলা নাকি নিজেদের সাজানো নাটক? রুশ ফেডারেশন ও সোভিয়েত ইউনিয়নের ক্ষমতার প্রতীক ক্রেমলিন যা বলছে সেটি সত্য হলে প্রেসিডেন্ট আসলেই কতটা সুরক্ষিত সে প্রশ্নও জোরালোভাবে উঠবে।ন প্রশ্ন উঠবে রাশিয়ার বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নিয়েও।

১৫ শতকের শেষের দিকে নির্মিত ক্রেমলিন দূর্গকে ঘিরে রেখেছে সুউচ্চ দেয়াল। ভেতরে ৫টি প্রাসাদ, ৪টি গির্জা আর ২০টি টাওয়ার। একসময় রুশ সম্রাট বা জারদের বাসস্থান ছিল এটি। বর্তমানে রুশ প্রেসিডেন্টের বাসভবনসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কার্যালয়। এখানে রয়েছে একটি জাদুঘর। বছরে ৩০ লাখের মতো দর্শনার্থী ভ্রমণ করে সেখানে।

ঐতিহ্যবাহী এই ক্রেমলিনে বিস্ফোরণকে প্রতীকী অর্থে দেখা হচ্ছে, বিবেচনা করা হচ্ছে রাশিয়ার হৃদয়ে হামলা হিসেবে। এর আগেও রুশ ভূখণ্ডে ঢুকে হামলার অভিযোগ আছে। তবে একেবারে প্রাণকেন্দ্রে এমন দুঃসাহসী হামলার পর প্রশ্ন উঠছে পুরো নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েই। ইউক্রেনসহ পশ্চিমারা অবশ্য বলছে, দায় চাপানোর জন্য রাশিয়াই সাজিয়েছে হামলার ঘটনা। কোনো কোনো বিশ্লেষক আবার মনে করছেন, ক্রেমলিনে ড্রোন পাঠানোর মধ্য দিয়ে রাশিয়াকে এক ধরনের সতর্কবার্তা পাঠিয়েছে ইউক্রেন।

জন হপকিন্স ইউনিভার্সিটির অ্যাডভান্সড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের সিনিয়র ফেলো আলেক্সান্ডার ভিন্দম্যান বলেন, একটি কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ লক্ষবস্তুতে হামলায় বহুদিন ধরেই চেষ্টা করছে ইউক্রেন। ইউজে টোয়েন্টি টু, মিউগিন ফাইভ কার্গোসহ বেশ কিছু ড্রোন আছে ইউক্রেনের, যেগুলো এই দূরত্বে যেতে পারে। রাশিয়ার নিরাপত্তায়ও যে আঘাত হতে পারে সে বিষয়ে বার্তা দেয়া উদ্দেশ্য হতে পারে।

কেউ কেউ আবার বলছেন, রুশ নাগরিকদের যুদ্ধ নিয়ে সচেতন করা হতে পারে পুতিন প্রশাসনের উদ্দেশ্য। আর সেজন্যও হতে পারে সাজানো হামলা। কিয়েভ বা ক্রেমলিন নয়, তৃতীয় কোনো পক্ষও হামলার পেছনে জড়িত থাকতে পারে, এমনটিও ভাবছেন কোনো কোনো বিশ্লেষক।

সেন্টার ফর এ নিউ আমেরিকান সিকিউরিটির সিনিয়র ফেলো স্যামুয়েল বেনডেট বলেন, হতে পারে ক্রেমলিনে আঘাতের সক্ষমতা ও মস্কোর আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার দুর্বলতা দেখাতে চেয়েছে ইউক্রেন। রাশিয়া যাতে সেনা পুনর্বিন্যাস করে নিজেদের অঞ্চলের সুরক্ষায় বেশি নজর দেয়। আবার মস্কোর প্রাণকেন্দ্রে এমন আঘাত, তৃতীয় কোনো রুশ বিরোধী পক্ষের দ্বারাও সম্ভব।

গত কিছুদিন ধরেই মস্কোর গুরুত্বপূর্ণ ভবনগুলোর ছাদে দেখা গেছে শক্তিশালী আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। তবে কি আগে থেকেই ক্রেমলিনের ধারণা ছিল এমন কিছু হতে পারে?

সূত্র: আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ও  ব্রিটানিকা ডট কম।

এটিএম/