জাপানের ফুকুশিমায় বিস্তীর্ণ ক্ষেতজুড়ে চলছে ধান চাষের প্রস্তুতি। তবে অবাক করা তথ্য হচ্ছে, এই ক্ষেতে উৎপাদিত ধান থেকে পাওয়া চাল খাওয়ার জন্য নয়, ব্যবহার করা হবে পরিবেশবান্ধব প্লাস্টিক তৈরিতে। অভিনব এই উদ্যোগ দেশটির বায়োমাস রেসিন নামের টোকিওভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠানের। খবর রয়টার্সের।
মূলত, ২০১১ সালের মার্চে পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রে নজিরবিহীন বিস্ফোরণে কেঁপে উঠে ফুকুশিমা। গোটা অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে ভয়াবহ মাত্রার তেজস্ক্রিয় বিকিরণ। এরপরই জনশূন্য হয়ে পড়ে শহরের পর শহর। ঘরবাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয় বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে মাত্র আড়াই মাইল দূরের নামি শহরের বাসিন্দারাও। এই দুর্ঘটনার পর আবারও ফুকুশিমায় কৃষিকাজ শুরু হয়েছে। তবে, ক্ষতিকর হওয়ার আতঙ্কে এই অঞ্চলের চাল খাওয়ায় আগ্রহ নেই মানুষের। আর তাই চালের এই বিকল্প ব্যবহার।
এদিকে, অঞ্চলটিতেও ফিরতে শুরু করেছে মানুষ। তবে, সংখ্যাটা খুব বেশি না। দুর্যোগের আগে নামি শহরে থাকা ২১ হাজারের বেশি বাসিন্দার মধ্যে ফিরেছে মাত্র ২ হাজার।
৮৫ বছর বয়সী কৃষক জিনিচি আবের হাত ধরে প্রায় এক যুগ পর নামির জমিতে শুরু হয়েছে কৃষিকাজ। সেখানে উৎপাদিত চাল দিয়ে লোকার্বন প্লাস্টিক তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে বায়োমাস রেসিন।
ফুকুশিমার কৃষক জিনিচি আবে বলেন, নিজের শহরটাকে আমি পুনর্গঠন করতে চেয়েছি। এ কারণেই আমি সবার সাথে কথা বলে সবাইকে নিয়ে বায়োমাসের সাথে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। জানি না আমার শহর আবার কবে আগের রূপে ফিরবে। তবে, নামি একদিন আগের চেয়েও আরও সুন্দর শহরে পরিণত হবে।
এলাকাটিতে একটি ফ্যাক্টরিও স্থাপন করেছে প্রতিষ্ঠানটি। চালের সাথে অন্যান্য উপাদানের মিশ্রণে মূলত তারা প্লাস্টিকের দানা তৈরি করে। আর তা থেকে তৈরি হয় চামচ, শপিং ব্যাগসহ বিভিন্ন পণ্য।
বায়োমাস রেসিনের প্রেসিডেন্ট তাকিমিতসু ইমাজু বলেন, এই এলাকায় তখনই মানুষ ফিরে আসবে, যখন পর্যাপ্ত কাজ থাকবে। চাকরি না থাকলে মানুষ এখানে বসবাসে আগ্রহ পাবে না। আমার মনে হয়েছে এখানে একটি কারখানা তৈরি করলে তা কিছুটা হলেও অঞ্চলটির সমস্যা সমাধানে ভূমিকা রাখতে পারবে।
উল্লেখ্য, দুর্যোগের পর জনশূন্য হয়ে পড়া এসব অঞ্চলে আবারও জনবসতি ফিরিয়ে আনতে নেয়া হচ্ছে নানা উদ্যোগ।
/এমএন