Site icon Amra Moulvibazari

হবিগঞ্জ এ টাকার বিনিময়ে মাদ্রাসার শিক্ষকের পদ বিক্রি করছেন সুপারিন্টেন্ডেন্ট!

হবিগঞ্জ এ টাকার বিনিময়ে মাদ্রাসার শিক্ষকের পদ বিক্রি করছেন সুপারিন্টেন্ডেন্ট!

স্টাফ রিপোর্টারঃ
সদ্য এম পি ভুক্ত হওয়া হবিগঞ্জ সদর থানার ভিতরে অবস্থিত নূরে মোহাম্মদীয়া সুন্নীয়া দাখিল মাদ্রাসা নিয়ে রমরমা নিয়োগ বানিজ্য নিয়ে মেতে উঠেছেন অত্র প্রতিষ্ঠানের সভাপতি মোহাম্মদ আলী মুন্সি, সহ সভাপতি রমীজ আলীর ছেলে ছুরত আলী,কমিটিতে থাকা এটিও মকসুদ আলী (সাবেক জেলা শিক্ষা অফিসার)ফরিদ মিয়া (১০ নং লস্কর পুর ইউনিয়ন বিএনপি দলের সভাপতি)
মোঃ নুরুল হক সহ অত্র মাদ্রাসার সুপার বদরুজ রেজা সেলিম।

২০০৪ সালে অত্র প্রতিষ্ঠান চলাকালীন সময়ে সভাপতি ছিলেন মরহুম ফরিদ মিয়া (সাবেক চেয়ারম্যান)।প্রতিষ্ঠাকালীন অবস্থায় নিয়োগ প্রাপ্ত হন সুপার হিসাবে বদরুজ রেজা সেলিম,সহ-সুপার আহমদ তআলী মীর,মস্তোফা কামাল (সহকারী মৌলভী),মোঃ সালেক আহমেদ (সহকারী শিক্ষক), মোঃ মকছুদ আলি (সহকারী শিক্ষক),ইয়াছিন হুজুর (ইবতেদায়ী প্রধান), মুকিত হুজুর অফিস সহায়ক পদে মোছাঃ ছখিনা খাতুন,দপ্তরি হিসাবে আব্দুল কাইয়ুম,নাইট গার্ড পদ শুন্য থেকে যায়।

অত্র মাদ্রাসা মরহুম ফরিদ চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় সুনামের সহিত এগিয়ে যাচ্ছিল।তন্মধ্যে অত্র মাদ্রাসার সুপারের অনিয়ম ও দুর্নীতি ফরিদ চেয়ারম্যান এর চোখে ধরা পড়ায় সেলিমকে সাময়িকভাবে শাসানি হয় ও কড়া হুশিয়ার করা হয় যেন ভবিষ্যতে নিয়োগ কিংবা প্রতিষ্ঠান এর সম্মান চিন্তা করে নাক গলাতে।

বছর কয়েক পর নতুন সভাপতি বদল ও নতুন কমিটি গঠন হয়।সেই থেকে আবার শুরু হয় সেলিমের বিপক্ষে নানা অভিযোগ।সব কিছুই বদলে দিয়ে নতুন করে অত্র মাদ্রাসার খাতা পত্র,শিক্ষক শিক্ষিকা হাজিরা খাতা,শিক্ষক নিয়োগ, মাদ্রাসার সমস্ত ফাইল পত্র নতুন করে গোছানো হয়।আর এইসব কাজ অফিস সহায়ক এর মাধ্যমে করানো হত। সেলিমের সকল জ্বালিয়াতির ও মাদ্রাসার আয় ব্যায়ের হিসাবের এক মাত্র রাজ স্বাক্ষী অফিস সহায়ক মোছাঃছফিনা বেগম।

মাদ্রাসা এম পি ভুক্ত হওয়ার পর সরকারি বিধিমালা অনুসারে সকল নিয়োগের বৈধতা পত্র প্রথমে অনলাইনে সাবমিট করতে হয়।
সভাপতি ও কমিটির কাছে ৫ টি পদে নিয়োগ দেওয়ার বৈধ ক্ষমতা থাকে।
শর্ত সাপেক্ষে, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হতে হবে,পরীক্ষা হতে হবে,তারপর ভাইভা বোর্ড বসে যোগ্য প্রার্থী যাচাই করে নিয়োগ প্রদান করতে হয়।এই ক্ষমতার অপব্যবহার করে সম্পূর্ণ জালিয়াতি করে অত্র মাদ্রাসার সাবেক নিয়োগ প্রাপ্ত শিক্ষক ও কর্মচারী বাতিল দেখিয়ে নতুন করে ভূয়া নিয়োগের ও ডকুমেন্টস দেখিয়ে এম পি ভুক্ত হওয়া নুরে মোহাম্মদীয়া সুন্নীয়া দাখিল মাদ্রাসার কাগজ পত্র অনলাইনে সাবমিট করা হয়।

অনলাইনের কাগজ পত্রের সাবমিট এর লিস্ট দেখে বাদ পড়া শিক্ষক, শিক্ষিকা ও অফিস সহায়ক পদের নিয়োগ প্রাপ্তদের তালিকা নেই।
শুরু হল তল্লাশি। জমা হলো অভিযোগ পত্র।প্রতিষ্ঠান শুরুতে যাদের নিয়োগ দেখানো হয়েছিল তাদের নাম না থাকায় সব তথ্য বের হয়ে আসতে লাগলো।
বদলে গেলো পুরনো সব শিক্ষক শিক্ষিকা ও কর্মচারীর হজিরা খাতার প্রমাণ। নতুন করে বানানো হলো সমস্ত ডকুমেন্টস আর হাজিরা খাতা।টাকার বিনিময়ে পদ বিক্রি করা হয়েছে বলে দাবী সকলের। আসলেই তাই হয়েছে।

অফিস সহায়ক সহায়ক পদে নিয়োগ প্রাপ্ত ছফিনার স্থলে মোঃ রুহুল আমিন (জিলু) ২০১৫ সালের ভূয়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখিয়ে ছখিনাকে সেলিম ও অত্র মাদ্রসার সভাপতি সহ এটিও মকছুদ আলীর সকল জালিয়াতির রাজ স্বাক্ষী ভেবে পথের কাটা সরিয়ে ফেললেন। অথচ ছফিনা তখনও অফিস সহায়ক পদে বহাল ছিলেন। টাকার বিনিময়ে মোঃ কাউসার (জুনিয়র কারী),মোছাঃ রেফা বেগম (জুনিয়র মৌলভী),ছফিনাবেগম যাদেরকে কখনো মাদ্রাসায় হাজির হয়ে ক্লাস নিতে দেখেন নি।

এমতাবস্থায় মোছাঃছফিনা বেগম সকল জ্বালিয়াতি শিক্ষক নিয়োগ ও অফিস সহায়ক পদের নিয়োগ বিষয়টি সভাপতি, কমিটি ও সুপার সেলিমকে অবগত করেন।তাদের একটাই উত্তর অমুকের কাছে যাও তমুকের কাছে যাও আমাদের কিছুই করার নাই বলে মাস খানিক ছখিনা খাতুনকে তারা প্যারা দিয়েছে। অবশেষে কোনো কুল কিনারা না পেয়ে ও তাদের জ্বালিয়াতির বিপক্ষ্যে রুখে দাড়াতে সে পারল না।বৃথায় গেল তার ১৩/১৪ বছর বিনা বেতনে চাকুরীর করা।
অবশেষে কোনো পথ না পেয়ে সে আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আন্ডারে থাকা কর্তব্যরত সকল কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ পত্র দাখিল করলো। সে নূরে মোহাম্মদীয়া সুন্নীয়া দাখিল মাদ্রাসার অফিস সহায়ক পদে নিয়োজিত ও নিয়োগ প্রাপ্ত সকল ডকুমেন্টস নিয়ে।

২৯/০৬/২০ জেলা শিক্ষা অফিসার( ডি,ও)হবিগঞ্জ, জেলা প্রশাসক হবিগঞ্জ,উপজেলা চেয়ারম্যান হবিগঞ্জ বরাবর একই দিনে ৩ টি অভিযোগ পত্র জমা দেন।
তারপর ৩০/০৬/২০২০ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার হবিগঞ্জ,উপজেলা নির্বাহি কর্মর্কতা হবিগঞ্জ, উপপরিচালক (ডিডি) সিলেট শিক্ষা অধিদপ্তর বরাবর একই দিনে ৩ টি অভিযোগ দায়ের করেন।অপরদিকে আরেকটি চাঞ্চল্যকর তথ্যে জড়িত বদরুজ রেজা সেলিম।

২০০৪ সাল হতে নূরে মোহাম্মদীয়া সুন্নীয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার আবার অপরদিকে দিনারপুর আলিম মাদ্রাসার সহকারী মৌলভী হিসাবে এম পি ভুক্ত প্রতিস্টানে ৯ বছর যাবত বেতন পাচ্ছেন।তাছাড়া আরো কয়েকটি প্রতিষ্ঠান এর পরিচালক হিসাবে রমরমা শিক্ষা নিয়ে বানিজ্য করে আসছেন দীর্ঘ বছর যাবত। বাংলাদেশের সংবিধান মোতাবেক একজন ব্যক্তি শুধু একটি প্রতিষ্ঠানে জব করতে পারবে কিন্তু একাধিক প্রতিষ্ঠান এ সে কিভাবে হাজিরা দেয় ও বেতন নেয়।

ছফিনা বেগম হবিগঞ্জের ডিও রুহুল্লার সাথে সরাসরি দেখা করে সমস্ত জালিয়াতির তথ্য দেওয়ার পরও তিনি স্বজনপ্রীতি দেখিয়ে নূরে মোহাম্মদীয়া সুন্নীয়া দাখিল মাদ্রাসার ফাইল গুলা সিলেটে প্রেরণ করেন। কিন্তু সিলেট থেকে ফাইল গুলা এখনো ঢাকা যেতে পারলনা ভূয়া কাগজ পত্রের অভিযোগ পেয়ে তদন্তর কাজ শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে।এমতাবস্থায় সেলিম ও তার ওস্তাদ ফারুক তেতুল হুজুরের সমস্ত জ্বালিয়াতি রেকর্ড হাতে নাতে ধরা পড়ে কয়েকটি মাদ্রাসার নিয়োগ বানিজ্য বন্ধ করে দিয়েছে তদন্ত কমিটি।মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন পুরনে এগিয়ে আসতে দুর্নীতি মুক্ত বাংলাদেশ গড়তে হলে সবার আগে এইসব জ্বালিয়াতি বন্ধ করতে হবে।অত্র মাদ্রাসাকে জেলা প্রশাসকের আওতাধীন চাই।


আরো খবরঃ মাত্র দুইশ টাকা ধার না দেয়ায় একই পরিবারের ৪ জনকে হত্যা । Murder


আমাদের ফেইসবুক পেইজঃ আমরা মৌলভীবাজারি – Amra Moulvibazari

Exit mobile version