Site icon Amra Moulvibazari

ভোটের আগে-পরে সংখ্যালঘুরা ভুক্তভোগী, এ আতঙ্ক বন্ধ করতে হবে

ভোটের আগে-পরে সংখ্যালঘুরা ভুক্তভোগী, এ আতঙ্ক বন্ধ করতে হবে


দেশে নির্বাচন এলেই হামলা-নির্যাতন শুরু হয়। ভোটের আগে-পরে সংখ্যালঘুরা ভুক্তভোগী হয়। এই আতঙ্ক বন্ধ করার ব্যবস্থা করতে হবে। রাজনৈতিক জায়গায় আদিবাসীদের অংশগ্রহণের সুযোগ করতে হবে। আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকার জন্য সংরক্ষিত আসন করলে তাদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হবে।

রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনের সময় ভোট চাইতে এলেও নির্বাচনের পর পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর খোঁজখবর কেউ নেয় না। নির্বাচন ঘিরে হামলা-ভাঙচুর হয়। কিন্তু দলিতরা দাবি বা প্রতিবাদ জানিয়ে রাস্তায় নামে না, কারণ তাদের ওপর নির্দিষ্ট দলের ট্যাগ লাগানো হতে পারে। আমরা এরকম বাংলাদেশ চাই না। আমরা সবার সঙ্গে বাঁচতে চাই।

বুধবার (২৭ নভেম্বর) জাতীয় সংসদ ভবনের কেবিনেট কক্ষে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী, দলিত ও প্রতিবন্ধীসহ সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে নির্বাচন সংস্কার কমিশনের মতবিনিময়ে আদিবাসী নেতা ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিরা এসব কথা বলেন।

বক্তারা বলেন, রাজনৈতিক জায়গায় আদিবাসীদের অংশগ্রহণের সুযোগ করতে হবে। সারাদেশে এক কোটির মতো দলিত হরিজন আছে। অথচ স্থানীয় সরকার ব্যবস্থায়ও দলিত প্রতিনিধি নেই।

তারা বলেন, কিছু জায়গায় ভোট দিতে ভয়ভীতি প্রদর্শন ও বলপ্রয়োগ করা হয়। এর আগে ভোট না দেওয়ার অভিযোগে ভোটের পর নারীদের ওপর নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু কোনো বিচার হয়নি। আদিবাসীদের স্বচ্ছ ভোটার তালিকা প্রণয়ন করতে হবে। নির্বাচন পর্যবেক্ষণে আদিবাসী প্রতিনিধি রাখতে হবে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল আদিবাসীদের ট্যাগ দেয়। স্থানীয় নির্বাচনে দলীয় প্রতীক বাদ দিতে হবে। এছাড়া আদিবাসীদের এনআইডি কার্ডের অসংখ্য ভুল এবং এই ভুলগুলো সংশোধনের ব্যবস্থা করতে হবে।

আদিবাসী প্রতিনিধি সন্ধ্যা মালো বলেন, আদিবাসী বললে সমতল আর পাহাড়ি একদিকে হয়ে যায়। আমি মনে করি, যদি ‘পিছিয়ে থাকা’ থেকে শুরু করা যায় তাহলে ভালো হবে। সবাইকে সামনে আনা যাবে।

জাতীয় আদিবাসী পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক বিমল চন্দ্র রাজোয়াড় বলেন, নির্বাচনের সময় অভিযোগ দিলে নির্বাচন শেষেও সমাধান হয় না। তাই অভিযোগের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তদন্ত করে প্রার্থিতা বাতিল করা উচিত। তাহলে কালো টাকা আর পেশীশক্তির প্রভাব রোধ করা যাবে।

তিনি বলেন, আমরা যে প্রার্থীকেই ভোট দিই না কেন, পছন্দের প্রার্থী যদি নির্বাচিত না হতে পারেন তাহলে তার দিক থেকেও আমাদের মার খেতেই হয়। আমরা এমনিতেই ভীত। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন থেকে বর্তমান পর্যন্ত আদিবাসীরা কী পরিমাণ নির্যাতিত হয়েছে তা সবাই জানে। আমরা পিছিয়ে আছি, কারণ রাজনীতিতে আমাদের কোনো প্রতিনিধি নেই। অনেক জায়গায় প্রচুর আদিবাসী আছে, আমারা কিছু প্রতিনিধিত্বও চাই।

অনগ্রসর সমাজ উন্নয়ন সংস্থার’র (আসুস) নির্বাহী পরিচালক রাজকুমার শাও বলেন, আদিবাসীদের ভোটার তালিকা নতুনভাবে করতে হবে। এজন্য আদিবাসীদের সেই কার্যক্রমে যুক্ত করতে হবে, তা না হলে তালিকা সঠিক হবে না। আমরা যখনই কথা বলি, আমাদের ওপর বিভিন্ন ট্যাগ লাগানো হয়। কখনো আওয়ামী লীগ, কখনো বিএনপি কখনোবা জামায়াত বলে ট্যাগ লাগানো হয়। এজন্য আমরা টিকতে পারছি না। এটি আমাদের দুর্বলতা। এছাড়া আমরা তেমন শিক্ষিতও নই, গুজিয়ে কথাও বলতে পারি না।

‘স্থানীয় নির্বাচনে দলীয় প্রতীক থাকলে একজন আদিবাসী কীভাবে নির্বাচিত হবে। নরমাল প্রতীকে নির্বাচন হতে হবে। নির্দলীয়ভাবে স্থানীয়ভাবে নির্বাচন হতে হবে। কেননা, অনেকক্ষেত্রে প্রার্থী ভালো না হলেও দলীয় প্রভাবে ভোট পেয়ে যাচ্ছে।’

রাজকুমার শাও আরও বলেন, আমাদের সমতলের আদিবাসীদের সমস্যা আলাদা। তাই এখানেও মন্ত্রণালয়ের ডিভিশন হতে পারে। ভূমি কমিশন করা যেতে পারে। ডিগ্রি পাস ছাড়া নির্বাচন করতে না পারলে আমাদের আদিবাসীরা তো পারবে না। কারণ, তারা তো পড়াশোনায় পিছিয়ে। আদিবাসীদের সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে রাখা যেতে পারে।

এমওএস/এমকেআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।
Exit mobile version