Site icon Amra Moulvibazari

সৌদিতে বাথরুমের গ্যাসের বিষক্রিয়ায় বাংলাদেশি নিহত

সৌদিতে বাথরুমের গ্যাসের বিষক্রিয়ায় বাংলাদেশি নিহত


বাথরুমের বায়ু গ্যাসের বিষক্রিয়ায় সৌদি আরবে রাসেল মিয়া নামের এক বাংলাদেশি যুবক নিহত হয়েছেন। সোমবার (১৮ নভেম্বর) রিয়াদ ইশারা খালেদিয়া শহরের একটি ছাপাখানা ফ্যাক্টরিতে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, চার ভাই ও দুইবোনের তৃতীয় রাসেল। সাত বছর আগে জীবিকার তাগিদে পাড়ি দেন মরুর দেশ সৌদিতে। প্রবাসে থাকাকালীন মুঠোফোনে বিয়ে করেন একই এলাকার বাসিন্দা আনিকা বেগমকে। বছর খানেক আগে দেশে আসেন রাসেল। স্ত্রী আনিকাকে ৬ মাসের গর্ভবতী রেখে ৯ মাস আগে পাড়ি জমান।

পাঁচ মাস আগে তাবাচ্ছুম নামের একটি কন্যা সন্তানের বাবা হন তিনি। গত ১৮ নভেম্বর বিকেল সাড়ে ৫টায় পরিবারের সঙ্গে শেষ কথা হয় তার। পরে ওই ইদিন রাতেই প্রবাসে থাকা অন্য ভাইদের কাছ থেকে শুনতে পান বাথরুমের বায়ু গ্যাসের বিষক্রিয়ায় রাসেল মৃত্যুবরণ করেছে।

সৌদি প্রবাসী নিহতের স্বজন ফায়েজ উদ্দিন জানান, রাসেল আমার থেকে খানিকটা দূরে একটি ছাপাখানা ফ্যাক্টরিতে কাজ করে। যতটুকু জানতে পেরেছি ফ্যাক্টরির ভবনের চতুর্থ তলায় বাথরুম পরিষ্কার করতে গিয়ে কোল্ডডেক্স কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয়। রাসেল দ্বিতীয় তলায় বাথরুমে গেলে কেমিক্যাল গ্যাস বাথরুমে ছড়িয়ে পড়ে। বায়ু গ্যাস বিষক্রিয়া তৈরি হলে রাসেল প্রথমে অজ্ঞান হয়ে যায়। তাকে বাঁচাতে গিয়ে তার ফ্যাক্টরির মালিক অজ্ঞান হয়ে পড়ে। পরে দুইজনকেই উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।

নিহতের বাবা মোস্তু মিয়া বলেন, আমার চার ছেলেই সৌদি আরবে থাকে। রাসেল আমার তৃতীয় সন্তান। গত ১৮ নভেম্বর সন্ধ্যায় আমি শেষকথা বলি ছেলের সঙ্গে। আমাদের সাথে কথা বলে বাথরুমে যায় রাসেল। বাথরুমের গ্যাসে বিষক্রিয়া হয়ে আমার ছেলে মারা গেছে। তাকে বাঁচাতে গিয়ে তার মোদির মিশরীয় বাসিন্দা খলিল মিয়া নামের এক ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করেছেন। তিনি আমার ছেলের প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার ছিল। সৌদি আরবে নাকি বাথরুম পরিষ্কার করলে কেমিক্যাল ব্যবহার করে। সেই সাথে ভবনের সবাইকে আগে সতর্ক করা হয়। কিন্তু আমার ছেলেসহ কাউকেই ওইদিন সতর্ক করেনি পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা।

এ সময় তিনি ছেলের মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন।

এ বিষয়ে কালিকাপ্রসাদ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান লিটন মিয়া বলেন, একজন সাংগঠনিক ও ভালো ছেলে ছিল রাসেল। তার মৃত্যুর ঘটনায় পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। পরিবারের কথা চিন্তা করে আমাদের গ্রামের সন্তানরা বিদেশে পাড়ি জমায়। একটি দুর্ঘটনায় পরিবার আজ সন্তানহারা। শিশু সন্তানটি হয়েছে পিতৃহারা। আল্লাহ পরিবারটির শোক সইবার তৌফিক দান করুন।

রাজীবুল হাসান/এমআরএম/এমএস

প্রবাস জীবনের অভিজ্ঞতা, ভ্রমণ, গল্প-আড্ডা, আনন্দ-বেদনা, অনুভূতি,
স্বদেশের স্মৃতিচারণ, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক লেখা পাঠাতে পারেন। ছবিসহ লেখা
পাঠানোর ঠিকানা –
[email protected]
Exit mobile version