Site icon Amra Moulvibazari

ইনিংস ব্যবধানে হেরে লজ্জার ইতিহাস গড়লো পাকিস্তান

ইনিংস ব্যবধানে হেরে লজ্জার ইতিহাস গড়লো পাকিস্তান


ছবি: সংগৃহীত

ব্যর্থতার বৃত্ত যেন কিছুতেই ভাঙতে পারছে না পাকিস্তান। নয়তো কে ভেবেছিল মুলতান টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৫৫৬ রান করা পাকিস্তান শেষ পর্যন্ত ইনিংস ব্যবধানে হারবে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। অবশ্য জয়ের কাজটা চতুর্থ দিনেই সেরে রেখেছিল ইংল্যান্ড। থ্রি লায়ন্সদের জন্য জয়টা ছিল কেবল সময়ের মাত্র। সেখানে ইংলিশরা জিতে নিলো পঞ্চম দিনের প্রথম সেশনেই। ইনিংস ও ৪৭ রানে জিতে সিরিজ শুরু করলো সফরকারীরা। সেই সাথে ১৪৭ বছরের টেস্ট ইতিহাসে প্রথম দল হিসেবে ১ম ইনিংসে ৫০০ রান করার পরেও ইনিংস ব্যবধানে ম্যাচ হারলো শান মাসুদের দল।

মুলতানে প্রথম ইনিংসে আব্দুল্লাহ শফিক, শান মাসুদ ও সালমান আঘার সেঞ্চুরিতে ৫৫৬ রান করে পাকিস্তান। জবাবে রুটের ডাবল সেঞ্চুরি ও হ্যারি ব্রুকের ট্রিপল সেঞ্চুরিতে ৭ উইকেটে ৮২৩ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে ইংল্যান্ড। এতে ২৬৭ রানের লিড পায় ইংলিশরা। এরপর দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ২২০ রানে অলআউট হয়ে যায় পাকিস্তান। এতে ইনিংস ও ৪৭ রানের জয় পেয়েছে ইংল্যান্ড।

টেস্ট ক্রিকেটে পাকিস্তানের ব্যর্থতার পাল্লাও দিনকে দিন যেন ভারি হচ্ছে। ক’দিন আগেই বাংলাদেশের বিপক্ষে ঘরের মাটিতে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে। এবার ইংল্যান্ডের বিপক্ষে হার দিয়ে সিরিজ শুরু। এ নিয়ে টানা ছয়টি টেস্ট হারলো শান মাসুদের দল। এছাড়াও দেশের মাটিতে এ নিয়ে টানা ১১ টেস্ট জয়হীন পাকিস্তান। দলটি সর্বশেষ নিজেদের মাঠে ক্রিকেটের এই অভিজাত সংস্করণের ম্যাচ জিতেছিল ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে রাওয়ালপিন্ডিতে। 

শুক্রবার (১১ অক্টোবর) মুলতান স্টেডিয়ামে ১১৫ রানে পিছিয়ে থেকে পঞ্চম ও শেষদিন শুরু করে পাকিস্তান। গত দিন ৪১ রানে অপরাজিত থেকে দিন শেষ করা আগা সালমান আজ ফিফটির দেখা পেয়েছেন। সকালে বেশ কয়েক ওভার দেখে-শুনে ব্যাটিং করেছেন। তাকে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছেন আমের জামাল। তাতে সপ্তম উইকেট জুটিতে দুজনে শতরান পার করেন। তাদের এই জুটি কিছুটা হলেও পাকিস্তানি সমর্থকদের মনে আশা জাগিয়েছিল। তবে ৫৫ রান করে সালমান ফিরলে ভাঙে সেই জুটি।

জ্যাক লিচের বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে ৬৩ রানে শেষ হয় সালমানের ইনিংস। এর মধ্যেই ফিফটি তুলে নেন জামাল, একবার জীবনও পান তিনি। এদিকে শাহিন আফ্রিদিকেও ১০ রানে বিদায় করেন লিচ। নাসিম শাহ এসে ছক্কায় ঝরের ইঙ্গিত দিলে তাকেও ফিরিয়ে দলকে জয়ের স্বাদ পাইয়ে দেন লিচ। পাকিস্তানের দ্বিতীয় ইনিংস ধ্বসিয়ে দিতে বড় ভূমিকা রাখেন লিচ। মাত্র ৬.৫ ওভার হাত ঘুরিয়ে তুলে নেন ৪ উইকেট। ২টি করে উইকেট নেন ব্র্যাডন কার্স ও গাস অ্যাটকিনসন। ১টি উইকেট নেন ক্রিস ওকস।

এর আগে প্রথম ইনিংসে রুটের ৩৭৫ বলে ১৭টি চারে ২৬২ ও ব্রুকের ৩২২ বলে ২৯টি চার ও ৩ ছক্কায় ৩১৭ রানে ভর করে রান পাহাড়ে চড়ে ইংল্যান্ড। ব্রুকের সঙ্গে রেকর্ড ৪৫৪ রানের জুটি গড়েন রুট। শেষ পর্যন্ত ইংল্যান্ড ৭ উইকেট হারিয়ে ৮২৩ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে।

বল হাতে পাকিস্তানের সাইম আইয়ুব ও নাসিম শাহ ২টি করে উইকেট নেন। তাদের ছয় বোলারের প্রত্যেকে শতাধিক রান দেন। তার মধ্যে আবরার আহমেদ ৩১ ওভারে ১৭৪, নাসিম ৩১ ওভারে ১৫৭, আমের ২৪ ওভারে ১২৬, শাহীন আফ্রিদি ২৬ ওভারে ১২০, সালমান ১৮ ওভারে ১১৮ ও সাইম ১৪ ওভারে ১০১ রান দেন।

এরপর পাকিস্তান দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে শূন্যরানেই আব্দুল্লাহ শফিকের উইকেট হারায়। ২৯ রানের মাথায় শান মাসুদ আউট হন ব্যক্তিগত ১১ রানে। দলীয় রান যখন ৪১ তখন মাত্র ৫ রান করে সাজঘরে ফেরেন বাবর আজমও। একই রানে সাইম ফিরেন ৪টি চারে ২৫ রান করে। আগের ইনিংসে ডাক মারা রিজওয়ান দলীয় ৫৯ রানের মাথায় আউট হন ১ চারে ১০ রান করে। ৮২ রানের মাথায় সৌদ শাকিল ৪টি চারে ২৯ রান করে ফেরার পর সালমান ও আমের মিলে দিন শেষ করে আসেন।

/আরআইএম



Exit mobile version