তাজনুর ইসলাম:
বিশ্বে প্রতি বছর যত মানুষ যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয়, তার প্রায় ১০ শতাংশই শিশু। আক্রান্তের একই হার বাংলাদেশেও। যদিও দেশে শিশুর যক্ষা শনাক্তের হার মাত্র ৪ ভাগ। সাধারণ অনেক অসুখের সাথে উপসর্গ মিলে যায় বলে শিশুরও যক্ষা হতে পারে এমনটা সন্দেহই করেন না বেশিরভাগ অভিভাবক। তাই ঠিকঠাক সময়ে হয় না রোগ নির্ণয় আর চিকিৎসা। তবে ঠিক সময়ে রোগ নির্ণয় করা গেলে অল্পতেই নিরাময় করা সম্ভব।
জন্মের ১৪ মাসের মাথায় শিশু লিজা আক্রান্ত হয় জ্বর-সর্দি-কাশিতে। ওষুধ চলছিল, কিন্তু কিছুতেই সারছিল না। এভাবে মাসখানেক কাটার পর হাসপাতালে ভর্তি হলে পরীক্ষায় ধরা পড়ে লিজার যক্ষ্মা। অথচ পুরোটা সময় সাধারণ জ্বর-সর্দি ভেবে ঘরের পাশের ফার্মেসি থেকে ওষুধ খইয়ে গেছে লিজার পরিবার। লিজার যক্ষ্মা ধরা পড়ার পর একই সাথে আক্রান্ত হয় তার বড় বোন রোজাও।
শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক ডা. কামরুজ্জামান কামরুল বলেন, সর্দি-জ্বরসহ নানা উপসর্গ নিয়ে প্রতিদিনই হাসপাতালে যারা ভিড় করেন, তাদের বেশিরভাগই আসেন দেরিতে। টানা দুই সপ্তাহের বেশি জ্বর-সর্দি বা কাশি থাকা মানে যক্ষ্মার ঝুঁকি আছে। তেমন হলে সাথে সাথেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
শিশুদেহে এ জীবাণুর উপস্থিতি পাওয়া যায় বড়দের চেয়ে কম। তাই দরকার হয় আরও কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার। তাছাড়া ইদানিং অত্যাধুনিক জিন এক্সপার্ট মেশিন দিয়েও নির্ণয় করা যাচ্ছে যক্ষ্মার উপস্থিতি। যদিও এ সুবিধা এখনও সারা দেশে নেই। এছাড়া ফুসফুসের বাইরে সংক্রমণ হলে বায়োপসি, এফ.এন.এ.সি’র মতো ব্যয়বহুল পরীক্ষার সামর্থ্যও নেই অনেক অভিভাবকের।
অথচ ঠিক সময় রোগটা ধরতে পারলে এর চিকিৎসা এদেশেই সম্ভব এবং তা অনেকেটাই সহজ। দেরি হয়ে গেলে শিশুদেহের জন্য নিরাময় করা কষ্টসাধ্য। চিকিৎসকদের পরামর্শ, বাতাস চলাচল আছে এমন জায়গায় রাখতে হবে শিশুদের। সাথে দিতে হবে সুষম খাবার।
এসজেড/