Site icon Amra Moulvibazari

বদ্ধ ঘরে লাশ পচে গেছে বৃদ্ধের, জানতেন না পরিবারের সদস্যরা

বদ্ধ ঘরে লাশ পচে গেছে বৃদ্ধের, জানতেন না পরিবারের সদস্যরা


মৃত হাশেম গাজী (৫৫)।

স্টাফ করেসপনডেন্ট, যশোর:

যশোরের চৌগাছায় নিজ ঘর থেকে হাশেম গাজী (৫৫) নামে এক বৃদ্ধের পচা লাশ উদ্ধার করে দাফন করেছে তার পরিবার। পরিবারের সদস্যদের ধারণা, আনুমানিক তিনদিন আগে (২ মে, মঙ্গলবার রাতে) তিনি স্ট্রোক করে মারা গেছেন। তবে বাড়িতে তিনি একা থাকায় তার মৃত্যুর বিষয়টি কেউ বুঝতে পারেননি।

বৃহস্পতিবার (৪ মে) দুপুরে লাশটি উদ্ধার করে আসর নামাজের পর জানাজা শেষে স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়। দুর্গন্ধময় লাশ হওয়ায় প্রতিবেশিরা ধোয়াতেও আসেননি বলে জানিয়েছেন মৃতের পরিবারের সদস্যরা। শেষে গ্রামের মসজিদের মুয়াজ্জিন ও মৃতের স্ত্রীর ভাই স্বজনদের নিয়ে দূর থেকে পানি ছিটিয়ে লাশটি গোসল দেন। কাফন পরানোর অবস্থা না থাকায় কালো পলিথিনে মুড়ে লাশটি দাফন করা হয় বলে জানা গেছে।

যমুনা টেলিভিশনের সবশেষ আপডেট পেতে Google News ফিড Follow করুন।

মৃতের এক প্রতিবেশী বলেন, বেলা ১০টা থেকে ১১টার দিকে মৃতের কয়েকটি ছাগলের চিৎকার-চেঁচামেটি শুনে তাদের উঠোনে এসে দেখি বাড়ির কলাপসিবল গেটে ভেতর থেকে তালা মারা। ভেতরে ছাগল চেঁচামেচি করলেও উনার (মৃত হাশেম গাজী) কোনো সাড়া-শব্দ ছিল না। ডাকাডাকি করেও কোনো সাড়া-শব্দ না পেয়ে ওনার ছোট মেয়ে ফাতেমার বাড়িতে খবর দিই।

মৃত বৃদ্ধের ছোট মেয়ে ফাতেমা বলেন, আমি মঙ্গলবার (২ মে) দুপুরে এসে বাবাকে রান্না করে দিয়ে যাই। এরপর আজ বেলা ১১টার দিকে এসে দেখি বাড়ির কলাপসিবল গেট ভেতর থেকে বন্ধ। আব্বার কোনো সাড়াশব্দ নেই। এরপর দরজা ভেঙে দেখি, আব্বা একপাশে হাতের ওপর কাত হয়ে শুয়ে আছেন। গায়ে হাত দিয়ে ডেকে দেখি তিনি মারা গেছেন। গন্ধ ছড়াচ্ছে। এরপর আমার চিৎকারে লোকজন আসেন।

বৃদ্ধের স্ত্রী কল্পনা বেগম বলেন, আমি গত রোববার (৩০ এপ্রিল) বাবার বাড়িতে ধান গোছাতে যাই। আমার ছোট ছেলেও আমার সাথে ছিলো। গত মঙ্গলবার (২ মে) রাতে মোবাইলে তার সাথে শেষ কথা হয়। আজকে আমার বেয়াইন (মেয়ে ফাতেমার শাশুড়ি) মোবাইল করে বলেন, ফাতেমার আব্বা মারা গেছে। তারপর বাড়ি আসি।

তিনি আরও বলেন, চার ছেলে ও দুই মেয়ের মধ্যে বড় ছেলে ও দুই মেয়েকেই বিয়ে দিয়েছি। বড় তিন ছেলেই ঢাকায় থাকে। সবার ছোট ছেলেসহ তিনি ও তার স্বামী বাড়িতে থাকতেন। ছোট মেয়ে তাকে খাবার রান্না করে দিয়ে যেতো।

এ প্রসঙ্গে ধুলিয়ানী ইউপি চেয়ারম্যান এসএম মোমিনুর রহমান বলেন, সংবাদ পেয়ে দুপুরে ওই বাড়িতে গিয়েছিলাম। লাশ থেকে দুর্গন্ধ বের হচ্ছিলো। তবে গোসল দিতে প্রতিবেশিরা এসেছিলো কিনা সেটা আমার জানা নেই।

লাশ দাফনের পর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দশপাকিয়া পুলিশ ফাঁড়ির ক্যাম্প ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক খোরশেদ আলম ঘটনাস্থলে যান। তিনি বলেন, বিষয়টি খোঁজ-খবর নিয়ে দেখছি।

/এসএইচ



Exit mobile version