Site icon Amra Moulvibazari

নির্বাচনে কেন হারলেন কমলা হ্যারিস?

নির্বাচনে কেন হারলেন কমলা হ্যারিস?


যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বড় ব্যবধানে হেরেছেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিস। ৫ নভেম্বরের এই নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে হেরে যাওয়ার পর বুধবার বিকেলে হ্যারিস আনুষ্ঠানিকভাবে পরাজয় স্বীকার করেন এবং সমর্থকদের হতাশ না হতে অনুরোধ জানান। তবে, প্রাণান্ত চেষ্টার পরও তিনি কেন হারলেন – তা নিয়ে দলটির ভেতরেই শুরু হয়েছে বিতর্ক।

বাইডেনের প্রভাব

প্রায় এক মাস আগে জনপ্রিয় টক শো ‘দ্য ভিউ’-তে একটি সাক্ষাৎকারে অংশ নেন হ্যারিস। সেখানে তাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের চেয়ে তিনি কী কী কাজ ভিন্নভাবে করতে পারতেন। উত্তরে হ্যারিস বলেন, কিছুই মনে পড়ছে না। তার এই বক্তব্য পরবর্তীতে রিপাবলিকানদের প্রচারণার মুখ্য হাতিয়ারে পরিণত হয়।

প্রচারাভিযানে জো বাইডেনের সমর্থন হ্যারিসের জন্য একদিকে সুবিধাজনক মনে হলেও প্রেসিডেন্টের কম জনপ্রিয়তা আদতে তার ক্ষতিই করে। বাইডেনের জনসমর্থন রেটিং চার বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম থাকার কারণে অনেক ভোটার মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্র ভুল পথে চলছে। এ পরিস্থিতিতে হ্যারিস নিজেকে আলাদাভাবে তুলে ধরতে না পারায় ভোটারদের আস্থা অর্জনে ব্যর্থ হন।

হ্যারিস তার প্রচারণায় ডেমোক্র্যাট ভোটারদের ফের একত্রিত করার চেষ্টা করলেও তিনি মূল ভোটার শ্রেণিগুলোর কাছ থেকে কাঙ্ক্ষিত সাড়া পাননি। নির্বাচনী পরিসংখ্যান অনুযায়ী, তিনি লাতিনো ভোটারদের মধ্যে ১৩ পয়েন্ট, কৃষ্ণাঙ্গ ভোটারদের মধ্যে ২ পয়েন্ট এবং তরুণ ভোটারদের মধ্যে ৬ পয়েন্টের সমর্থন হারিয়েছেন।

অর্থনৈতিক সমস্যা

হ্যারিসের প্রচারণা অর্থনৈতিক সমস্যাগুলোর কার্যকরী সমাধান দিতে ব্যর্থ হয়েছে। একদিকে খাদ্যদ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে ভোটারদের উদ্বেগ ছিল; অন্যদিকে অভিবাসন নিয়ে মতামতের পরিবর্তনও তার প্রতি নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া নিয়ে ভোটারদের মধ্যে ছিল তীব্র প্রতিক্রিয়া। এ বিষয়ে হ্যারিসের পরিকল্পনাগুলো আরও স্পষ্ট হওয়া জরুরি ছিল। কিন্তু তিনি এই দিকটি কৌশলগতভাবে ঠিকঠাক ধরতে পারেননি।

নিজস্ব নীতির অনুপস্থিতি

হ্যারিসের প্রচারণার কৌশলগত ব্যর্থতার আরেকটি বড় কারণ ছিল তার মনোযোগকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের দিকে কেন্দ্রীভূত রাখা। যদিও তিনি ট্রাম্পের বিরুদ্ধাচরণকে গুরুত্বপূর্ণ ভাবেন, কিন্তু অনেক ভোটার তার নিজস্ব নীতির বিষয়ে আরও জানতে চেয়েছিলেন, যা হ্যারিসের প্রচারণায় স্পষ্টভাবে অনুপস্থিত ছিল।

ডেমোক্র্যাটিক পার্টির বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আক্রমণ চালানোর সময়ে হ্যারিস তার নিজস্ব নীতিমালা এবং নেতৃত্বের গুণাবলির প্রতি ভোটারদের মনোযোগ আকর্ষণে ব্যর্থ হয়েছেন। ডেমোক্র্যাটদের মধ্যেও প্রশ্ন উঠছে, বাইডেনের ছায়া থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ থাকা সত্ত্বেও হ্যারিস কেন সেই পথে হাঁটেননি।

এখন, ডেমোক্র্যাট শিবিরে হ্যারিসের পরাজয়ের কারণ নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এবারের ভুলভ্রান্তি সংশোধন করে আগামীতে সেই ভুলের পুনরাবৃত্তি যেন না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে দলটিকে। পাশাপাশি, দলে ভবিষ্যৎ নিয়েও নতুন পরিকল্পনা তৈরির প্রয়োজনীয়তা তৈরি হয়েছে।

সূত্র: বিবিসি
কেএএ/

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।
Exit mobile version