ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় কার্যকর হলো অস্ত্রবিরতি। মঙ্গলবার (২ মে) রাতভর চলে পাল্টাপাল্টি রকেট-মিসাইল হামলা। পরে আন্তর্জাতিক মহলের প্রস্তাবে সায় দেয় ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এবং ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন- হামাস ও ইসলামিক জিহাদ। তবে ইহুদি কারাগারে বন্দি খাদের আদনানের মৃত্যুতে অব্যাহত ধর্মঘট-বিক্ষোভ। ৮৭ দিন অনশনের পর শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই স্বাধীনতাকামী। পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের উপযুক্ত জবাব চায়, ক্ষুব্ধ ফিলিস্তিনিরা। খবর আল জাজিরার।
ইহুদি নিরাপত্তা বাহিনীর দাবি, মঙ্গলবার রাতভর অন্তত ৩০টি রকেট ছোড়া হয়েছে ইসরায়েলি ভূখণ্ডে। অভিযোগ, গাজা উপত্যকা থেকেই সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো চালিয়েছে হামলা। যাতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেরত এলাকা। বিদেশিসহ কয়েকজন আহত হওয়ার তথ্যও জানায় তারা।
তবে ছেড়ে দেয়নি নেতানিয়াহু প্রশাসনও। গাজা উপত্যকায় হামাসের ঘাঁটি লক্ষ্য করে চালিয়েছে বিমান হামলা। পরিস্থিতি সামাল দিতে তড়িঘড়ি অস্ত্রবিরতির প্রস্তাব দেয় জাতিসংঘ-কাতার ও মিসর। যাতে সম্মতি প্রকাশ করে বিবদমান পক্ষগুলো। ভোররাত সাড়ে ৩টা নাগাদ কার্যকর হয় সিদ্ধান্ত।
অবশ্য, সাধারণ ধর্মঘট থেকে পিছু হটেনি পশ্চিম তীর ও গাজাবাসী। ইসরায়েলি কারাগারে ফিলিস্তিনি বন্দি খাদের আদনানের মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতে মরিয়া তারা। অভিযোগ, পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে তাদের।
এ নিয়ে ফিলিস্তিনের পপুলার রেজিস্ট্যান্স কমিটির মুখপাত্র মোহাম্মদ আল বারিম বলেন, খাদের আদনানকে পরিকল্পিত উপায়ে হত্যা করেছে জায়নবাদী সরকার। তাদের উদ্দেশ্যই ছিল অনশন ধর্মঘট চালিয়ে যাক স্বাধীনতাকামী এই হিরো। এর ফলে মুক্তি না দিয়েই ইসরায়েলি স্বার্থ হাসিল হবে। কিন্তু ফিলিস্তিনিরা যেকোনো মূল্যে প্রতিশোধ নেবে বলে জানান তিনি। বলেন, যতোই হামলা চালানো হোক, পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তুলবো আমরা।
এদিকে, টালমাটাল পরিস্থিতিতে মানবাধিকার সমুন্নত রাখতে উভয়পক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ভেদান্ত প্যাটেল বলেন, মানবাধিকারের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের গভীর শ্রদ্ধাবোধ রয়েছে। কারাবন্দি হলেও কারো সাথে অমানবিক আচরণ করা উচিত নয়। পাশাপাশি এটাও বলতে চাই, ইসলামিক জিহাদ একটি তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী সংগঠন। ইসরায়েলে রকেট হামলা চালিয়ে আবারও তারা সেটি প্রমাণ করলো তারা। তাদের আগ্রাসী আচরণের কারণেই ভূখণ্ডে ছড়াচ্ছে সহিংসতা।
এর আগে, মঙ্গলবার সকালে ইসরায়েলি হেফাজতে থাকা অবস্থায় মৃত্যু হয় ৪৫ বছরের খাদের আদনানের। প্রশাসনিক আটকাদেশের প্রতিবাদে টানা ৮৭ দিন ধরে অভুক্ত ছিলেন তিনি। কারা কর্তৃপক্ষের সাফাই, চিকিৎসা সেবা নিতেও অস্বীকৃতি জানান এই বন্দি। স্বাধীনতা আন্দোলনের সাথে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ১২ বার আটক হয়েছিলেন তিনি। তিন দফা পালন করেন অনশন।
এসজেড/