ঘরোয়া ক্রিকেটে পরীক্ষিত পারফরমার। ৪১-এর ওপর ব্যাটিং গড় জাকের আলীর। পারফর্ম করে দলে ঢোকা এই ব্যাটার নিজের সামর্থ্যের জানান দিলেন ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্টেই।
দলের বিপদের মুখে মেহেদী হাসান মিরাজকে নিয়ে গড়লেন লড়াকু এক জুটি। ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্টে তুলে নিলেন হাফসেঞ্চুরিও। ভীষণ ধৈর্যের পরীক্ষা দেওয়া জাকের ১০২ বলে করেন ফিফটি। ডেন পিটকে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে পঞ্চাশের ঘর ছুঁয়েছেন ডানহাতি এই ব্যাটার।
তবে ফিফটির পর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি জাকের। কেশভ মহারাজের ঘূর্ণিতে প্যাডে বল লেগে যায় তার, আম্পায়ার আঙুল তুলে দেন। রিভিউ নিয়েও কাজ হয়নি। ১১১ বলে ৭ বাউন্ডারিতে ৫৮ করে ফিরেছেন জাকের।
জাকেরের আউটে ভেঙেছে মিরাজের সঙ্গে ১৩৮ রানের প্রতিরোধগড়া জুটি। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বাংলাদেশের সংগ্রহ ৭ উইকেটে ২৫০ রান। এখন পর্যন্ত লিড ৪৮ রানের। মিরাজ অপরাজিত ৭২ রানে। নতুন ব্যাটার হিসেবে ক্রিজে এসেছেন নাইম হাসান।
১১২ রানে পড়ে গিয়েছিল ৬ উইকেট। ইনিংস হার এড়াতে তখনও দরকার ৯০ রান। সেই কঠিন মুহূর্তে দাঁড়িয়ে দুর্দান্ত এই জুটি গড়েন মেহেদী হাসান মিরাজ আর অভিষিক্ত জাকের আলী।
তৃতীয় দিনে মাহমুদুল হাসান জয় আর মুশফিকুর রহিম সকালটা শুরু করেছিলেন বেশ দেখেশুনে। প্রথম আধ ঘণ্টা কাটিয়েও দিয়েছিলেন তারা। এরপর কাগিসো রাবাদার এক ওভারে জোড়া শিকার দুজন।
৪০ রান করে জয় দিলেন প্রথম স্লিপে ক্যাচ, এক বল পর বোল্ড মুশফিকুর রহিম (৩৪)। এরপর লিটন দাস ক্রিজে এসে বরাবরের মতো দারুণ এক বাউন্ডারি হাঁকিয়ে বাজেভাবে আউট (৭)।
৩ উইকেটে ১০৫ থেকে ৬ উইকেটে ১১২ রানে পরিণত হয় বাংলাদেশ। ৭ রানের মধ্যে তিন স্বীকৃত ব্যাটারকে হারিয়ে ইনিংস পরাজয়ের শঙ্কাতেই পড়ে যায় বাংলাদেশ।
সেখান থেকে মেহেদী হাসান মিরাজ আর জাকের আলী দলকে টেনে তোলার দায়িত্ব কাঁধে নেন। সপ্তম উইকেটে এখন পর্যন্ত এই জুটি ৮৯ রান যোগ করেছে।
এর আগে ৩ উইকেটে ১০১ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিন শেষ করেছিল বাংলাদেশ । জয় ৩৮ আর মুশফিকুর রহিম ৩১ রান নিয়ে তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করেন। বাংলাদেশ পিছিয়ে ছিল ১০১ রানে।
২০২ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে দলীয় ৪ রানে দুটি উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ৭ বলে মাত্র ১ রান করে ফেরত যান ওপেনার সাদমান। এরপর ৩ বলে ০ রানে আউট হন মুমিনুল হক।
দুই বাঁহাতিকেই ফেরান দক্ষিণ আফ্রিকার পেসার কাগিসো রাবাদা। তৃতীয় ওভারের প্রথম ও চতুর্থ বলে তাদেরকে সাজঘরের পথ দেখান ডানহাতি প্রোটিয়া পেসার।
সাদমান ক্যাচ তোলেন শর্ট লেগে টনি ডি জর্জির হাতে। আর মুমিনুল খোঁচা দিয়ে ধরা পড়েন তৃতীয় স্লিপে ফিল্ডিং করা উইয়ান মুলদারের হাতে।
প্রথম ইনিংসেও ব্যর্থ ছিলেন সাদমান আর মুমিনুল। ডাক (৪ বলে ০) মেরেছিলেন সাদমান। মুমিনুল আউট হয়েছিলেন ৪ রানে।
বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর দৃষ্টিকটু আউটের নজির ভুরি ভুরি। ভালো খেলতে খেলতে অনেক সময়ই দেখা যায়, খুবই সাধারণ একটি বলে উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসেন।
মিরপুরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে চলতি প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে করেছিলেন ৭। দ্বিতীয় ইনিংসে তার উইলো থেকে এলো ২৩ রান। কেশভ মহারাজের ঘূর্ণি ডিফেন্ড করতে গিয়েও পারেননি শান্ত। সরাসরি পা দিয়ে বল আটকে দেন। আম্পায়ার আঙুল তুলে দিতে ভুল করেননি।
৪৯ বলে ২ বাউন্ডারিতে ২৩ রান করেন শান্ত। তার আগে জয়কে নিয়ে ৯৮ বলে ৫৫ রানের জুটি গড়েছিলেন তিনি।
মঙ্গলবার শেরে বাংলাায় ৬ উইকেটে ১৪০ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিনের খেলা শুরু করে দক্ষিণ আফ্রিকা। এরপর কাইল ভেরেইনের দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে প্রথম ইনিংসে ৩০৮ রান করে অলআউট হয় দক্ষিণ আফ্রিকা। ১৪৪ বলে ১১৪ রানের ইনিংস খেলেন ভেরেইন।
বাংলাদেশের হয়ে ১২২ রান খরচায় ৫ উইকেট নেন তাইজুল ইসলাম। ৩ উইকেট নেন হাসান মাহমুদ ও ২টি উইকেট শিকার করেন মেহেদী হাসান মিরাজ।
এর আগে ব্যাটিং ব্যর্থতায় প্রথম ইনিংসে মাত্র ১০৬ রানে অলআউট হয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ।
এমএমআর/এএসএম