Site icon Amra Moulvibazari

উত্তম চরিত্র ও আচরণের পুরস্কার জান্নাতের সর্বোচ্চ স্থান

উত্তম চরিত্র ও আচরণের পুরস্কার জান্নাতের সর্বোচ্চ স্থান


একজন মানুষকে বিচার করার ক্ষেত্রে সুন্দর আচার-ব্যবহার ও নেক চরিত্র সাধারণ মানদণ্ডে যেমন গুরুত্বপূর্ণ, ইসলামের মানদণ্ডেও এটি গুরুত্বপূর্ণ। নবিজি (সা.) উত্তম ও সুন্দর চরিত্রের অধিকারী মুসলমানদের সর্বোত্তম মুসলমান গণ্য করেছেন। আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, আপনাদের মধ্যে সর্বোত্তম ওই ব্যক্তি, যে চরিত্রের দিক দিয়ে উত্তম। (সহিহ বুখারি: ৩৫৫৯, সহিহ মুসলিম: ২৩২১)

আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত আরেকটি হাদিসে উত্তম চরিত্রের ব্যক্তিদের পছন্দ করার কথা উল্লেখ করে নবিজি (সা.) বলেন, তোমাদের মধ্যে ওই ব্যক্তি আমার কাছে খুব প্রিয়, যার চরিত্র ভালো। (সহিহ বুখারি: ৩৭৫৯)

আরেকটি বর্ণনায় আয়েশা (রা.) বলেন, আমি আল্লাহর রাসুলকে (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলতে শুনেছি, নিশ্চয়ই মুমিন ব্যক্তি তার ভালো চরিত্রের মাধ্যমে দিনে রোজা পালনকারী ও রাতে তাহাজ্জুদগুজারীর সমান মর্যাদা লাভ করতে পারে। (সুনানে আবু দাউদ: ৪৭৯৮)

স্ত্রী ও পরিবার-পরিজনদের সাথে উত্তম আচরণের গুরুত্ব

উত্তম চরিত্র ও আচরণ মহান আল্লাহর প্রতি পূর্ণ ঈমানের সাথে ঘনিষ্টভাবে জড়িত। যে মুসলমানের অন্তরে পূর্ণ ঈমান থাকে, তার চরিত্র ও আচরণ ভালো হওয়াই উচিত বা স্বাভাবিক। কিছু হাদিসে হাদিসে উত্তম আচরণ ও চরিত্রের অধিকারী ব্যক্তিদের পূর্ণ ঈমানের অধিকারী বলা হয়েছে। আর উত্তম চরিত্র ‍হিসেবে নিজের পরিবার-পরিজন বিশেষত নিজের স্ত্রীর সাথে উত্তম আচরণকে গুরুত্বের সাথে উল্লেখ করা হয়েছে।

আবু হোরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, সর্বোত্তম চরিত্রের অধিকারী ব্যক্তিই সবচেয়ে পূর্ণ ঈমানের অধিকারী। আর তোমাদের মধ্যে উত্তম চরিত্রের অধিকারী ওই ব্যক্তি উত্তম, যে তার স্ত্রীর সাথে আচরণের ক্ষেত্রে উত্তম। (সুনানে তিরমিজি: ১১৬২)

আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, উত্তম চরিত্রের অধিকারী ও পরিবার-পরিজনের সাথে সদ্ব্যবহারকারী পূর্ণ ঈমানের অধিকারীদের অন্তর্ভুক্ত। (সুনানে তিরমিজি: ২৬১২)

উত্তম চরিত্রের পুরস্কার জান্নাত

আবু হোরায়রা (রা.) বলেন, আল্লাহর রাসুলকে (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) প্রশ্ন করা হলো, কোন কাজ সবচেয়ে বেশি পরিমাণ মানুষকে জান্নাতে নিয়ে যাবে? তিনি বললেন, আল্লাহভীতি ও উত্তম চরিত্র। আবার তাকে প্রশ্ন করা হলো, সবচেয়ে বেশি পরিমাণ মানুষকে জাহান্নামে নিয়ে যাবে কোন কাজ? তিনি বললেন, মুখ ও লজ্জাস্থান। (অর্থাৎ এ দুটি অঙ্গের গুনাহ) (সুনানে তিরমিজি: ২০০৪)

আরেকটি হাদিসে নবিজি (সা.) বলেছেন, সুন্দর চরিত্রের অধিকারী ব্যক্তিরা জান্নাতের সর্বোচ্চ স্থানে থাকবে। আবু উমামা আল-বাহিলী (রা.) থেকে বর্ণিত নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, আমি সেই ব্যক্তির জন্য জান্নাতের শেষ সীমায় একটি ঘর দেওয়ার জন্য জামিন হচ্ছি, যে নিজের অবস্থানে সঠিক হওয়া সত্ত্বেও বিতর্ক-বিবাদ বর্জন করে। সেই ব্যক্তির জন্য আমি জান্নাতের মধ্যস্থলে একটি ঘরের জামিন হচ্ছি, যে ঠাট্টা করার সময়ও মিথ্যা বলা বর্জন করে। আর সেই ব্যক্তির জন্য আমি জান্নাতের সবচেয়ে উঁচু জায়গায় একটি ঘরের জামিন হচ্ছি, যার চরিত্র সুন্দর। ‍(সুনানে আবু দাউদ: ৪৮০২)

তাই একজন মুসলমান হিসেবে পরিবার, পরিজন, বন্ধু-বান্ধব, সহপাঠী, সহকর্মী ও প্রতিবেশীদের নিজেদের আচার-আচরণ সুন্দর করা আমাদের অবশ্যকর্তব্য। আল্লাহ আমাদের তওফিক দান করুন, আমিন!

ওএফএফ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।
Exit mobile version