বরিশালে চালু হচ্ছে ৪৬০ শয্যার ক্যান্সার, কিডনি ও হৃদরোগের চিকিৎসা কেন্দ্র। এ চিকিৎসা কেন্দ্রটি চালু হলে দক্ষিণাঞ্চলের কয়েক লাখ মানুষের উন্নত চিকিৎসার ভোগান্তি লাঘব হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের চিকিৎসার একমাত্র ভরসাস্থল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। কিন্তু এ প্রতিষ্ঠানে ছিল না কোনো ক্যান্সার, কিডনি ও হৃদরোগের চিকিৎসা ব্যবস্থা। ফলে এ সংক্রান্ত রোগীদের ছুটতে হতো রাজধানী ঢাকা কিংবা বিদেশে। তবে এ চিকিৎসা অনেকটা ব্যয়বহুল হওয়ায় অনেকেই বিনা চিকিৎসায় মারা গেছেন।
পরে এ অঞ্চলের মানুষের চিকিৎসা খাতে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেরাতে উদ্যোগ নেওয়া হয় নতুন ৪৬০ শয্যার ক্যান্সার, কিডনি ও হৃদরোগ চিকিৎসা কেন্দ্র স্থাপনের। সেই ধারাবাহিকতায় স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অধীনে ২০২১ সালের আগস্টে কাজ শুরু করে গণপূর্ত বিভাগ। শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ঠিক সামনে প্রায় ৩ একর জমিতে কাজ শুরু হয় ক্যান্সার, কিডনি ও হৃদরোগ চিকিৎসা কেন্দ্র স্থাপনের। প্রথমে এই প্রকল্প ব্যয় ১৭৫ কোটি টাকা ধরা হলেও পরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ২৩৯ কোটি টাকায়। যার নির্মাণ কাজ চলতি বছরে শেষ হওয়ার থাকলেও অর্থ বরাদ্দ সংকট ও দেশের চলমান পরিস্থিতির কারণে শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তবে আগামী বছরের জুনে নির্মাণকাজ শেষ করার কথা জানিয়েছেন তারা।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জয়েন্ট ভেঞ্চার খান বিল্ডার্সের স্বত্বাধিকারী মো. মিজানুর রহমান বলেন, দক্ষিণাঞ্চলে প্রথম কোনো ১৭ তলার দীর্ঘতম সরকারি ভবন হতে যাচ্ছে। এ ভবনে উন্নত বিশ্বের মতোই থাকবে চিকিৎসার সব সুযোগ-সুবিধা। রোগী, স্বজন এবং চিকিৎসকদের জন্যে থাকবে চলন্ত সিঁড়ি, ভিন্ন ভিন্ন লিফট, সেন্ট্রাল এসি, ফায়ার লিফ্ট ও নিজস্ব সাবস্টেশন।
তিনি আরও বলেন, অর্থ বরাদ্দ সংকট ও দেশের চলমান পরিস্থিতির কারণে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজটি শেষ করা সম্ভব হয়নি। তবে দক্ষিণাঞ্চলবাসীর উন্নত চিকিৎসার কথা মাথায় রেখে কাজটির গুনগত মান সঠিক রেখে করা হয়েছে। যার সুফল এ অঞ্চলের মানুষ শত বছর ভোগ করতে পারবে।
এ বিষয়ে পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার বরিশালের ব্যবস্থাপক মো. মোশারফ হোসেন বলেন, দেশে বছরে অন্তত তিন লাখ মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। তাদের বড় একটি অংশ চিকিৎসার বাইরে থেকে যায় অর্থের অভাবে। বছরে এ রোগে মারা যায় এক লাখেরও বেশি মানুষ। যাদের মধ্যে বড় একটি অংশ বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের। তাই এ অঞ্চলের চিকিৎসা ব্যবস্থা সহজ ও যুগোপযোগী করে তুলতে প্রকল্পটি দ্রুত বাস্তবায়ন দরকার।
বরিশাল গণপূর্ত অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী ফয়সাল আলম বলেন, অর্থ বরাদ্দ না থাকায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিল পরিশোধে দেরির কারণে নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। তবে শীঘ্রই নির্মাণকাজ শেষ করে ভবনটি হস্তান্তর করা হবে।
শাওন খান/আরএইচ/জেআইএম