পদ্মাসেতু কেবল বাংলাদেশ নয়, এই অঞ্চলের ‘গেইম চেঞ্জার’ হবে বলে মনে করছেন ঢাকায় নিযুক্ত বিদেশি কূটনীতিকরা। এতে করে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির পাশাপাশি আঞ্চলিক ব্যবসা-বাণিজ্য আর কানেকটিভিটি আরও ত্বরান্বিত হবে বলে মনে করেন তারা। কূটনীতিকদের দৃষ্টিতে বহুল আলোচিত এই সেতু নির্মাণের ঘটনা অবিস্মরণীয় অর্জন।
৩০ হাজার কোটি টাকার বেশি ব্যয়ে তৈরি এই সেতু দ্রুতই বাংলাদেশের আইকন অবকাঠামোতে পরিণত হবে বলেও উল্লেখ করছেন তারা।
রাশিয়ার ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত একাতেরিনা সেমোনোভা বলেন, এই অবকাঠামো বাংলাদেশের জন্য মাইলফলক। এটি হবে গেম চেঞ্জার। আঞ্চলিক বাণিজ্য, যোগাযোগ, কর্মসংস্থান, পর্যটন খাতে পদ্মাসেতুর সুবিধা পাবে বাংলাদেশ।
ঢাকায় জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি বলেন, এই অবকাঠামো বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বড় আত্মবিশ্বাস তৈরি করেছে।
বিশ্বব্যাংক পদ্মাসেতুতে অর্থায়ন থেকে সরে যাওয়ায় বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় এই প্রকল্প চালুর আগে থেকেই আলোচনায়। ফলে এর দিকে নজর ছিল বিদেশি রাষ্ট্র আর উন্নয়ন সহযোগীদেরও। নিজস্ব অর্থায়নে সেতু নির্মাণ করে রীতিমতো তাক লাগিয়েছে বাংলাদেশ।
সেতু চালুর পর রাজধানী ঢাকার সাথে অবিশ্বাস্য রকম সহজ হবে দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যোগাযোগ। ত্বরান্বিত হবে পণ্য পরিবহন থেকে শুরু করে ব্যবসায়িক নানা কর্মকাণ্ড। সাতাশ দেশের জোট ইউরোপীয় ইউনিয়ন বলছে, এর ফলে বাড়বে কর্মসংস্থান। আরও গতিশীল হবে বাংলাদেশের অর্থনীতি, যার প্রভাব পড়বে পুরো অঞ্চলেই।
পদ্মাসেতুর রক্ষণাবেক্ষণ ও টোল ব্যবস্থাপনার কাজ করবে দক্ষিণ কোরিয়ার কোম্পানি কোরিয়ান এক্সপ্রেসওয়ে করপোরেশন আর চীনের মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন। রাষ্ট্রদূতরা বলছেন, গুরুত্বপূর্ণ এই স্থাপনা কেবল সেতুই নয়, এ দেশের মানুষের মর্যাদার প্রতীকও বটে।
ঢাকায় কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত ল জ্যাং কিউন বলেন, ইতিহাস তৈরির এই প্রকল্পে অংশীদার হতে পেরে কোরিয়া বেশ খুশি।
বিশ্বের অন্যতম খরস্রোতা নদীর বুকে এই সেতু নির্মাণ বিরাট চ্যালেঞ্জ ছিল প্রকৌশলীদের জন্য। তাই ইঞ্জিনিয়ারিং বিদ্যায়ও এই সেতু সাফল্যের উদাহরণ হয়ে থাকবে বলে মনে করেন বিদেশি কূটনীতিকরা।
/এমএন