Site icon Amra Moulvibazari

মারা গেলেন মাইকেল জ্যাকসনের সেই সঙ্গী

মারা গেলেন মাইকেল জ্যাকসনের সেই সঙ্গী


কুইন্সি জোন্স, একজন কণ্ঠশিল্পী, ব্যান্ডলিডার, সুরকার, সংগীত রচয়িতা এবং প্রযোজক হিসেবে বিখ্যাত ছিলেন। মাইকেল জ্যাকসনের বেশ কিছু জনপ্রিয় গানের সঙ্গী হিসেবে তিনি বিখ্যাত ছিলেন। ৯১ বছর বয়সে জীবনের মায়া ত্যাগ করেছেন এই সংগীত ব্যক্তিত্ব। রবিবার রাতে ক্যালিফোর্নিয়ার বেল এয়ার থেকে তার মৃত্যুর খবর এসেছে, জানায় ভ্যারাইটি।

তার পরিবারের পক্ষ থেকে মৃত্যুর তথ্য জানানো হয়েছে, তবে মৃত্যুর কারণ উল্লেখ করা হয়নি।

জোন্স পরিবারের একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‌‘আজ রাতে, আমাদের হৃদয় ভাঙা। আমাদের পিতা এবং ভাই কুইন্সি জোন্সের মৃত্যুর খবর শেয়ার করতে হচ্ছে। এটি আমাদের পরিবারের জন্য একটি বিশাল ক্ষতি। আমরা তার মহান জীবন উদযাপন করব সবসময়।’

বিনোদন জগতে কুইন্সি জোন্সের অনেক বড় প্রভাব ছিল। তিনি সাধারণত ‘কিউ’ নামেই পরিচিত ছিলেন। তিনি জ্যাজ সংগীতের জগৎ থেকে উঠে এসে পপ সংগীতের একজন প্রধান ব্যক্তিত্ব হয়ে উঠেন। ১৯৯০ সালে তার অ্যালবাম ‘ব্যাক অন দ্য ব্লক’ ৬টি গ্র্যামি পুরস্কার অর্জন করেছিল। তিনি তিনবার সংগীত প্রযোজক হিসেবে বর্ষসেরা পুরস্কার লাভ করেন।

অনেকেই তাকে মাইকেল জ্যাকসনের সঙ্গে কাজের জন্য বেশি চেনেন ও সম্মান করেন। ১৯৭৯ সালে জ্যাকসনের ‘অফ দ্য ওয়াল’ অ্যালবাম দিয়ে তাদের একসঙ্গে কাজ করা শুরু হয়েছিল। এই অ্যালবামটি প্রায় ২ কোটি কপি বিক্রি হয়েছে বিশ্বজুড়ে। তারা ‘থ্রিলার’ (১৯৮২) অ্যালবামের মাধ্যমেও দারুণ সাড়া পান। বিশ্বব্যাপী ১১০ মিলিয়নেরও বেশি কপি বিক্রি হয়েছিল অ্যালবামটি। জোন্স ১৯৮৭ সালে জ্যাকসনের ব্যাড অ্যালবামেও কাজ করেছেন।

১৯৮৫ সালে জোন্স আন্তর্জাতিক খ্যাতি অর্জন করেন যখন তিনি ‘উই আর দ্য ওয়ার্ল্ড’ গানটি প্রযোজনা করেন। আফ্রিকার দুর্ভিক্ষ সহায়তার জন্য এই গান ও তা থেকে উপার্জিত আয় উৎসর্গ করা হয়। গানটি জ্যাকসন এবং লিওনেল রিচি দ্বারা রচিত এবং এতে অনেক বিখ্যাত শিল্পী অংশ নেন।

কুইন্সি জোন্স ১৯৬৪ সালে ‘দ্য পনব্রোকার’ সিনেমার জন্য সংগীত রচনা করেন। ১৯৮০ সালে তিনি কিউওয়েস্ট রেকর্ডস প্রতিষ্ঠা করেন এবং স্টিভেন স্পিলবার্গের ‘দ্য কালার পার্পল’ ছবির জন্য সাউন্ডট্র্যাক প্রযোজনা করেন। তিনি তার সংগীতের জন্য সাতটি অস্কার মনোনয়ন পেয়েছেন এবং ১৯৯৫ সালে জিয়ান হর্শল্ট হিউম্যানিটেরিয়ান অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন।

টেলিভিশনেও কাজ করেছেন জোন্স। ১৯৯০ এর দশকের জনপ্রিয় কমেডি ‘দ্য ফ্রেশ প্রিন্স অফ বেল-এয়ার’ -এর নির্বাহী প্রযোজক ছিলেন। যা উইল স্মিথের অভিনয় ক্যারিয়ারকে সাফল্য এনে দেয়।

কুইন্সি জোন্স শিকাগোতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছোটবেলায় ট্রাম্পেট বাজানো শুরু করেন। ১০ বছর বয়সে তার পরিবার সিয়াটলে চলে আসে। ১৪ বছর বয়সে তিনি রে চার্লসের সাথে দেখা করেন। বার্কলির সংগীত স্কুলে পড়াশোনা করার পর তিনি লিওনেল হ্যাম্পটনের বিগ ব্যান্ডের সাথে সফর করেন।

জীবনের বেশিরভাগ সময় জোন্স অনেক শিল্পীর জন্য সংগীত তৈরি করেছেন। কিন্তু মাইকেল জ্যাকসনের সঙ্গে তার কাজই তাকে সংগীতশিল্পে বিখ্যাত করে তুলেছে।

কুইন্সি জোন্স বহু পুরস্কার অর্জন করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে রেকর্ডিং একাডেমির লিজেন্ড অ্যাওয়ার্ড এবং প্রেসিডেন্ট ওবামার কাছ থেকে জাতীয় শিল্প পদক।

তিনি ২০০১ সালে তার আত্মজীবনী কিউ প্রকাশ করেছিলেন, যা গ্র্যামি পুরস্কারও লাভ করে।

তিনি তিন বিয়ে করেছিলন। তিনটি সংসারই তার ভেঙে যায়। তিনি ছয় কন্যা এবং এক পুত্রের জনক।

এলএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।
Exit mobile version