বাংলাদেশের মধ্য – পূর্বাঞ্চলের ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কসবা উপজেলার বায়েক ইউনিয়নের গৌরঙ্গলা গ্রামে ভারত থেকে পালিয়ে আসা পাগলা মহিষের হামলায় এক বৃদ্ধা নারী নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছে অন্তত ১৫ জন মানুষ।
গত ২ ফেব্রুয়ারী রবিবার সকাল থেকে দুপুর দুইটা পর্যন্ত উপজেলার বায়েক ইউনিয়নের গৌরঙ্গলা ,পুটিয়া, হরিপুর , সহ আশপাশের এলাকায় তাণ্ডব চালায় ভারত থেকে পালিয়ে আসা এই পাগলা মহিষটি।
এই ঘটনায় গৌরঙ্গলা গ্রামের মৃত মুক্তার হোসেন এর স্ত্রী সাফিয়া খাতুন নির্মমভাবে নিহত হন। সন্তোষ শীল নামে এক যুবক গুরুতর আহত হয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে।
স্থানীয় লোকদের ভাষ্যমতে, বায়েক ইউনিয়নের পুটিয়া গ্রামের বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় দুই সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) সদস্যকে গুরুতর আহত করে কাঁটাতারের বেড়া অতিক্রম করে একটি পাগলা মহিষ বাংলাদেশের গ্রামে ঢুকে পড়ে ,এরপর থেকে পুটিয়া হরিপুর বাজার ও গৌরাঙ্গলা এলাকায় তাণ্ডব চালায় এই পাগলা মহিষটি।
এসময় লোকজন পাগলা মহিষটিকে আটকানোর চেষ্টা করলে অন্তত ১৫ জন আহত হন। এরপর মহিষটি গৌরঙ্গলা গ্রামের ভূইয়া বাড়িতে আক্রমণ করে।
এসময় বাড়ির উঠোনে বসে রোদ পোহাতে থাকা সাফিয়া খাতুন কে পাগলা মহিষটি আঘাত করে।
গুরুতর আঘাতে ঘটনাস্থলেই তিনি নিহত হন।
এ অবস্থায় স্থানীয়রা দা-কুড়াল, লাঠিসোটা ও বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে পাগলা মহিষটিকে থামানোর চেষ্ঠা করলেও মহিষের তান্ডব বন্ধ করতে ব্যর্থ হয় এলাকাবাসী।
তখন ছড়িয়ে পড়ে পুরো এলাকায় আতঙ্ক।
এলাকাবাসী লোকালয় ত্যাগ করে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের শূন্যরেখা জমিতে অবস্থান করে। সেখানে পাগলা মহিষ ও স্থানীয়দের মধ্যে প্রায় সাত ঘণ্টা যাবত ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলতে থাকে। এতে অনেকেই আহত হন।
তারপর দুপুর দুইটার দিকে ধীরে ধীরে স্থানীয়দের শতাধিক দেশীয় অস্ত্রের আঘাতে দুর্বল হয়ে পড়ে পাগলা মহিষটি।
এরপর ভারত-বাংলাদেশ শূন্য রেখায় মহিষটিকে জবাই করেন স্থানীয় লোকজনেরা। তারপর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
এদিকে অপ্রীতিকর এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার লক্ষ্যে সকাল থেকেই ঘটনাস্থলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৬০ বিজিবির ভারপ্রাপ্ত সিও মেজর মাজহার ও কসবা মডেল থানা অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ লোকমান হোসেন ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন ও স্থানীয়দের সহযোগিতা করেন।
পাগলা মহিষটি যেন পুনরায় লোকালয়ে প্রবেশ না করতে পারে এ বিষয়ে তৎপর ছিলেন বিজিবি ও পুলিশের সদস্যরা।
এরপর কসবা উপজেলা নির্বাহি অফিসার মাসুদুল আলম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এসময় বায়েক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আল মামুন ভূঞা সহ ঘটনাস্থলে হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে।
রিপোর্টারঃ হাসান মাহমুদ