ফয়সাল মাহমুদ:
অনিশ্চয়তা যেন পিছু ছাড়ছে না পূর্বাচল এক্সপ্রেসওয়ের। শুরু থেকে সমন্বয়ের কথা বলা হলেও এমআরটি লাইন ওয়ান প্রকল্পের কাজ শুরুর পরই শোনা গেলো ভিন্ন সুর। সড়কের ক্ষতির শঙ্কায় আপত্তি জানায় এক্সপ্রেসওয়ে কর্তৃপক্ষ। এলিভেটেড নয়, মাটির নিচ দিয়ে নেয়ার দাবি মেট্রোরেলের পূর্বাচল অংশ। এজন্য সরকারের উচ্চপর্যায়েও প্রস্তাব পাঠিয়েছে তারা। তবে এতেও সমস্যার প্রকৃত সমাধান দেখছেন না বিশ্লেষকরা।
আগামী সেপ্টেম্বরে উদ্বোধনের কথা ১২ কিলোমিটার দীর্ঘ পূর্বাচল এক্সপ্রেসওয়ের। কাজও চলছে দ্রুতগতিতে। ইতিমধ্যে প্রকল্পের ৯৭ শতাংশ কাজই শেষ। কিন্তু বিপত্তি বাধে ফেব্রুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রীর এমআরটি লাইন ওয়ানের কাজের উদ্বোধনের পরই। কারণ এমআরটি লাইন ওয়ানের একটি অংশ যাবে পূর্বাচল এক্সপ্রেসওয়ের ঠিক মাঝ বরাবর। এতে ১৪ হাজার হাজার কোটি টাকার সড়কটির বড় একটি অংশ ভাঙতে হবে।
বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর অংশ ভূগর্ভস্থ হলেও পিতলগঞ্জ থেকে কুড়িল পর্যন্ত মেট্রোরেল হবে উড়াল পথে। আর এতেই আপত্তি পূর্বাচল এক্সপ্রেসওয়ে কর্তৃপক্ষের। এর যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। সড়কের ক্ষতি এড়াতে এ অংশটিও মাটির নিচ দিয়ে নেয়ার দাবি করেছেন তারা।
সম্প্রসারিত পূর্বাচল এক্সপ্রেসওয়ের প্রকল্প পরিচালক এম এম এহসান জামিল বলেন, হযরত শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে কুড়িল ও প্রগতি স্মরণি হয়ে কমলাপুর পুরোটা আন্ডারগ্রাউন্ড। শুধুমাত্র কুড়িল থেকে পূর্বাচল পর্যন্ত ওভার হেডেড হওয়ার কোনো যৌক্তিকতাই দেখি না। এটিও আন্ডারগ্রাউন্ড হলে কোনো ক্ষতিই হতো না। বিষয়টি সরকারের উচ্চপর্যায়ে আমরা জানিয়েছি।
যদিও এমআরটি কর্তৃপক্ষ বলছে, শুরু থেকেই সমন্বয় করে কাজ চলছে। এজন্য এক্সপ্রেসওয়ের মাঝ বরাবর ৪ মিটার প্রশস্ত মিডিয়ানও রাখা হয়েছে।
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এবিএম আমিন উল্যাহ নুরী বলেন, শুরু থেকেই সমন্বয় করে কাজ চলছে। তবে যদি ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে সেটি আমরা বিবেচনা করবো। তবে সেটি সময় সাপেক্ষ। এখনও আমরা বলতে পারছি না কী পরিমাণ ক্ষতি হবে।
পূর্বাচল এক্সপ্রেসওয়েতে এমন ৫টি আন্ডারপাস রয়েছে। যার প্রত্যেকটির দৈর্ঘ্য ৪৫০ থেকে ৫৫০ মিটার।এমআরটি কর্তৃপক্ষ বারবার সমন্বয়ের কথা বললেও এতো দীর্ঘ এসব কংক্রিটের স্থাপনা না ভেঙে, কীভাবে মেট্রো রেলের স্প্যান বাসানো হবে, সেটিই এখন দেখার বিষয়।
যদিও আধা কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের আন্ডারপাস না ভেঙে মেট্রোরেলের স্প্যান বসানোর কোনো সম্ভাবনাই দেখছেন না যোগাযোগ বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, সমন্বিত পরিকল্পনার অভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সামগ্রিক উন্নয়ন।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শামসুল হক বলেন, মেট্রোর মতো এমন মেগা প্রজেক্ট করতে গিয়ে কোনো কিছু ভাঙা একটা খারাপ দৃষ্টান্ত হবে। এর ফলে গোটা এক্সপ্রেসওয়ের ক্যারেকটারই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
এসজেড/