Site icon Amra Moulvibazari

প্রফেসর বায়েজীদ বোস্তামীর মহানুভবতায় পরীক্ষার হলে শারমিন

প্রফেসর বায়েজীদ বোস্তামীর মহানুভবতায় পরীক্ষার হলে শারমিন


এইচএসসি পরীক্ষা শুরুর আগের দিনও প্রবেশপত্র হাতে ছিল না রাজশাহী সরকারি সিটি কলেজের ছাত্রী মোসা. শারমিন খাতুনের। পরীক্ষা দিতে পারবেন কি না তা নিয়ে ছিল সংশয়। অবশেষে কলেজের অর্থনীতি বিভাগের প্রফেসর মোহা. বায়েজীদ বোস্তামীর মহানুভবতায় পরীক্ষায় বসতে পেরেছেন তিনি।

নিজ কলেজের ছাত্রীর প্রবেশপত্র হাতে না পাওয়ার কথা জানতে পেরে পরীক্ষা শুরুর আগের রাতে তাৎক্ষণিকভাবে রাজশাহী শিক্ষারোর্ডে ছুটে যান প্রফেসর বায়েজীদ বোস্তামী। সেখানে তিনি রাত ১০টা পর্যন্ত বসে অপেক্ষা করে প্রবেশপত্র প্রস্তুত করে ওই পরীক্ষার্থীর বাড়ি গিয়ে তার হাতে পৌঁছে দেন।

জানা গেছে, পরীক্ষা শুরুর আগের দিন পর্যন্ত প্রবেশপত্র পাননি কলেজছাত্রী শারমিন খাতুন। ফরম পূরণের সময় কিছু সমস্যা হওয়ায় তার কলেজে প্রবেশপত্র আসেনি। এ নিয়ে কলেজে যোগাযোগ করেন তিনি।

কলেজছাত্রী শারমিন খাতুন বলেন, কলেজে যেদিন প্রবেশপত্র দেয় সেদিন আমি যেতে পারিনি। পরে আমি পরীক্ষা শুরুর আগের দিন দুপুরের দিকে শিক্ষকদের কাছে প্রবেশপত্র নিতে যাই। তারা সমস্ত প্রবেশপত্র খুঁজে দেখেন আমার প্রবেশপত্র আসেনি। তখন বুঝতে পারি ফরম পূরণের সময় আমার কিছু ত্রুটি ছিল। আমি সঠিকভাবে ফর্ম পূরণের পুরো প্রক্রিয়াটি শেষ করতে পারেনি, যার ফলে এই সমস্যাটি হয়েছে।

তিনি বলেন, বিষয়টি শোনার পর থেকে আমি আতঙ্কিত হয়ে যাই। তখন কী করবো ভেবে পাচ্ছিলাম না কারণ রাত পোহালেই আমার পরীক্ষা। তখন সবকিছু শুনে বায়েজীদ বোস্তামী স্যার আমাকে সাহস দেন। আমার বিষয়টি নিয়ে বোর্ডে যোগাযোগ করেন। তিনি সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধানের মাধ্যমে অনেক রাতে শিক্ষাবোর্ডে নিজে উপস্থিত থেকে প্রবেশপত্র প্রস্তুত হলে নিজেই নিয়ে এসে আমার বাড়িতে আমার হাতে পৌঁছে দেন।

আরও পড়ুন

শারমিন বলেন, পরীক্ষার পর বিকেলে স্যার আমার খোঁজ নিয়েছেন। আমার পরীক্ষা দিতে কোনো সমস্যা হয়েছে কি না আমি পরীক্ষা দিতে পেরেছি কি না। স্যারের নিষ্ঠা, দায়বদ্ধতা ও শিক্ষার্থীদের প্রতি ভালোবাসা দেখে আমি মুগ্ধ। আমি স্যারের কাছে চিরকৃতজ্ঞ।

কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আমিনা আবেদীন বলেন, প্রফেসর বায়েজিদ বোস্তামীকে আমি যতদিন ধরে চিনি উনি খুবই সৎ, কর্মঠ ও নিষ্ঠাবান। তার গুণাবলি বলে শেষ করা যাবে না। উনি খুবই শিক্ষার্থীবান্ধব। শিক্ষার্থীদের প্রতি উনার মহব্বত দেখে আমি আনন্দিত ও গর্ববোধ করি।

তিনি বলেন, আমি দেখেছি ছাত্রদের যে কোনো বিপদে আর্থিক বা মানসিক যে কোনো সমস্যায় তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। তার মতো নিষ্ঠাবান কর্মঠ এবং দক্ষ কর্মকর্তা বর্তমান সময়ে দুর্লভ। প্রফেসর বায়েজীদ বোস্তামীর মতো দক্ষ ও সৎ মানুষদের রাষ্ট্রের প্রয়োজনে সঠিক মূল্যায়ন হবে আমি আশা রাখি।

প্রফেসর বায়েজীদ বোস্তামী এ বিষয়ে বলেন, দেখুন এই বিষয়গুলো আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্যের মধ্যে পড়ে। আমরা সবসময় শিক্ষার্থীদের নিজের সন্তানের মতোই দেখি এবং তাদের যে কোনো বিপদ বা সমস্যা হলে আমরা সেটা সমাধান করার চেষ্টা করি যথাসম্ভব। ওই ছাত্রীর বিষয়টি বেশ জটিল ছিল। হয়তো আল্লাহ চেয়েছে তাই আমরা পেরেছি, আমাদের চেষ্টার ত্রুটি ছিল না। তবে মেয়েটি একদম শেষ সময়ে আসাতে আমরাও শঙ্কিত ছিলাম শেষ পর্যন্ত পাররো কি না? তবে আল্লাহর রহমতে পেরেছি। আমার সকল শিক্ষার্থীর জন্য দোয়া ও ভালোবাসা রইলো।

এএএইচ/বিএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।
Exit mobile version