যুবকদের অন্যায় ও অশ্লীল কাজ থেকে দূরে রাখতে ধর্মীয় শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল।
তিনি বলেন, আওয়ামী ফ্যাসিস্ট অপশক্তি ছাত্র, যুবক ও তরুণদের নৈতিক অবক্ষয় এমন মাত্রায় নিয়ে গেছে সুস্থ, বিবেক সম্পন্ন মানুষ কল্পনাও করতে পারে না। নৈতিকভাবে ছাত্র-যুবসমাজকে ধ্বংস করার জন্য বহুমুখী কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করে ফেলেছে।
রোববার (৩ নভেম্বর) রাজধানীর ধলপুর কমিউনিটি সেন্টারে সোশ্যাল ইয়ুথ ফোরামের উদ্যোগে আয়োজিত যুব সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, তিনি তরুণ যুবকদের প্রতি ৩টি পরামর্শ রাখেন। এক. দেশ ও জাতির প্রয়োজনে সবার আগে নিজের চরিত্রকে সুন্দর করে গড়ে তুলতে হবে। দুই. ছাত্র যুবকদের নিজেদের লেখাপড়ায় মনোযোগী হয়ে গৌরব অর্জনের সঙ্গে নিজ প্রফেশনে নজর রাখতে হবে। তিন. দেশ ও জাতিকে পরিচালনার জন্য নিজেকে সদা প্রস্তুত রাখতে হবে। আগ্রহ ও আকাঙ্ক্ষা যেন কোনো অবস্থাতেই কমতি না হয়। নিজ নিজ অবস্থান তৈরিতে নিজেকে যোগ্য করে তুলতে হবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন- জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন ও মহানগরীর সহকারী সেক্রেটারি মোহাম্মদ কামাল হোসাইন।
ইয়ুথ ফোরামের সভাপতি খায়রুল বাশার আরিফের সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি আব্দুল্লাহ আল আমিনের সঞ্চালনায় সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- কদমতলী উত্তর থানা আমির আব্দুর রহিম জীবন, যাত্রাবাড়ী উত্তর থানা আমীর মুফাসসির জাকির হোসাইন শেখ ও সেক্রেটারি রাসেল মাহমুদ, ছাত্রশিবির ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সভাপতি হেলাল উদ্দিন প্রমুখ।
বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের বিতর্কিত শিক্ষক ব্যবস্থার সমালোচনা করে নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, শিক্ষা ব্যবস্থাটা এমন করা হয়েছে যে, শিক্ষকও নাছে, ছাত্রও নাছে, ছাত্রীও নাছে। ইসলাম শিক্ষার বইয়ে অমুসলিমদের দেবতার ছবি দেওয়া হয়েছে। শিক্ষাব্যবস্থা থেকে ইসলামী চেতনা ধারণ করার মতো যে কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ, ছড়া সবকিছুই সরিয়ে ফেলা হয়েছে।
শিক্ষা ব্যবস্থা পরিবর্তন করে নাস্তিক্যবাদী শিক্ষাব্যবস্থা জাতির ওপর চাপিয়ে দিয়েছে আওয়ামী অপশক্তি। পাঠ্যক্রমে নাচানাচি, লাফালাফি প্রশিক্ষণ দেখেই বোঝা যায় শিক্ষকগণ ছাত্রদেরকে কী উপহার দেবে। আজকে ছাত্র জনতার হাতে একটি পরিবর্তন হয়েছে। জুলাই বিপ্লব বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্যতম একটি ঘটনা। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকার রাষ্ট্র যন্ত্রের সর্বোচ্চ বলপ্রয়োগ করে গণহত্যা চালিয়েছে। এই গণহত্যা সহ আওয়ামী লীগের গত ১৫ বছরের শাসনামলের সকল বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিচার বাংলাদেশের জমিনে করতে হবে। অপ্রয়োজনীয় বিষয় পাঠ্যবইয়ে যুক্ত করে গোটা শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করে ফেলা হয়েছিল। এ যুবসমাজকে আর বিপথে নেওয়ার সুযোগ আমরা দেবো না।
অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, তরুণ যুবকদের রক্তের বিনিময়ে আজ আমরা উন্মুক্ত পরিবেশে কথা বলার সুযোগ পেয়েছি। তাদের ভুলে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। গত ৫ আগস্টের আগেও বাবা ছেলে খাবার টেবিলে বসে খাওয়ার সময়ে পুলিশ এসে বলেছে এখানে গোপন মিটিং চলছে। গ্রেফতার-রিমান্ড নিত্য বিষয় ছিল। আজকে তরুণ যুবকরা যে নতুন দেশ আমাদের উপহার দিয়েছে, সেখানে বৈষম্যহীন একটি সোনার বাংলাদেশ গঠন করা নৈতিক দায়িত্ব।
এএএম/এমএএইচ/