জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচনকে সামনে রেখে মতবিনিময় সভায় ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতাদের উপস্থিতিকে কেন্দ্র করে কতিপয় ছাত্রসংগঠনের নেতাদের হট্টগোল সৃষ্টির ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে শিবিরের চবি শাখা। পাশাপাশি শিবিরের পক্ষ থেকে ক্যাম্পাসে গণতান্ত্রিক পরিবেশ বজায় রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে।
বুধবার (২০ নভেম্বর) এক যৌথ বিবৃতিতে চবি ছাত্রশিবিরের সভাপতি নাহিদুল ইসলাম ও সেক্রেটারি মোহাম্মদ ইব্রাহিম এ প্রতিক্রিয়া জানান।
শিবির নেতারা বলেন, ছাত্র সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে অনুষ্ঠিতব্য মতবিনিময় সভা ফ্যাসিবাদ বিরোধী সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে হওয়ার কথা ছিল। তবে দুঃখজনকভাবে কিছু ছাত্রসংগঠনের নেতারা ইসলামী ছাত্রশিবিরের উপস্থিতি মেনে নিতে পারেননি।
মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) সন্ধ্যায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের কাউন্সিল কক্ষে মতবিনিময় সভা শুরু হয়। পরিচয়পর্ব চলাকালে ছাত্রশিবিরের পাঁচজন নেতাকর্মী নিজেদের পরিচয় দিলে ছাত্রদল কর্মী মো. শরীফ সভায় তাদের উপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, শিবির থাকলে কয়েকটি সংগঠন সভায় থাকবে না। এর পরপরই উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।
উত্তেজনার একপর্যায়ে ছাত্রদল এবং বামপন্থি কয়েকটি সংগঠনের নেতাকর্মীরা সভা থেকে বেরিয়ে যান এবং শিবিরকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ আখ্যা দিয়ে মিছিল শুরু করেন। একই সময়ে জাহাঙ্গীরনগর সংস্কার আন্দোলনসহ বেশকিছু দলের নেতাকর্মীরা ছাত্রদল ও বামদলগুলোকে ‘বাকশাল ও মুজিববাদের সহযোগী’ বলে স্লোগান দিয়ে সভাস্থল ত্যাগ করেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সোহেল আহমেদ সভাটি স্থগিত করেন।
চবি ছাত্রশিবিরের নেতারা বলেন, এটি ছিল জাকসু নির্বাচন সামনে রেখে সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় দফার মতবিনিময় সভা। ছাত্রশিবির চায় গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক সংস্কৃতি বিনির্মাণ করতে। কিন্তু আমরা লক্ষ্য করছি, ফ্যাসিবাদী কায়দায় ছাত্রশিবিরের অধিকার হরণের চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা চাই গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া প্রতিটি রাজনৈতিক সংগঠন তার মতামত প্রকাশের অধিকার পাবে। পাশাপাশি প্রতিটি ক্যাম্পাসে ছাত্র সংসদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার মধ্য দিয়ে গণতান্ত্রিক চর্চাকে সমুন্নত রাখতে ছাত্রশিবির সহযোগী হতে চায়।
তারা আরও বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান গণতন্ত্রের মূল ভিত্তি। ভিন্নমত বা আদর্শ সহ্য করতে না পারা কেবল সহিষ্ণুতার অভাবই প্রকাশ করে না, এটি শিক্ষাঙ্গনের স্বাধীন চেতনার পরিপন্থি। বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সবসময় শিক্ষার পরিবেশ সুরক্ষা, ন্যায়বিচার এবং সামাজিক উন্নয়নের পক্ষে কাজ করে আসছে।
আহমেদ জুনাইদ/এসআর/জিকেএস