Site icon Amra Moulvibazari

কেনো ইউক্রেনে কিনঝাল ব্যবহার করলো মস্কো?

কেনো ইউক্রেনে কিনঝাল ব্যবহার করলো মস্কো?


ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত ছবি।

ইউক্রেনে শব্দের চেয়ে পাঁচগুণ বেশি গতির ‘হাইপারসনিক মিসাইল- কিনঝাল’ ছুড়েছে রাশিয়া। শুধু এটিই নয়, বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) দেশটির গুরুত্বপূর্ণ ১০টি অঞ্চলে অন্তত ৮১টি মিসাইল ও ড্রোন হামলা চালায় রুশ বাহিনী। এ সাঁড়াশি হামলায় এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১১ জন, আহত ২০ জনের বেশি। মস্কোর দাবি, গত কয়েক মাসের মধ্যে এটিই তাদের সবচেয়ে সফল অভিযান। আর ইউক্রেনের বলছে, এর মাধ্যমে যুদ্ধ পরিস্থিতিকে আরও উস্কে দিলো ক্রেমলিন। খবর সিএনএনের।

বৃহস্পতিবার ইউক্রেনের ওডেসা-নিপ্রো-খারকিভ-জাপোরিঝিয়াসহ কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ ১০টি অঞ্চলে একযোগে হামলা চালায় রুশ বাহিনী। ব্যাপকতা নয়, বরং অভিযানে ব্যবহৃত শক্তিশালী সমরাস্ত্রই এখন আলোচনার তুঙ্গে।

মস্কো বলছে, বৃহস্পতিবারের অভিযানে ব্যবহৃত হয় হাইপারসনিক মিসাইল কিনঝাল। যা এক বছর আগে, যুদ্ধের একেবারে শুরুর দিকে সবশেষ ব্যবহৃত হয়েছিলে। শব্দের তুলনায় পাঁচগুণ বেশি গতিসম্পন্ন বলে নিখুঁতভাবে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ফাঁকি দিতে সক্ষম এটি।

রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইগোর কোনাশেনকভ এ প্রসঙ্গে বলেন, ইউক্রেনীয় প্রশাসনকে ব্যাপক অভিযানের মাধ্যমে মোক্ষম জবাব দিয়েছে রুশ সেনাবাহিনী। জল-স্থল ও আকাশ থেকে নিক্ষেপযোগ্য দূরপাল্লার অস্ত্র ব্যবহৃত হয়েছে একযোগে। ইউক্রেনের সামরিক অবকাঠামো, শিল্প প্রতিষ্ঠান এবং বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা, গোলাবারুদ উৎপাদনের কারখানা, বিদেশি অস্ত্রের মজুদ এবং সমরাস্ত্র সারাইয়ের প্রতিষ্ঠান।

হঠাৎ এতো বড় হামলার জন্য প্রস্তুত ছিলো না ইউক্রেনীয় সেনাবহরও। তারা স্বীকার করে নিয়েছে যে, সম্প্রতি এতোবড় অভিযান আর হয়নি। প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির বক্তব্য- এ হামলার মাধ্যমে আগুনে ঘি ঢাললো ক্রেমলিন।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলদেমির জেলেনস্কি এক বিবৃতিতে বলেন, বেসামরিক ইউক্রেনীয়দের ওপর হামলা চালিয়ে যুদ্ধ পরিস্থিতিকে আরও উস্কে দিলো সন্ত্রাসী রাষ্ট্র রাশিয়া। বেশিরভাগ এলাকা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায়; প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় রাত কাটাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। ভুগছেন তীব্র পানির কষ্টে। সবচেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতি জাপোরিঝিয়া পরমাণু বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের।

জানা গেছে, নতুন রুশ অভিযানে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন কিয়েভের লাখ-লাখ গ্রাহক। সবচেয়ে বড় কথা- জাপোরিঝিয়া পরমাণু বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র আবারও হয়ে অচল পড়েছে । এতে, উদ্বিগ্ন আন্তর্জাতিক আনবিক শক্তি সংস্থা।

নতুন রুশ হামলা প্রসঙ্গে আইএইএ এর মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রসি বলেন, রাশিয়ার নতুন হামলায় সাড়ে ৭শ’ কিলোভোল্ট বিদ্যুতের লাইন বিচ্ছিন্ন হয়েছে জাপোরিঝিয়ার। চলমান যুদ্ধে এই নিয়ে ষষ্ঠবারের মতো কেন্দ্রটির বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ হলো। এখন জরুরি ডিজেলের মাধ্যমে চলছে উৎপাদন কার্যক্রম। এটা ইউরোপের সর্ববৃহৎ পরমাণু বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র। অথচ, আমরা সবাই উদাসীন।

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবারই যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থার পরিচালক জানিয়েছিলেন, আরও একবছর যুদ্ধ টানতে চায় রাশিয়া। কিন্তু, বড় পরিসরের হামলা চালানোর সক্ষমতা তাদের নেই। ধারণা করা হচ্ছে, এ সমালোচনার দাঁতভাঙ্গা জবাব দিতেই ফের বড় অভিযানে গেছে ক্রেমলিন।

/এসএইচ



Exit mobile version