Site icon Amra Moulvibazari

যাদের ওপর কোরবানি ওয়াজিব

যাদের ওপর কোরবানি ওয়াজিব


কোরবানি ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। সামর্থ্যবান প্রত্যেক মুসলমানের ওপর কোরবানি করা ওয়াজিব। কোরআনে আল্লাহ তাআলা নামাজের সাথে যুক্ত করে কোরবানি করার নির্দেশ দিয়েছেন। আল্লাহ বলেন,

اِنَّاۤ اَعۡطَیۡنٰکَ الۡکَوۡثَرَ فَصَلِّ لِرَبِّکَ وَ انۡحَرۡ اِنَّ شَانِئَکَ هُوَ الۡاَبۡتَرُ
নিশ্চয় আমি তোমাকে কাওসার দান করেছি। সুতরাং তোমার রবের উদ্দেশে সালাত আদায় করো ও কোরবানি করো। নিশ্চয় তোমার প্রতি শত্রুতা পোষণকারীই নির্বংশ। (সুরা কাওসার: ১-৩)

আরেক আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَ لِكُلِّ اُمَّۃٍ جَعَلۡنَا مَنۡسَكًا لِّیَذۡكُرُوا اسۡمَ اللّٰهِ عَلٰی مَا رَزَقَهُمۡ مِّنۡۢ بَهِیۡمَۃِ الۡاَنۡعَامِ فَاِلٰـهُكُمۡ اِلٰهٌ وَّاحِدٌ فَلَهٗۤ اَسۡلِمُوۡا وَ بَشِّرِ الۡمُخۡبِتِیۡنَ

প্রত্যেক জাতির জন্য আমি কোরবানির নিয়ম করে দিয়েছি; যাতে তারা আল্লাহর নাম স্মরণ করতে পারে, যে সমস্ত জন্তু তিনি রিজিক হিসেবে দিয়েছেন সেগুলোর ওপর। তোমাদের ইলাহ তো এক ইলাহ; অতএব তাঁরই কাছে আত্মসমর্পণ কর; আর অনুগতদেরকে সুসংবাদ দাও। (সুরা হজ: ৩৪)

আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন,

مَن كان له سَعَة ولمْ يُضَحِّ فلا يَقْرَبَنّ مُصَلّانا
যার কোরবানি করার সামর্থ্য রয়েছে কিন্তু কোরবানি করে না সে যেন আমাদের ইদগাহে না আসে। (সুনানে ইবনে মাজা: ৩১২৩)

জুমার নামাজ ওয়াজিব মুসলমান প্রাপ্তবয়স্ক, জ্ঞানসম্পন্ন (যিনি মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন নন) মুকিম (যিনি মুসাফির নন) প্রত্যেক এমন পুরুষ ও নারীর ওপর যারা ১০ জিলহজ ফজর থেকে ১২ জিলহজ সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনের অতিরিক্ত নেসাব পরিমাণ সম্পদ অর্থাৎ সাড়ে সাত তোলা স্বর্ণ অথবা সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপার মালিক হয়।

নগদ অর্থ, সোনা-রুপা, অলংকার, বসবাস ও খোরাকির প্রয়োজনে লাগে না এমন জমি, প্রয়োজনের অতিরিক্ত বাড়ি, ব্যবসায়িক পণ্য ও অপ্রয়োজনীয় সব আসবাব কোরবানির নেসাবের ক্ষেত্রে হিসাবযোগ্য। প্রয়োজনের অতিরিক্ত ভিন্ন ভিন্ন সম্পদের একত্র মূল্যের পরিমাণ যদি সাড়ে সাত তোলা স্বর্ণ বা সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপার মূল্যের সমান হয়, তাহলেও কোরবানি ওয়াজিব হবে।

কোরবানির ক্ষেত্রে নেসাব পরিমাণ সম্পদের ওপর এক বছর অতিবাহিত হওয়া শর্ত নয়; বরং জিলহজের ১০ থেকে ১২ তারিখের মধ্যে যে কোনো সময় নেসাবের মালিক হলেও কোরবানি ওয়াজিব হবে।

অপ্রাপ্তবয়স্ক, পাগল, মুসাফির নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হলেও তাদের ওপর কোরবানি ওয়াজিব নয়।

এক পরিবারে একাধিক ব্যক্তি সামর্থ্যবান হলে প্রত্যেকের পক্ষ থেকে পৃথক কোরবানি করা ওয়াজিব। স্বামী ও স্ত্রী দুজনই সামর্থ্যবান হলে স্বামী ও স্ত্রীর পক্ষ থেকে পৃথক কোরবানি করতে হবে। স্বামীর কোরবানি স্ত্রীর জন্য যথেষ্ট হবে না। একইভাবে বাবার কোরবানি প্রাপ্তবয়স্ক ছেলে বা মেয়ের জন্য যথেষ্ট হবে না যদি তারা সামর্থ্যবান হয় অর্থাৎ উল্লিখিত পরিমাণ সম্পদের মালিক হয়।

ছাগল-ভেড়া ইত্যাদি ছোট পশু কোরবানির ক্ষেত্রে প্রত্যেকের জন্য আলাদা পশু কোরবানি করতে হবে। উট-গরুর মতো বড় পশু কোরবানি করা হলে এক পশুতে সাত জন পর্যন্ত শরিক হতে পারবে।

ওএফএফ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।
Exit mobile version