বঙ্গোপসাগরে চোখ রাঙাচ্ছে ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’। এই ঝড়ের আতঙ্কে কাঁপছে পশ্চিমবঙ্গ-উড়িষ্যা। এরই মধ্যে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে ‘দানা’ ও ক্রমেই স্থলভাগের দিকে এগোচ্ছে দানা। এরই মধ্যে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলার জন্য সব প্রস্তুতি আগে থেকেই নিয়ে রেখেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার।
প্রতি মুহূর্তে ‘দানা’র উপর সতর্ক নজর রাখছে রাজ্য সরকার। বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) রাজ্য মন্ত্রিসভায় বৈঠক করেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী।
বৈঠক শেষে মমতা জানান, রাতভর পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সচিবালয় ‘নবান্ন’ থেকেই ঘূর্ণিঝড় দানা মনিটরিং করবেন তিনি। ২৪ ঘণ্টার জন্য চালু থাকবে হেল্পলাইন নম্বর।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সবচেয়ে দামী হলো মানুষের জীবন। কেউ ভয় পাবেন না, তবে সর্তক থাকবেন। এটা মানুষের জীবন বাঁচানোর লড়াই।
দামোদর ভ্যালি করপোরেশন (ডিভিসি) আবার ২৪ হাজার কিউসেক পানি ছাড়ার অভিযোগ করে মমতা বলেন, কিছুদিন আগেই আমরা একটি বন্যা সামাল দিয়েছি। ডিভিসি বুধবার আবার ২৪ হাজার কিউসেক পানি ছেড়েছে। ঝাড়খন্ডে বৃষ্টি হলে আবার পানি ছাড়বে। বাংলা যেন ওদের পানি হজম করার একটি জায়গা হয়ে গেছে।
উপকূলীয় অঞ্চলে বেড়াতে যাওয়া পর্যটকদের উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, পুলিশ যে এলাকাগুলো খালি করে দেওয়ার অনুরোধ করছে, সেগুলোকে মান্যতা দেওয়ার অনুরোধ করছি। সমুদ্রের কাছে ভ্রমণ থেকে এই সময় বিরত থাকাই ভালো। এছাড়া মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে না যাওয়ার অনুরোধ করছি।
তিনি বলেন, গুজবে, কুৎসায়, প্ররোচনায় কান দেবেন না। অনেকে বলছে, ঘূর্ণিঝড়টি উড়িষ্যার উপর পড়লেও বাংলায় সেভাবে কিছু হবে না। কিন্তু আমি বলছি, বাংলাতেও যথেষ্ট প্রভাব পড়তে চলেছে। ল্যান্ডফল কখন হবে, তা নির্দিষ্ট করে জানা যায়নি।
যেকোনো সময় দুর্যোগ পরিস্থিতির জন্য কর্মকর্তাদের প্রস্তুত থাকার বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী। ভোর ৪টার সময় যদি ল্যান্ডফল হয়, তার জন্য তৈরি থাকতে বলেছেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, দুর্যোগের আশঙ্কা রয়েছে এমন জায়গাগুলো থেকে ৩ লাখ ৫৬ হাজার ৯৪১ জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে তাদের মধ্যে সবাই এখনো নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেয়নি। এখন পর্যন্ত ১ লাখ ৫৯ হাজার ৮৩৭ জন নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন। দুর্যোগ মোকাবিলায় ৮৫১টি ক্যাম্প চালানো হচ্ছে। বিভিন্ন ত্রান শিবিরে ৫৮৩ জন আশ্রয় নিয়েছে।
আরও বেশি সংখ্যক মানুষ নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে আসবেন বলে জানিয়েছেন মমতা ব্যানার্জী। ‘দানা’র দাপটে ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব মেদিনীপুর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনাসহ আশেপাশের জেলাগুলোতে ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা বেশি করা হচ্ছে। প্রভাব পড়তে পারে কলকাতাতেও।
ডিডি/এসএএইচ