Site icon Amra Moulvibazari

ওএমএসের আটা সরবরাহ নিয়ে টানাপোড়েন

ওএমএসের আটা সরবরাহ নিয়ে টানাপোড়েন


সরকারের ওপেন মার্কেট সেল (ওএমএস) কার্যক্রম নিয়ে অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে। আটা সরবরাহকারীদের নতুন নীতিমালায় অপ্রয়োজনীয় কিছু শর্ত জুড়ে দেওয়ায় তারা সংক্ষুব্ধ।

যে কারণে গত সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসেই আটা সরবরাহ নিয়ে একাধিক অফিস আদেশ জারি করা হয়েছে। এ অবস্থায় আটা সরবরাহ বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

যদিও খাদ্য সচিব মো. মাসুদুল হাসান জানিয়েছেন, নতুন নীতিমালায় কিছু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। আটা সরবরাহ কোনোভাবে বন্ধ হবে না। ওএমএসও বন্ধ হবে না। নীতিমালা প্রণয়নকালে অংশীজন হিসেবে মিল মালিক, সরবরাহকারীদের কোনো মতামত নেওয়া হয়নি। ফলে অযৌক্তিক কিছু শর্ত নীতিমালায় ঢুকেছে। আমরা সমস্যা চিহ্নিত করেছি।

এদিকে একজন ভোক্তা ঠিক সময়ে আটা পান না বলে খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) বরাবর অভিযোগ করেছেন। একই সময়ে তিনি এ বিষয়ে হাইকোর্টে রিটও করেছেন। ফলে উচ্চ আদালত থেকে ৮ নভেম্বর পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জের সরবরাহকারীদের অনুকূলে গমের বরাদ্দ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। কোর্টের নির্দেশে সরবরাহ আদেশ জারি বন্ধ রয়েছে। তবে আটা নিয়ে কোনো সংকট হয়নি এবং হবে না বলে জানিয়েছেন সচিব।

খাদ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ওএমএস কার্যক্রম নীতিমালা এবং ওএমএস ডিলারশিপ নীতিমালা পরিপত্র জারি হয় গত ৯ অক্টোবর। নীতিমালায় কিছু অযৌক্তিক শর্ত রয়েছে বলে অভিযোগ উঠছে। এর মধ্যে ওএমএসের চাল ও আটা বিক্রি হয় সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টার মধ্যে। এ সময় বিদ্যুতের কোনো প্রয়োজন হওয়ার কথা না। কিন্তু ওএমএস নীতিমালা ডিলারদের বিদ্যুৎ বিভাগের ছাড়পত্র নিতে বলা হয়েছে।

এছাড়া ডিলাররা উৎপাদন, প্রস্তুত এবং গম পেষাইয়ের সঙ্গে কোনোভাবে সম্পৃক্ত না। কিন্তু নীতিমালায় ডিলারদের জন্য পরিবেশের ছাড়পত্র নেওয়ার শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে, যা একেবারেই অযৌক্তিক বলছেন ডিলাররা। এছাড়া বিপণন, পরিবহন ও রক্ষাবেক্ষণের সঙ্গে জড়িতদের জন্য বিএসটিআইয়ের ছাড়পত্র নেওয়ার শর্ত দেওয়া হয়েছে, যা যৌক্তিক নয়।

এছাড়া ওএমএস ডিলারদের জন্য ফায়ার সার্ভিসের লাইসেন্স বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। অথচ তাদের কোনো স্থাপনা নেই। তারা খাদ্য অধিদপ্তর থেকে পাওয়া আটা ট্রাকে কিংবা নির্দিষ্ট দোকানে বিক্রি করে।

ডিলাররা জানান, এসব নিয়ে খাদ্য প্রশাসনের সঙ্গে আটা সরবরাহকারীদের বড় ধরনের দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে। একপর্যায়ে গত ২৭ অক্টোবর উল্লিখিত বেশ কয়েকটি শর্ত থেকে ডিলারদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

এদিকে অভিযোগ উঠছে, সরকারের ওএমএস নীতিমালা এবং ডিলারশিপ নীতিমালা প্রণয়নের সময় আটা, ময়দা মিলমালিকদের সঙ্গে কোনো ধরনের বৈঠক করেনি খাদ্য মন্ত্রণালয়। যারা এ কাজের মূল অংশীজন তাদের সুবিধা-অসুবিধা বিবেচনায় না নিয়েই নীতিমালা চূড়ান্ত করা হয়েছে। ফলে বিরোধ তুঙ্গে ওঠায় শেষ পর্যন্ত তা নীতিমালা থেকে বাদ দেওয়া হয়। ওএমএস কার্যক্রম এবং ওএমএস ডিলার নিয়োগের আরও কিছু শর্ত তুলে দেওয়া কাজ চলছে বলে সংশ্লিষ্টরা।

অন্যদিকে সাভারের হেমায়েরপুরের বাসিন্দা মো. মাহফুজ আহমেদ খাদ্য অধিদপ্তরের ডিজির কাছে আবেদন করেছিলেন। আবেদনে তিনি দাবি করেন, নীতিমালার শর্ত ভেঙে নারায়ণগঞ্জের মিলমালিকদের গম বরাদ্দ দেওয়া হয়। আবেদনে তিনি নীতিমালা অনুযায়ী ঢাকার মিলমালিকরা গম বরাদ্দ কম পাচ্ছেন বলে উল্লেখ করেন। দূরত্বের কারণে সময়মতো সাধারণ মানুষ আটা পান না বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

তিনি নারয়ণগঞ্জের মিলমালিকদের বরাদ্দ বাতিলের দাবি করেন। একই বিষয়ে তিনি ৯ অক্টোবর হাইকোর্টে রিট পিটিশনও দায়ের করেন তিনি। ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে এ বিষয়ে খাদ্য সচিবকে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। আদালতের জবাব দেওয়ার আগেই নারায়ণগঞ্জ জেলার ময়দা ও আটা মিলমালিকদের অনককূলে গমের বরাদ্দ বাতিল করে অফিস আদেশ জারি করেছে খাদ্য মন্ত্রণালয়।

এনএইচ/ইএ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।
Exit mobile version