চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি:
৩২টি বাচ্চাসহ লোকালয়ে দেখা মিলেছে বিষাক্ত রাসেল ভাইপারের। সদর উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা ইউনিয়নের বালুগ্রাম এলাকার মুক্তার হোসেন চৌকিদারের পুকুরে এই বিষধর সাপের দেখা মেলে। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী চেষ্টার পর সাপগুলোকে মেরে ফেলা হয়েছে।
বরেন্দ্র অঞ্চলে এর বিচরণের কথা শোনা গেলেও বর্তমানে লোকালয়ের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে এসব বিষধর সাপ।
স্থানীয়রা জানান, সোমবার (১ মে) সকালে মুক্তার হোসেন পুকুরের পাশে প্রথমে একটি সাপ দেখতে পায়। পরে পুকুরের বিভিন্ন সরঞ্জামের স্তুপের নিচ থেকে একে একে ৩২টি বাচ্চাসহ মা রাসেল ভাইপার সাপটি দেখতে পাওয়া যায়। এ সময় স্থানীয়রা সবগুলো সাপ মেরে ফেলে।
পুকুর মালিক মুক্তার হোসেন বলেন, গত আট বছর ধরে এই পুকুরে মাছ চাষ করি। এর আগে এই জাতের সাপ দেখতে পায়নি। আজ সকালে হঠাৎ এতোগুলো সাপ একসাথে দেখতে পেয়ে ভীত হয়ে যায়। আমাদের নিরাপত্তার কথা ভেবে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় সাপগুলো মেরে ফেলা হয়েছে। এরপর গর্ত করে সে মৃত সাপগুলো
পুঁতে ফেলা হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আবু সাইদ বলেন, প্রায় তিন মাস আগে রাতের বেলা এই এলাকায় আম বাগান দিয়ে চলাচলের সময় একজনকে সাপে কামড় দেয়। পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর সে মারা যায়। আমাদের ধারণা তাকে রাসেল ভাইপার সাপেই কামড় দিয়েছিল। অত্যন্ত বিষধর সাপ হওয়ায় হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসার পরও তার মৃত্যু হয়।
বন অধিদফতরের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র সংরক্ষণ কর্মকর্তা তন্ময় আচার্য্য বলেন, বিষধর এই সাপটি সরাসরি বাচ্চা জন্ম দেয়। একবারে সর্বোচ্চ ৪০টি পর্যন্ত বাচ্চা জন্ম দিতে পারে এই সাপ। এই সাপে কামড়ালে আক্রান্ত ব্যক্তি চিকিৎসার সময় খুব কম পান। একসময় বিলুপ্ত হওয়া রাসেল ভাইপার সাপের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। পদ্মা নদীর অববাহিকা এবং বরেন্দ্র এলাকায় উঁচু-নিচু জমিতে এই সাপটির সবচেয়ে বেশি দেখা মিলছে। বন্যার সময় পদ্মা নদী দিয়ে ভারত থেকে এই সাপ আমাদের দেশে চলে আসছে।
সিভিল সার্জন ডা. এসএম মাহমুদুর রশিদ বলেন, যেসব এলাকায় সাপের কামড়ের আশঙ্কা আছে, সে সমস্ত এলাকায় মানুষকে সচেতন হয়ে চলাফেরা করতে হবে। বিশেষ করে সামনে বর্ষা মৌসুমে আরও সচেতন থাকতে হবে।
/এনএএস