Site icon Amra Moulvibazari

দ্বিতীয় ইনিংসের রানটা প্রথম ইনিংসে হলে খেলা অন্যরকম হতো: মিরাজ

দ্বিতীয় ইনিংসের রানটা প্রথম ইনিংসে হলে খেলা অন্যরকম হতো: মিরাজ


মাত্র ৩ রানের আক্ষেপ থেকেই গেলো মেহেদী হাসান মিরাজের। প্রোটিয়া পেসার কাগিসো রাবাদার অফস্টাম্পের বাইরের আউটসুইং ডেলিভারি স্লিপের ফাঁক দিয়ে গলাতে গিয়ে ক্যাচ হয়ে শতক হাতছাড়া হলো। সেঞ্চুরির এত কাছে এসেও তা ছুঁতে না পারার অনুভূতিটা কেমন? নিশ্চয়ই ভালো কিছু নয়।

৯৭ রানে আউট হয়ে মিরাজেরও খারাপ লেগেছে। তবে খারাপ লাগাটা শুধু মাত্র সেঞ্চুরি মিসের জন্যই নয়, লক্ষ্য ও আশা পূরণ না হওয়ায় বেশি আফসোস মিরাজের। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘ সেঞ্চুরি মিস হয়ে গেলে একটা ব্যাটারের খারাপ লাগে, অবশ্যই খারাপ লাগছে। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, সেঞ্চুরি করার চেয়ে যে প্ল্যান নিয়ে খেলছিলাম, সেটা এক্সিকিউট করতে পারলে ভালো লাগতো। সেঞ্চুরি নিয়ে চিন্তা করিনি। চিন্তা করছিলাম দলকে একটা অবস্থানে নিয়ে যাওয়া যায় কিনা।’

এই যে ব্যাটিং ব্যর্থতা, তার কারণ কী? মিরাজের ধারণা, ব্যাটারদের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় ভুল হয়েছে। তার কথা, ‘ডিসিশন মেকিংটা গুরুত্বপূর্ণ। হয়তো আমাদের কিছু জায়গায় অভাব আছে, এ কারণে হয়তো ব্যাটিংয়ে ফল্ট করছি। আমার কাছে মনে হয়, ওপরের দিকে জুটি গুরুত্বপূর্ণ। টপ অর্ডার থেকে ভালো শুরু পাওয়া যেতে পারতো, তাহলে পরের ব্যাটারদের জন্য সহজ হতো।’

পাকিস্তানের বিপক্ষে দুই টেস্ট জেতার উদাহরণ টেনে মিরাজ বলেন, ‘প্রথম টেস্টে টপ অর্ডার, মানে তিন চার নম্বর থেকে শুরু করে ভালো একটা স্টার্ট দিয়েছিল। ওপেনাররাও একটা ভালো শুরু দিয়েছে, তারাও ভালো খেলেছে। পরে যারা ছিল তাদের কাজটা সহজ হয়ে গিয়েছিল।’

মিরাজের অনুভব, টেস্টে পাঁচ থেকে ছয় নম্বর ব্যাটারদের যদি নতুন বল খেলতে হয়, মানে টপ অর্ডার যদি বলের ঔজ্জ্বল্য থাকতেই আউট হয়ে যায়, তাহলে ৫ ও ৬ নম্বরে নামা ব্যাটারদের তা মোকাবিলা করা কঠিন।

মিরাজ মনে করেন, এ টেস্টে টস জেতা থেকে শুরু করে সবই বাংলাদেশের অনুকূলে ছিল। কিন্তু তারা প্রথম ইনিংসে বেশি বাজে ব্যাটিং করায় ম্যাচ হাতছাড়া হয়ে গেছে। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ মাত্র ১০৭ রানে অলআউট হয়ে যায়, দ্বিতীয় ইনিংসে ৩০৭ করলেও আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। ৭ উইকেটের জয় পায় প্রোটিয়ারা।

টাইগার অলরাউন্ডার বলেন, ‘আমাদের দিকেই ছিল সবকিছু ছিল। আমরা টস জিতে ব্যাট করেছি। আমরা চেয়েছিলাম ব্যাট করতে। কারণ মিরপুরে চতুর্থ দিনে ব্যাট করাটা কঠিন। আমরা ওভাবেই প্রস্তুতি নিয়েছিলাম।’

মিরাজ আরও মনে করেন, ‘দ্বিতীয় ইনিংসের রানটা প্রথম ইনিংসে হলে খেলা অন্যরকম হতো। প্রথম ইনিংসেই ব্যাকফুটে চলে গিয়েছি। দুই সেশনের আগে, ১০৬ রানে অলআউট হয়ে গিয়েছি। টেস্ট ক্রিকেটে অবশ্যই প্রথম ইনিংসের রানটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।’

বাংলাদেশের আসল দুর্বলতা কোথায়? শুধু কি ব্যাটিং? নাকি লক্ষ্য-পরিকল্পনা ও বাস্তব প্রয়োগটা ঠিকমত হচ্ছে না? এ প্রশ্নের উত্তর দিতে এসে মিরাজ প্রথমেই বলে ওঠেন, ‘ভালো ক্রিকেট খেললে এত প্রশ্ন আসতো না, আমাদের ব্যর্থতা। আমরা দল হিসেবে খেলতে পারিনি। এক দুইজন ভালো করলে দলীয় ফলাফল পাওয়া যায় না। পাকিস্তানে আমরা ভালো ক্রিকেট খেলেছি। হয়তো আমাদের কিছু কিছু জায়গায় অভাব ছিল। তারপরও আমরা জিতেছি। কিন্তু আপনি যেটা বললেন যে, আমাদের অনেক উন্নতি করার জায়গা আছে। ব্যাটারদের আরও বেশি দায়িত্ব নিতে হবে। টেস্ট ক্রিকেটে আমরা বোর্ডে রান না দিতে পারলে বোলারদের কাজটা কঠিন হয়ে যায়। আমাদের বোলাররা খুবই ভালো বল করেছে।’

এ বছর তিনি ৮ নম্বরে নেমে দারুণ খেলেছেন। তার ব্যাট থেকে এবার যে ৪টি ‘বিগ ফিফটি’ এসেছে, তার ৩ টিই আট নম্বরে। আর আজকের ৯৭ রানের ইনিংসটি সাতে খেলে। এত নিচে নেমেও রান করছেন। তাই আগামীতে ওপরের দিকে ব্যাটিং করার আগ্রহ আছে কি?

সংবাদ সম্মেলনে অমন প্রশ্নর মুখোমুখি হয়ে মিরাজ বললেন, ‘ওপরের দিকে ব্যাট করতে পারি কি না, এটা আসলে ম্যানেজমেন্টের সিদ্ধান্ত। যারা দল নির্বাচন করবে, তারা দলের ভালোর জন্য সিদ্ধান্ত নেবে।’

এআরবি/এমএমআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।
Exit mobile version