Site icon Amra Moulvibazari

৭ উইকেটের হারে এক ম্যাচ থাকতেই সিরিজ খোয়ালো বাংলাদেশ

৭ উইকেটের হারে এক ম্যাচ থাকতেই সিরিজ খোয়ালো বাংলাদেশ


প্রথম ওয়ানডেতে তবু তিনশ ছুঁইছুঁই স্কোর গড়ে একটা সময় জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়েছিল বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচে এসে টাইগাররা পাত্তাই পেলো না। সেন্ট কিটসে ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হেরেছে মেহেদী হাসান মিরাজের দল।

৭৯ বল হাতে রেখে পাওয়া জয়ে তিন ম্যাচ সিরিজ এক ওয়ানডে বাকি থাকতেই নিজেদের করে নিয়েছে স্বাগতিকরা।

২২৮ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ১৯ ওভারে বিনা উইকেটেই ১০০ রান তুলে ফেলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তখনই বলতে গেলে ম্যাচের ভাগ্য ঠিক হয়ে যায়। অবশেষে ব্রেন্ডন কিং আর এভিন লুইসের ১০৯ রানের ওপেনিং জুটি ভাঙেন রিশাদ হোসেন। ৬২ বলে ৪৯ করা লুইসকে নিজেই ক্যাচ বানান এই লেগস্পিনার।

কিন্তু লুইস আউট হওয়ার পর যেন বিপদ আরও বাড়ে বাংলাদেশের। আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেন ব্রেন্ডন কিং। কিয়েসি কার্টিকে নিয়ে ৪৮ বলে ৬৬ রান যোগ করেন তিনি। মারকুটে ব্যাটিংয়ে এগিয়ে যাচ্ছিলেন সেঞ্চুরির দিকে। অবশেষে কিংকে বোল্ড করে থামান নাহিদ রানা। ৭৬ বলে ৮২ রানের ইনিংসে ৮টি চার আর ৩টি ছক্কা হাঁকান কিং।

জয়ের কাছাকাছি এসে পার্টটাইমার আফিফ হোসেনের শিকার হন কার্টি। ৪৭ বলে তিনি করেন ৪৫। তবে এরপর শাই হোপ আর শেরফান রাদারফোর্ড মিলে বজয় তুলে নিতে বেশি দেরি করেননি। রাদারফোর্ড ১৫ বলে ২৪ আর হোপ ২১ বলে ১৭ রানে অপরাজিত থাকেন।

এর আগে ১১৫ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে অল্প রানেই গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় ছিল বাংলাদেশ। সেখান থেকে লোয়ার অর্ডারের তানজিম হাসান সাকিবকে নিয়ে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের রেকর্ড জুটিতে ভর করে ২২৭ রানের লড়াকু পুঁজি দাঁড় করায় বাংলাদেশ।

টস হেরে ব্যাট করার আমন্ত্রণ পেলেও প্রথম ম্যাচের মত বড় স্কোর গড়ার আশা ছিল বাংলাদেশের ব্যাটারদের; কিন্তু সেই আশার গুড়ে বালি। একের পর এক উইকেট হারিয়ে চরম ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে টাইগাররা। ৬৪ রানেই হারায় ৪ উইকেট।

উইকেট পতনের ধারাবাহিকতা ধরে রেখে দ্রুত ফিরে যান আফিফ হোসেন, জাকির আলী অনিক এবং রিশাদ হোসেনও। ১১৫ রানে ৭ উইকেট পতনে ধুঁকতে থাকে টাইগাররা।

সেন্ট কিটসের ওয়ার্নার পার্কে টস জিতেছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক শাই হোপ। টস জিতে ব্যাট করার জন্য তিনি আমন্ত্রণ জানান বাংলাদেশ অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজকে।

আমন্ত্রিত হয়ে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই সৌম্য সরকার উইকেট হারিয়ে বসেন। চতুর্থ ওভারে জাইডেন সিলসের প্রথম বলে গুদাকেশ মতির হাতে সহজ ক্যাচ দিয়ে আউট হন সৌম্য। মাত্র ২ রান করেন তিনি।

এরপর ১৯ বল খেলে মাত্র ৪ রান করে আউট হন লিটন দাস। বরাবরের মতো তার আউটটা ছিল দৃষ্টিকটু। যেন বিরক্ত হয়েই ক্যাচ তুলে দিয়েছেন লিটন। এরপর মাঠে নেমে দ্রুত উইকেট হারান মেহেদী হাসান মিরাজ। ৫ বল খেলে মাত্র ১ রান করে আউট হন অধিনায়ক। তিনিও বোকার মত ব্যাটের ভেতরের কোনায় লাগিয়ে বোল্ড হন।

আফিফ হোসেনকে নিয়ে জুটি বাঁধেন তানজিদ হাসান তামিম। তরুণ এই ওপেনারই কিছুটা প্রতিরোধ গড়েছিলেন; তবে অতি আত্মবিশ্বাস তৈরি হয়েছিলো তার মধ্যে। যে কারণে কয়েকটি বাউন্ডারি মারার পর ৪৬ রান করে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। ৩৩ বলে সাজানো এই ইনিংসে ৪টি বাউন্ডারি এবং ২টি ছক্কার মার মারেন তিনি।

এক বছর পর এই সিরিজ দিয়ে ওয়ানডে দলে ফেরা আফিফ হোসেন ২৯ বলে করেছিলেন ২৪ রান; কিন্তু ১৯তম ওভারের পঞ্চম বলে গুদাকেশ মোতির বলে শেরফানে রাদারফোর্ডের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন আফিফ হোসেন। দলের রান তখন ১০০।

জাকের আলী অনিক প্রথম ম্যাচে দারুণ ব্যাটিং করেন। কিন্তু এই ম্যাচে এসে গুদাকেশ মোতির ঘূর্ণি বোলিংয়ের ফাঁদে পড়ে এলবিডব্লিউ হন। করেন মাত্র ৩ রান।

এরপর বিদায় নেন রিশাদ হোসেন। ৮ বল মোকাবেলায় কোনো রানই করতে পারেননি তিনি। মিন্ডলের বলে রস্টন চেজের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান রিশাদ।

১১৬ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে দল যখন ধুঁকছিল, ঠিক তখন দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ। লোয়ার অর্ডারের তানজিম সাকিবও তাকে যোগ্য সঙ্গ দেন। অষ্টম উইকেটে ১০৬ বলে ৯২ রানের জুটিতে দলকে লড়াইয়ে ফেরান তারা। এটি এই উইকেটে বাংলাদেশের সেরা জুটি।

রেকর্ড এই জুটি ভাঙে হাফসেঞ্চুরির দোরগোড়ায় এসে তানজিম সাকিব আউট হন রস্টন চেজের ফিরতি ক্যাচে। ৬২ বলে ৪ বাউন্ডারি আর ২ ছক্কায় ৪৫ রান করেন সাকিব।

সঙ্গী হারিয়ে ধৈর্য হারিয়ে ফেলেন মাহমুদউল্লাহ। পরের ওভারেই বড় শট খেলতে গিয়ে ক্যাচ হন। ৯২ বলে মাহমুদউল্লাহর ৬২ রানের ইনিংসে ২ চারের সঙ্গে ছিল ৪টি ছক্কা। শেষদিকে শরিফুল এক ওভারে দুই চার আর এক ছক্কায় ৮ বলে ১৫ করে আউট হন। ৪৫.৫ ওভারে ২২৭ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেসার জেডেন সিলস ২২ রান খরচায় নেন ৪টি উইকেট।

এমএমআর/জেডএইচ/

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।
Exit mobile version