Site icon Amra Moulvibazari

‌‘জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু করতে হলে আগে স্থানীয় নির্বাচন প্রয়োজন’

‌‘জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু করতে হলে আগে স্থানীয় নির্বাচন প্রয়োজন’


জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু করতে হলে আগে স্থানীয় নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা দরকার। যদি স্থানীয় নির্বাচন ঠিকভাবে না হয়, তাহলে জাতীয় নির্বাচনও সুষ্ঠু করা সম্ভব হবে না। তাই জাতীয় নির্বাচনের স্বার্থে আগে সুষ্ঠু স্থানীয় নির্বাচন করা উচিত।

শনিবার (৮ মার্চ) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে সেন্ট্রাল ফর পলিসি এনালাইসিস অ্যান্ড অ্যাডভোকেসি (সিপিএএ) আয়োজিত বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে জাতীয় ও স্থানীয় সরকার নির্বাচন বিষয়ক সংলাপে বক্তারা এসব কথা বলেন। সংলাপে সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করেন সিপিএএর মডারেটর ও অবসরপ্রাপ্ত সচিব অধ্যাপক ড. মো. শরিফুল আলম।

সংলাপে অবসরপ্রাপ্ত সচিব মো. আবদুল কাইয়ূম বলেন, জাতীয় নির্বাচনের স্বার্থে স্থানীয় নির্বাচন সুষ্ঠু করা দরকার। স্থানীয় নির্বাচন সুষ্ঠু করতে না পারলে জাতীয় নির্বাচনও সুষ্ঠু করা যাবে না। জাতীয় নির্বাচনকে সুষ্ঠু করার স্বার্থে স্থানীয় নির্বাচন আগে হওয়া উচিত।

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে আমাদের প্রশাসনিক যে সমস্যা দেখা দিয়েছে, অতীতে কিন্তু এমন সমস্যা দেখা দেয়নি। পুলিশকে এখন আর কার্যকরী প্রতিষ্ঠান আর বলা যায় না। সাধারণ প্রশাসন যারা নির্বাচনের মূল ভূমিকা পালন করবে, তারা যে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করবে এটা আশা করা যায় না।

নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) এর চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, এই সরকারেরও সময় শেষ হয়ে আসছে। ডিসেম্বরে তারা নাকি নির্বাচন দেবে। রাজনীতিবিদদের মধ্যে কোনো পরিবর্তন আসেনি৷ কোনো সংস্কার আসেনি। কিন্তু, তারাই তো ইলেকশন করবে। নতুন পার্টি যেটা গঠিত হয়েছে, তাদের মধ্যেও কোনো পরিবর্তন দেখিনি। আমরা শুনছি, নতুন পার্টিও চাঁদাবাজি করছে। রোজগারের ব্যবস্থা যে সিস্টেমের ছিল, সেভাবেই চলছে। এগুলো থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। আমি মনে করি, স্থানীয় নির্বাচন আগে হওয়া উচিত। আগে হলে অনেক উপকার হবে।

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. আবদুল লতিফ মাসুম বলেন, বর্তমান সরকারের কাছে একটা দ্বৈততা এসে হাজির হয়েছে। বিশেষ করে রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে ছাত্রদের যে দল রয়েছে সেটি মানুষকে প্রতিদ্বন্দ্বিতার দিকে নিক্ষিপ্ত করেছে।

তিনি বলেন, বেশ কিছু জরিপে দেখা গেছে মানুষ স্থানীয় নির্বাচন আগে চায়। কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এ নিয়ে মত পার্থক্য আছে। আমাদের জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে এবং মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী স্থানীয় নির্বাচন আগে হতে হয়। তবে, সংস্কার করে সবকিছু করতে হবে।

অতিরিক্ত সচিব (অবসরপ্রাপ্ত) ড. খন্দকার রাশেদুল হক বলেন, যাদের মাধ্যমে সমাজ এগিয়ে যাবে, ন্যায় প্রতিষ্ঠা হবে, সে ধরনের একটা প্রতিনিধিত্ব প্রয়োজন। যে জিনিসটি এই জাতির জন্য উপকারী এবং জাতিকে একটা সঠিক পথে পরিচালিত করতে পারবে সেসমস্ত লোককে নির্বাচিত করা দরকার বলে আমি মনে করছি।

দৈনিক প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হাসান বলেন, জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থানের পর ভেবেছিলাম অনেক কিছুই পরিবর্তন হবে। কিন্তু তা হয়নি। ভদ্র লোকের রাষ্ট্র আমরা চাই না। আগে জাতীয় না স্থানীয় নির্বাচন তার থেকে গুরুত্বপূর্ণ আমরা রাষ্ট্রকে কোথায় নিতে চায়। আমরা কী ভদ্র লোকের রাষ্ট্র চাই নাকি সবার রাষ্ট্র চাই এই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। রাজনৈতিক দল ও অর্থনৈতিক সংস্কারের বিষয়ে কোনো কমিশন হয়নি। অথচ এটা সব থেকে জরুরি ছিল। অথচ তা হয়নি।

ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহিদুল ইসলাম বলেন, এখনো পেশি শক্তির কালচার বাংলাদেশে আছে। নির্বাচন করার জন্য একটি ভালো প্রশাসন প্রয়োজন। নির্বাচন পদ্ধতি ঠিক করতে হবে। ভোটারদের ভোট দেওয়ার জন্য একটা সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। স্থানীয় নির্বাচনের পরে জাতীয় নির্বাচন করলে ভালো হবে।

সংলাপে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. শাফিউল ইসলাম একটি প্রবন্ধ পাঠ করেন।

এসআরএস/জেএইচ

 

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।
Exit mobile version