দীর্ঘদিন প্রবাসে থাকা সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন তার একটি ভিডিওতে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে বর্তমান আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুলের অবস্থান নিয়ে কিছু তথ্য দিয়েছেন। সে তথ্য সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন আসিফ নজরুল।
ভিডিওতে দাবি করা ইলিয়াসের বক্তব্যের বিষয়ে তিনি বলেন, ভিডিওতে দাবি করা হয়েছে, ৩-৪ তারিখ (আগস্ট) রাতে আমি নাকি আর্মি অফিসারদের নিয়ে এবং ভারতের দালালদের নিয়ে মিটিং করেছি। আমি অবাক হয়ে যাই, মানুষের কল্পনারও একটা সীমা থাকা উচিত। এমন মিথ্যা কথা কেন বলবো, যা কল্পনার সীমারও বাইরে।
শনিবার (৩০ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) আয়োজনে ‘স্মৃতির মিনার: গণঅভ্যুত্থান ২০২৪’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে তিনি এসব কথা বলেন।
৩ ও ৪ আগস্ট কোথায় ছিলেন, তা বিস্তারিত বর্ণনা করেন আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, ৩ আগস্ট রাতে আমি অধ্যাপক মাহবুব মোর্শেদের সঙ্গে শহীদ মিনারে সমাবেশ করার পর রাত ৯টা পর্যন্ত ছিলাম। তারপর বাসায় গিয়েছি। তারপর ঢাকা ইউনিভার্সিটির ইইই বিভাগের অধ্যাপক মোস্তফা মামুন, তিনি ফুলার রোডে ১৯ নম্বর বাসায় থাকেন, তার বাসায় রাতে থেকেছি। শুনেছি আমাকে মেরে ফেলা হবে অথবা গ্রেফতার করবে।
‘৪ তারিখ সন্ধ্যার পর অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টদের একটি প্রোগ্রামে অংশ নিয়েছি, যেটার ভিডিও আপনারা দেখেছেন। আমাকে সবাই বলেছিলেন পালিয়ে যেতে। আমি আবার মোস্তফা মামুনের বাসায় চলে যাই। এখন আপনারা বলেন, সবকিছুর তো একটা সীমা আছে?’
ইলিয়াসের বক্তব্যে ধোঁয়াশা কাটাতে তিনি কিছু বলতে চাননি উল্লেখ করে আসিফ নজরুল বলেন, এখন যদি কেউ বলে আসিফ নজরুলের চোখ পাঁচটা। মানুষ কি প্রতিবাদ করে বলবে, ভাই আপনার চোখ পাঁচটা হলো কেন? আমাকে অনেকেই বলছেন, ভাই এটা একটু ক্লিয়ার করেন। কী ক্লিয়ার করবো? সবকিছুর তো একটা সীমা আছে!’
ইলিয়াস হোসেনকে উদ্দেশ করে আইন উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘আপনি তো সত্যের কাছাকাছি থাকলেও মানুষ প্রতিবাদ করবে। কিন্তু এটা এতটাই আজগুবি, যে তার তো একটা সীমা থাকা দরকার। এটা ব্যক্তিগতভাবে বললাম। শুধু আমার ক্ষেত্রে।’
ইলিয়াস হোসেন কার উদ্দেশ্য সার্ভ করছেন প্রশ্ন রেখে আসিফ নজরুল বলেন, ‘আজ আমাদের রাষ্ট্র গঠনের দায়িত্ব। এত মানুষের স্যাক্রিফাইজের বিনিময়ে আমাদের প্রধান কাজ কী? আমি সব সময় বলি, আমাদের প্রধান কাজ হচ্ছে চারটা। গণহত্যার বিচার, আহত-নিহতের পরিবারের পুনর্বাসন, সংস্কার ও নির্বাচন। ১৭ বছর বাংলাদেশের মানুষ ভোট দেয় না। বাংলাদেশের তরুণরা ভোট দেয় না।’
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, অ্যাক্টিভিস্ট রাখাল রাহা, গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ রাশেদ খান, বাসসের পরিচালনা বোর্ডের সদস্য নূরে আলম মাসুদ ও কবি ফেরদৌস আরা রুমী। সভাপতিত্ব করেন বাসসের প্রধান সম্পাদক ও এমডি মাহবুব মোর্শেদ।
শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) রাতে যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী বাংলাদেশি ইলিয়াস হোসেন তার ইউটিউব চ্যানেলে ‘পুলিশ, আনসারের সমম্বয়ে গঠিত বাহিনী নিয়ে সশস্ত্র গেরিলা আক্রমণের পরিকল্পনা’ শিরোনামে একটি ভিডিও প্রচার করেন। তাতে আসিফ নজরুলের বিভিন্ন বিষয়ে সম্পৃক্ততার দাবি করেন তিনি, যা নিয়ে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
এএএইচ/এমএইচআর