Site icon Amra Moulvibazari

রাস্তার মাঝে ঝগড়ার নাটক সাজিয়ে ছিনতাই, রাজধানীতে সক্রিয় ‘কাইজ্যা পার্টি’

রাস্তার মাঝে ঝগড়ার নাটক সাজিয়ে ছিনতাই, রাজধানীতে সক্রিয় ‘কাইজ্যা পার্টি’


সিসিটিভির ফুটেজ দেখে এ চক্রের দুই সদস্য সাইদুর রহমান ও মোর্শেদকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

আশিক মাহমুদ:

ধরা যাক, আপনি রিকশাযোগে মালামাল নিয়ে কোথাও যাচ্ছেন। হঠাৎ রিকশা থামালো চালক। সাথে সাথে কয়েকজন এসে ঝগড়া বাধিয়ে দিলো। এই ফাঁকে মালামালসহ লাপাত্তা রিকশাচালক। গল্প মনে হলেও রাজধানীতে সক্রিয় এমন কাইজ্যা পার্টি। যারা রাস্তার মাঝে কাইজ্যা লাগিয়ে লুটে নিচ্ছে সবকিছু। অভিনব এ প্রতারক চক্রের ২ সদস্যকে ইতোমধ্যে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

জানা গেছে, গত ২০ ফেব্রুয়ারি মিরপুর ১০ নম্বর এলাকায় এমন অভিনব প্রতারণার শিকার হন মহিউদ্দিন নামে এক ব্যক্তি। তার করা মাললা তদন্ত করতে মাঠে নামে পুলিশ। তাতেই পাওয়া যায় এ প্রতারক চক্রের সন্ধান।

ভুক্তভোগী মহিউদ্দিন জানান, কুরিয়ার সার্ভিস থেকে মেডিকেল যন্ত্রাংশ নিয়ে রিক্সায় উঠেন তিনি। এ সময় রিকশাচালক কোনো একজনের সাথে মোবাইলে কথা বলেন। পরে রওনা হয়ে কিছুদূর যেতেই হঠাৎ রিকশা নষ্ট হয়েছে বলে থেমে যান চালক।

তিনি আরও জানান, এ সময় তাকে একটি লোক এসে ধাক্কা দেয়। এতে তার সাথে ১৫-২০ সেকেন্ডের একটা কথা কাটাকাটিতে জড়িয়ে পড়েন ভুক্তভোগী মহিউদ্দিন। সাথে সাথে সেখানে আগে থেকেই ওঁৎ পেতে থাকা দুই তিন জন ইচ্ছাকৃতভাবে ঝগড়া লাগিয়ে দেয়। এ সুযোগে মালামালসহ রিকশা নিয়ে পালিয়ে যায় চালক।

এ ঘটনায় মামলা হলে তদন্তে নামে মিরপুর মডেল থানা পুলিশ। সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় রাজধানীর মোহাম্মদপুরে অভিযান চালিয়ে এ চক্রের সদস্য সাইদুর রহমান ও মোর্শেদকে গ্রেফতার করেন তারা।

তদন্তকারী কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চক্রটির মূল হোতা সাইদুর। তার সাথে আছে আরও কয়েকজন। বেশ কয়েক বছর ধরে এরা মাঝরাস্তায় ঝগড়ার নাটক সাজিকে লুটে নিয়েছে বহু মানুষের মূল্যবান জিনিসপত্র।

এ বিষয়ে মিরপুর মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন বলেন, ওই গ্রুপেরই এক ধরনের সদস্য আছে যাদের বলে হাঁটাওয়ালা। এদের কাজ যাত্রীকে ধাক্কা দিয়ে ঝগড়া লাগিয়ে দেয়া। রিকশাচালকের নাম মাদলীওয়ালা। সে ঝগড়ার সুযোগে মালামালসহ রিকশা নিয়ে পালিয়ে যায়। আরেকজন থাকে যাকে বলে পল্টিওয়ালা। যার কাজ ভুল রাস্তা দেখানো অর্থাৎ পল্টি মেরে দেয়া। ভুক্তভোগীকে ভুল রাস্তা দেখিয়ে বিভ্রান্ত করার ফাঁকে তারা সবাই দ্রুত নিরাপদ স্থানে পালিয়ে যায়।

পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানান, গোয়েন্দাদের চোখ ফাঁকি দিতে দিনকে দিন কৌশলী হচ্ছে অপরাধীরা। অভিনব এ প্রতারক চক্রের সাথে আরও কেউ জড়িত কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এছাড়া এমন প্রতারণা থেকে বাঁচতে সড়কে চলাচলের সময় সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন পুলিশ কর্তৃপক্ষ।

এএআর/



Exit mobile version