এলাম, দেখলাম, জয় করলাম-এর মতোই ঢাকাই সিমেনায় স্থান করে নিয়েছেলেন চিত্রনায়িকা আরিফা জামান মৌসুমী। শুধু তাই নয়, অভিনয় তাকে দিয়েছে ‘প্রিয়দর্শিনী’ তকমা। ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ সিনেমার মাধ্যমে ঢালিউডে অভিষেক হয় তার। আজ তার জন্মদিন।
অভিনেত্রী মৌসুমী যে মানুষের হৃদয়ের কতটা গভীরে পৌঁছে গেছেন, তার প্রমাণ মানিকগঞ্জে তার জন্মদিন উদযাপন। বিভিন্ন সংগঠন ও অনুরাগীরা এই নায়িকার জন্মদিন উদযাপন করেন বটে। মৌসুমীর ফ্যান ক্লাবের সদ্যরাও প্রতিটি জন্মদিন বিশেষভাবে উদযাপন করে। উল্লেখযোগ্য ঘটনাটি ঘটে চলেছে মানিকগঞ্জে।
গত ১৬ বছর ধরে মানিকগঞ্জের একটি গ্রামের মৌসুমীর জন্মদিন উদযাপন করা হয়। গত কয়েকটি জন্মদিন মৌসুমীকে ছাড়াই উদযাপন করেছেন তার সেখানকার ভক্তরা। সন্তানদের জন্য কয়েক বছর যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন অভিনেত্রী। এবারও তাকে ছাড়া দেশের অনুরাগীরা উদযাপন করবেন প্রিয় অভিনেত্রীর জন্মদিন।
মৌসুমীর জন্মদিন প্রসঙ্গে তার স্বামী অভিনেতা ওমর সানীর সঙ্গে কথা হয়। জাগো নিউজকে তিনি বলেন, প্রতিবারের মতো এ বছর ফ্যান ক্লাবের পক্ষ থেকে সদস্যরা সন্ধ্যার দিকে জন্মদিনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। আমি আজ সকালে মৌসুমীর জন্মদিন উপলক্ষে চ্যানেল আইয়ের একটি অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকব।
ওমর সানী জানান, মানিকগঞ্জের উথলী নামের একটি গ্রামের এক অনুরাগী গত ১৬ বছর ধরে তার বাড়িতে মৌসুমীর জন্মদিন আয়োজন করে আসছেন। মৌসুমীর পরিবার সেটা জানতে পেরেছে গত দুবছর আগে। এ বছরও সেখানে জন্মদিনের আয়োজন থাকবে। মৌসুমী দেশে না থাকায় এবার সে অনুষ্ঠানে যাবেন ওমর সানী। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘মানিকগঞ্জের এ গ্রামটিতে মোসুমীর জন্মদিন উদযাপনের বিষয়টি আমরা অনেক পরে আবিষ্কার করেছি। যিনি মৌসুমীর জন্মদিন পালন করছেন, তার নাম লুৎফর রহমান। তিনি সেখানকার একজন ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য। তার সঙ্গে এখন আমার ভালো সম্পর্ক। তিনি একসময় প্রবাসী ছিলেন। তার অফিসে মৌসুমী আর আমার ছবি দিয়ে সাজানো। তার খুব উদার মনের মানুষ। প্রত্যন্ত গ্রামের এই মানুষটির এমন আয়োজন আমি দারুণ উপভোগ করি।’
ওমর সানী আরও বলেন, ‘গত ১৬ বছর ধরে মৌসুমীর জন্মদিনে গ্রামবাসীর মাঝে খিচুড়িসহ বিভিন্ন খাবার বিতরণ করেন। দোয়ার আয়োজন করেন, এবারও করেছেন। আমাকে নেমন্তন্ন করেছেন। এবার আমি প্রথমবারের মতো সেখানে অংশগ্রহণ করবো। দুপুরে সবার সঙ্গে মৌসুমীর জন্মদিনের খিচুড়ি খাবো। সেখানে জন্মদিনের কেকও কাটা হবে।’
‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ দিয়ে ঢালিউডে অভিষেক হয় মৌসুমীর। ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায় ছবিটি। এরপর ‘অন্তরে অন্তরে’, ‘দোলা’, ‘দেনমোহর’ ও ‘স্নেহ’ ছবিগুলোতে অভিনয় করে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে পৌঁছে যান তিনি। এখন পর্যন্ত তিনি অভিনয় করেছেন শতাধিক সিনেমায়।
অভিনয়ের জন্য মৌসুমী কয়েবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেছেন। এ ছাড়াও পেয়েছেন বাচসাস পুরস্কারসহ বহু পুরস্কার ও সম্মননা। অভিনয়ের পাশাপাশি পরিচালকের খাতায়ও নাম লিখিয়েছেন মৌসুমী। ২০০৩ সালে ‘কখনো মেঘ কখনো বৃষ্টি’ দিয়ে তার চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটে। ২০০৫ সালে ‘মেহের নিগার’ সিনেমাটি পরিচালনা করেন তিনি। ২০১৬ সালে ‘শূন্য হৃদয়’ নামে একটি টেলিছবিও নির্মাণ করেন তিনি।
১৯৯৬ সালে ‘গরিবের রানী’ সিনেমার মাধ্যমে প্রযোজক হিসেবে যাত্রা শুরু হয় মৌসুমীর। একই বছর ‘সুখের ঘরে দুখের আগুন’ ও ‘বউয়ের সম্মান’ সিনেমা দুটি প্রযোজনা করেন তিনি। মৌসুমী সিনেমায় অভিনয়ের পাশাপাশি ছোটপর্দায়ও অভিনয় করেছেন। করেছেন উপস্থাপনায়ও।
এমএমএফ/আরএমডি/এমএস