অরক্ষিত রেল ক্রসিংয়ে দুর্ঘটনা কমাতে পারে অটোমেটিক সিগন্যাল ব্যবস্থা। তেমনই এক প্রযুক্তি তৈরি করেছেন টাঙ্গাইলের হামিদুর রহমান। ‘সেলফ কন্টাক্টর রেলওয়ে অটো সিগন্যাল’ নামের উদ্ভাবনটি রেলমন্ত্রীর অনুমতি নিয়ে কয়েক মাস আগে স্থাপনও করা হয়েছে কালিহাতী উপজেলার একটি লেভেল ক্রসিংয়ে। স্থানীয়রা বলছেন, সময়মতো এবং সফলভাবেই ট্রেন আসার খবর আগেভাগে জানিয়ে দিচ্ছে হামিদুরের উদ্ভাবিত যন্ত্রটি।
মূলত, ট্রেন কাছাকাছি আসার সাথে সাথেই সিগনাল থেকে ভয়েজ শোনা যাচ্ছে, ‘ট্রেন আসছে, থামুন’। সেই সাথে সিগনাল বোর্ডেও সেই লেখা ভেসে আসছে। এই প্রযুক্তিটির উদ্ভাবক হামিদুর পেশায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক। প্রযুক্তিবিদ্যায় প্রাতিষ্ঠানিক লেখাপড়া বলতে করেছেন দুটি স্বল্প মেয়াদি কোর্স। সেই জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে শুরু করেন রেলক্রসিংয়ে আধুনিক সিগন্যাল ব্যবস্থা তৈরির কাজ।
হামিদুর বলেন, ট্রেন আসার এক থেকে দেড় কিলোমিটার আগে থেকেই মানুষ শুনতে পাবে ‘ট্রেন আসছে, থামুন’। এমনকি ডিজিটাল বোর্ডেও সেই লেখা ভেসে আসবে। এতে ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যু বা অন্যান্য পরিবহনের সাথে ট্রেনের ধাক্কা লাগার ঘটনা আর ঘটবে না।
টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এই উদ্ভাবনকে আরও সমৃদ্ধ করতে চায়। পাশে থাকতে চায় হামিদুরের। তা জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি বিভাগের প্রফেসর ড. মুহাম্মদ শাহীন উদ্দিন বলেন, এই প্রযুক্তিকে আরও সমৃদ্ধ করার সুযোগ আছে, এ নিয়ে আরও গবেষণার প্রয়োজন আছে। হামিদুর চাইলে আমরা তাকে টেকনিকাল সহযোগিতা দিতে পারবো।
স্থানীয়রা বলছেন, এই রেলপথ দিয়েই উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের সাথে ঢাকার যোগাযোগ। ব্যস্ততম রুটে রয়েছে অসংখ্য অরক্ষিত লেভেল ক্রসিং। তবে সিগন্যাল বার বা কোনো গেটম্যান নেই। ফলে আগে প্রায়ই ঘটতো দুর্ঘটনা। অটো সিগন্যালটি চালুর পর থেকে যা কমেছে অনেকটাই।
এরইমধ্যে রেলওয়ে অটো সিগন্যাল উদ্ভাবনটি জেলা ও জাতীয় পর্যায়ে স্বীকৃতি পেয়েছে। বর্তমানে পেটেন্ট সনদপত্রও প্রক্রিয়াধীন।
এসজেড/