Site icon Amra Moulvibazari

কীভাবে ঘুরে দাঁড়াবে দাবানলে বিধ্বস্ত লস অ্যাঞ্জেলেস?

কীভাবে ঘুরে দাঁড়াবে দাবানলে বিধ্বস্ত লস অ্যাঞ্জেলেস?


লস অ্যাঞ্জেলেসে চলমান বিধ্বংসী দাবানলে এরই মধ্যে কমপক্ষে ২৪ জন প্রাণ হারিয়েছেন, ধ্বংস হয়েছে হাজার হাজার ঘরবাড়ি। প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে গেছেন শহরের লাখো বাসিন্দা। এবারের দাবানলকে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে ব্যয়বহুল বলে বিবেচনা করা হচ্ছে।

পাসাডেনার বাসিন্দা লরি বিলোটা জানান, আমার স্বামী বব পাহাড়ের ওপর আগুনের আলো দেখতে পেয়ে চিৎকার করেন। মুহূর্তেই পুরো পাহাড় আগুনে ঢেকে যায়। প্রাণ বাঁচাতে তারা তাদের দুটি বিড়ালসহ নিরাপদ স্থানে সরে যান। অবশ্য সৌভাগ্যক্রমে তাদের বাড়ি আগুন থেকে রক্ষা পায়।

দাবানলের কারণ ও ক্ষয়ক্ষতি

লস অ্যাঞ্জেলেসের শুষ্ক ও পার্বত্য ভূমি দাবানলের জন্য অধিক ঝুঁকিপূর্ণ। তবে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব এবং গত দুই বছরের ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে গাছপালার বাড়তি বৃদ্ধি শুষ্ক মৌসুমে আগুনের ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে তুলেছে। অগ্নিপ্রতিরোধী স্থানীয় উদ্ভিদের পরিবর্তে আগ্রাসী আগাছার বিস্তার এই সমস্যাকে আরও জটিল করেছে।

আরও পড়ুন>> 

দাবানলে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর মধ্যে আলটাডেনা অন্যতম। এলাকাটি এখন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। প্রায় ১২ হাজার ভবন পুড়ে ছাই হয়ে গেছে, যার মধ্যে রয়েছে প্রশান্ত মহাসাগরের পাশে বিলাসবহুল প্যাসিফিক পালিসেড এলাকার বহু বাড়ি।

দুর্যোগের প্রভাব

এই দুর্যোগের প্রভাব দীর্ঘমেয়াদে লস অ্যাঞ্জেলেসের রাজনীতি ও অর্থনীতিতে বড় পরিবর্তন আনতে পারে। শহরের মেয়র ক্যারেন বাস এই দাবানলের সময় বিদেশ সফরে থাকায় সমালোচনার মুখে পড়েছেন। এটি তার পুনর্নির্বাচনে প্রভাব ফেলতে পারে।

ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গেভিন নিউজম ‘মার্শাল পরিকল্পনা’ নামে একটি উদ্যোগ নিয়েছেন। এই পরিকল্পনার আওতায় ধ্বংসস্তূপে নতুন ঘরবাড়ি নির্মাণের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই পুনর্গঠনের সুযোগটি শহরের ঘনবসতিপূর্ণ ও মিশ্র ব্যবহারের আবাসন ব্যবস্থা তৈরির জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে, পুরোনো কাঠের বাড়িগুলোর আধিক্য এবং বিমা সংস্থাগুলোর অসহযোগিতা পুনর্গঠনে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।

বাসিন্দাদের উদ্বেগ

সাম্প্রতিক জরিপ অনুযায়ী, প্রায় এক-চতুর্থাংশ বাসিন্দা জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি এড়াতে শহর ছাড়ার কথা ভাবছেন।

অন্যদিকে, বাড়তি আবাসনের চাহিদা নতুন বাড়ি নির্মাণের খরচ বাড়িয়ে তুলতে পারে, যা অনেকের জন্য বাড়ি কেনা আরও কঠিন করে তুলবে।

লরি বিলোটা তার বাড়ির পেছনে দাঁড়িয়ে পাশের পাহাড়ের দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, ১৯৯৩ সালের বড় আগুনের পর এখানে আরও বড় বড় বাড়ি তৈরি হয়েছিল। এবারও সম্ভবত তাই হবে।

লস অ্যাঞ্জেলেসের এই আগুন শুধু ধ্বংসই নয়, পুনর্গঠনের এক নতুন সুযোগও সৃষ্টি করেছে। তবে এর যথাযথ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমেই এই সংকটকে সম্ভাবনায় পরিণত করা সম্ভব।

সূত্র: দ্য ইকোনমিস্ট
কেএএ/

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।
Exit mobile version