জুলাই অভ্যুত্থানে দেশের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রথমে কোটাবিরোধী আন্দোলন শুরু করলেও তারা হলগুলো থেকে বিতাড়িত হওয়ার পরে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ভূমিকা ছিল অগ্রগণ্য।
শনিবার (২ নভেম্বর) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন অগ্নিসেতু পত্রিকার সম্পাদক নাবিন আত তাহি এবং সঞ্চালনা করেন মারুফ হাসান।
সেমিনারে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পলিটিক্যাল সায়েন্স বিভাগের শিক্ষক শাহজাদ ফিরোজ বলেন, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় দেশের ইতিহাসের বিভিন্ন আন্দোলনে সংগ্রামে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছে। শাহবাগের আন্দালন, ১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলনসহ সর্বশেষ জুলাই অভ্যুত্থানে তারা সক্রিয় ছিল। তারা কিন্তু বেশিরভাগ সময় প্রাইভেট জবগুলোতে ফোকাস করে। কিন্তু সরকার যখন কোটাপ্রথার মাধ্যমে যে একটি শ্রেণির অধিকারকে খর্ব করছিল তার প্রতিবাদে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মাঠে নেমেছিল। আমরা গণঅভ্যুত্থানত্তোর বাংলাদেশ বৈষম্যহীন সমাজ গঠনের মধ্য দিয়েই শহীদদের রক্তের কিছুটা মূল্য দেওয়ার চেষ্টা করব।
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শমী সুহ্রদ বলেন, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মানবিক মর্যাদাসম্পন্ন। যুগে যুগে এদেশের তরুণেরা বঞ্চনাবোধের জায়গা থেকে রাস্তায় নেমেছে। চব্বিশও তার ব্যতিক্রম নয়। এই অভ্যুত্থান যেহেতু ছিল বঞ্চনার বিরুদ্ধে। তাই নতুন বাংলাদেশে বৈষম্য তৈরি করে শহীদদের আত্মদানকে ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না। আমাদের শহীদদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক সামিনা লুৎফা নিত্রা বলেন, ২৪ এর আন্দোলন কয়েকদিনের নয় বরং কয়েক বছরের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। গত ১৫ বছরের স্বৈরাচারী ক্ষমতা খর্ব করা এই জুলাই অভ্যুত্থান। যে জায়গায় প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অন্যতম সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছিল। গণঅভুত্থানের ধর্মই হলো গোষ্ঠিগত জায়গার মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে জাতীয় পর্যায়ে ছড়িয়ে যায়। যেভাবে কোটা সংস্কার আন্দোলন পাবলিক সার্ভিস বিদ্যালয় থেকে শুরু হয়ে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছড়িয়ে পড়েছিল।
তিনি বলেন, আমাদের উচিত আন্দোলনের সময়টুকু লিপিবদ্ধ করে রাখা। অভ্যুত্থানে যারা জীবন দিয়ে ফেলেছে তারা তাদের কাজ করেছেন। সহকর্মী হয়ে শহীদের ভূমিকাকে পরবর্তী প্রজন্মের শিক্ষার উৎকৃষ্ট উদাহরণ হিসেবে রেখে যেতে হবে। আমাদের আরেকটা বিষয় খেয়াল করা উচিত, শহীদের প্রতিশোধের জন্য তারা জীবন দেয়নি। ন্যায়বিচারের জন্য তারা লড়েছে। বৈষম্যহীন সমাজ গড়তে আমাদের ভূমিকা রাখতে হবে।
এমএইচএ/এমআরএম/জেআইএম