Site icon Amra Moulvibazari

কুড়িগ্রামে চুইঝাল চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকের

কুড়িগ্রামে চুইঝাল চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকের


কুড়িগ্রামে চুইঝাল চাষ করে বাড়তি আয় করছেন কৃষকেরা। বাড়ির উঠানে, পরিত্যক্ত জমিতে আম গাছ, সুপারি গাছে পরজীবী লতা জাতীয় এ গাছ লাগিয়ে বছরে ৩০-৪০ হাজার টাকা আয় করছেন তারা। সার ও কীটনাশক ছাড়া সামান্য পরিচর্যায় চাষাবাদ করা যায় বলে দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের।

কথা হয় চাকিরকুঁটি গ্রামের মো. শহিদুল ইসলাম বাচ্চু মিয়ার সাথে। তিনি বলেন, ‘আমার ২ বিঘা জমিতে আম ও সুপারির বাগানে চুইঝালের গাছ লাগিয়েছি। গাছ লাগানোর ৩ বছর পর থেকে বিক্রি শুরু করেছি। এ গাছে সার ও পরিচর্যার প্রয়োজন পড়ে না। দাম ভালো পাওয়া যায়। প্রতি মণ চুইঝাল ৪ হাজার টাকা বিক্রি করি। বয়সভেদে একটি গাছ থেকে ৫ হাজার টাকা থেকে ১২ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি করি। সুপারি ও আম বিক্রির পাশাপাশি চুইঝাল বিক্রি করে বেশ ভালোই চলছে সংসার।’

আরেক কৃষক মো. মকবুল হোসেন বলেন, ‘চুইঝাল মূলত মসলা জাতীয় উদ্ভিদ। বাজারে প্রতি কেজি ১০০ টাকা দরে বিক্রি করি। মাংস রান্না ও ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হয় বলে শুনেছি। আমার সুপারির বাগানে ৯০টির মতো গাছ আছে। গত ২ বছর ধরে বিক্রি করে আসছি। ভালো আয় হচ্ছে। আগামীতে গাছের সংখ্যা বাড়াবো।’

কৃষক সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘চাকিরকুঁটি গ্রামটি বর্তমানে চুইঝালের গ্রাম নামে পরিচিত। এ গ্রামে প্রত্যেক কৃষকের বাড়িতে এর আবাদ হচ্ছে। স্থানীয় ভাবে বাজার চাহিদা থাকলে আরও লাভবান হওয়া যেত।’

নাগেশ্বরী উপজেলার উপসহকারী কৃষি অফিসার মো. মোস্তাফিজার রহমান বলেন, ‘উপজেলার নেওয়াশি ইউনিয়নের চাকিরকুঁটি গ্রামে প্রত্যেক বাড়িতে চুইঝাল চাষ হচ্ছে। এটি মসলাজাতীয় ও ওষুধিগুণ সম্পন্ন। দেশের দক্ষিণাঞ্চলে এর চাহিদা বেশি। এ গাছে খরচ নেই, লাভ ভালো। ফলে গ্রামের প্রত্যেক কৃষক ভালো লাভবান হচ্ছেন। কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে।’

কুড়িগ্রামে চুইঝাল চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকের

কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ উদ্ভিদবিদ অধ্যাপক মির্জা নাসির উদ্দীন বলেন, ‘রান্নার মসলা হিসেবে চুইঝালের চাহিদা আছে। এ ছাড়া গাছটি ওষুধি গাছ হিসেবে বাতের ব্যথা নিরাময়ে কাজে লাগে।’

কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘কুড়িগ্রামে চুইঝাল চাষে কৃষকের আগ্রহ বেড়েছে। বাড়তি খরচ না থাকায় এটি বিক্রি করে ভালো আয় করতে পারছেন। জেলার নাগেশ্বরী, ফুলবাড়ি, রাজারহাট ও ভুরুঙ্গামারী উপজেলায় ১৪ হেক্টর জমিতে এর চাষ হচ্ছে। এ ছাড়া অন্য উপজেলায় বিক্ষিপ্ত ভাবে চাষ হচ্ছে।’

ফজলুল করিম ফারাজী/এসইউ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।
Exit mobile version