জেলে থেকেই ওসিকে বদলি করিয়েছেন! দাবি বহিষ্কৃত আ.লীগ নেতার

0
1


গুরুদাসপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম।

সিনিয়র করেসপনডেন্ট, নাটোর:

নাটোরের গুরুদাসপুরে সদ্য বহিষ্কৃত উপজেলা আওয়ামী লীগের এক নেতার দাবি, জেল থেকে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আবেদন পাঠিয়ে ওসির বদলি করিয়েছেন তিনি। এর আগে, আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর দেয়ার কথা বলে অর্থ আত্মসাতের মামলায় ১৬ দিন কারাভোগের পর জামিনে মুক্তি পান তিনি।

মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) কারামুক্তির পর রাত সাড়ে ৮টার দিকে নাজিরপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে নেতাকর্মীদের নিয়ে এক মতবিনিময় সভা করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম।

এ সময় গুরুদাসপুর থানার ওসি আব্দুল মতিনের উদ্দেশে তিনি বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আজ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত। আজকে আওয়ামী লীগের স্ট্যান্ডিং সেক্রেটারি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হাজতে যাবে কেন? মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আমি জেলে বসে আবেদন পাঠিয়েছিলাম। আবেদন পাঠানোয় আমি জেলে থাকা অবস্থায়ই সে শাস্তি পেয়েছে, তার বদলি হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, গুরুদাসপুর থানার ওসি উপজেলা জুড়ে জামায়াত-বিএনপির এজেন্ডা বাস্তবায়নে কাজ করেছে। ওসি সাহেব আমাকে ব্যক্তিগতভাবে শত্রুতার তালিকায় নিয়ে আমাকে ও আমার পরিবারকে হেয় প্রতিপন্ন করতে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন মানুষকে আমার নামে মিথ্যা মামলা করার জন্য প্ররোচনা দিয়েছে।

জানা গেছে, এ মতবিনিময় সভা চলাকালে ফেসবুকে লাইভ করেন সেখানে উপস্থিত অনেকেই। এ সুবাদে ওসিকে উদ্দেশ্য করে বলা কথাগুলো মুহূর্তেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

এ ব্যাপারে নজরুল ইসলামের মতামত জানতে বার বার তার মোবাইলে কল দিলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।

এ প্রসঙ্গে গুরুদাসপুর থানার ওসি আব্দুল মতিন জানান, নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর দেয়ার কথা বলে অর্থ আত্মসাতের ৫টি মামলা ও একটি নিয়োগ জালিয়াতির মামলা রয়েছে। গত ২ এপ্রিল আশ্রয়ণ প্রকল্পের অর্থ আত্মসাতের একটি মামলায় আদালতে হাজিরা দিতে গেলে বিজ্ঞ আদালত তাকে জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করেন। একই দিন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদ থেকে তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়।

ওসি মতিন আরও জানান, নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ হিসাবে নাটোর ওয়ার হেডকোয়ার্টার্সে আমাকে বদলি করা হয়েছে। এখন কেউ যদি আমাকে উদ্দেশ্য করে আক্রোশমুলক কথাবার্তা বলে তাহলে এক্ষেত্রে আমার কিছুই করাই নাই।

এ প্রসঙ্গে নাজিরপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান উজ্জ্বল বলেন, জেল থেকে বের হয়ে রাতে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে নেতাকর্মীদের নিয়ে নজরুল ইসলাম মতবিনিময় সভা করেছে। সেখানে আমিও উপস্থিত ছিলাম।

বহিস্কৃত হবার পরও নেতাকর্মীদের নিয়ে মতবিনিময় সভা হয় কীভাবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, আমরা তার পদে পুর্নবহালের জন্য জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল কুদ্দুসের কাছে যাবো। এ বহিস্কার আমরা মানি না।

গুরুদাসপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আঃ মতিন জানান, বহিস্কৃত নজরুল ইসলাম দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে সভা করেছে। সেখানে ওসিকে নিয়ে ধৃষ্টতাপূর্ণ বক্তব্য রেখেছে। এ বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়ে দলের হাইকমান্ডকে অবহিত করেছি।

/এসএইচ