Site icon Amra Moulvibazari

এই বিশ্বের অদ্ভুত ৯ টি পরিত্যাক্ত স্থান!

এই বিশ্বের অদ্ভুত ৯ টি পরিত্যাক্ত স্থান!

পরিত্যক্ত স্থানের কথা বলতেই, হয়তো আমাদের সামনে ভেসে উঠবে , কোনো থমথমে , ভয়াবহ জায়গা , যেখানে কয়েক বছর আগেও মানুষের ভিড়ে গমগম করতো , কিন্তু এখন যা কিছু আছে তা কেবলই ধূলিকণা এবং কিছু স্মৃতি।

এই পরিত্যক্ত স্থানখুলোর অদ্ভুত আকর্ষণীয়তা মানুষকে টানে । কিন্তু এই সব জায়গায় যাওয়া তো খুব একটা সহজ নয়। কিন্তু আপনি আপনার ব্যাক প্যাক না করেও কিংবা আপনার সাধের আরামের বিছানা বা চেয়ারটি না ছেড়েও এইসব স্থান সম্পর্কে জানতে পারবেন।

চলুন দেখে নেয়া যাকে এই বিশ্বের অদ্ভুত  ৯টি  পরিত্যাক্ত  স্থান সম্পর্কে  –

১- Pripyat :

প্রিপিয়াট

এটি ইউক্রেনের একটি পরিত্যক্ত শহর। ১৯৮৫ সালের দিকে এখানে প্রায় ৫০ হাজার লোকের বাস ছিল। কিন্তু ১৯৮৬ সালে এখানকার চেরনোবিল পারমাণবিক স্টেশনে বিস্ফোরণের ফলে বাতাসে অত্যন্ত বিপজ্জনক তেজস্ক্রিয় রাসায়নিক মিশে যায়। ফলে সেই ৫০ হাজার বসতিকে রাতারাতি শহর খালি করতে হয়। কোনো শহর থেকে হঠাৎ সকল মানুষ উদাও হয়ে গেলে কেমন দেখতে হয় এটা হচ্ছে তার একটা জলজ্যান্ত উদাহরণ।
নিচের এই ছবি গুলি পারমাণবিক দূর্ঘটনার আগের ও পরের কিছু তুলনা।

দুর্ঘটনার আগে
দুর্ঘটনার পরে

Call Of Duty Modern warfare এর কিছু অংশ এই শহরের আদলে তৈরি করা হয়েছে।

Call of Duty

২- HOUTOUWAN :

Houtouwan

এই গ্রামটি চীনের সাংহাইয়ের থেকে প্রায় ৮৩ মাইল দক্ষিণ-পূর্বদিকে অবস্তিত। ধূলিকণা এবং ধ্বংস স্তুপ এ ঢেকে যাওয়ার পরিবর্তে এই বাড়িগুলো সম্পূর্ণরূপে লতানো আইভি ও সবুজ গাছপালায় আবৃত হয়ে বিধ্বংসী কেও যেন দর্শনীয় করে তুলেছে । এই গ্রামগুলো মানুষের ত্যাগের কারণ হলো শিক্ষা ও খাদ্য সরবরাহে সমস্যা। ১৯৯০ এর গোড়ার দিকে গ্রামের বেশিরভাগ আদিবাসীরা অন্যত্র স্থানান্তরিত হওয়ার পরও কিছু লোক এখনো এই দ্বীপে বাস করে। এবং তারা কৌতুহলী পর্যটক এবং ফটোগ্রাফারদের কাছে পানি ও খাবার বিক্রি করে।

৩- TRAIN GRAVEYARD :

Trane Graveyar

ইউনি মূলত লবণাক্ত সমতল ভুমি এবং লাল রতগুলিজন্য পরিচিত। তবে এ অঞ্চলে আরেকটি পর্যটকদের অস্বাভাবিক আকর্ষণ রয়েছে। একটি পরিত্যক্ত ট্রেনের কবর স্থান। উনিশ শতকের গোড়ার দিকে ইউনির যাতায়াতের নেটওয়ার্ক বাড়াধো এবং শহর জুড়ে আরো ট্রেন ট্র্যাক তৈরির জন্য পরিকল্পনা করা হয়েছিল। তবে প্রযুক্তিগত সমস্যা ও স্থানীয় আদিবাসিদের মধ্যে উত্তেজনার কারণে প্রকল্পটি বাতিল করা হয়। কিন্তু পরেও ট্রেনগুলো প্রশান্ত মহাসাগরীয় শহরগুলোতে খনিজ পরিবহনের জন্য ব্যবহার করা হতো। কিন্তু ১৯৪০ এর দিকে খনিজের অভাফে খনিকাররা শহর ছেড়ে চলে গেলে এই সরন্জামগুলি মরুভূমিতে পড়ে থাকে। যার ফল স্বরূপ গ্রেট ট্রেন কবরস্থান আজ আপনি দেখতে পাচ্ছেন।

 

৪- TIANDUCHENG :

TIANDUCHENG

ছবি দেখে হয়তো ভাবছেন এটা প্যারিস। কিন্তু না! এটা প্যারিস এর ছবি না। তবে প্রায় হুবহু প্যারিসের মতো দেখতে এটা চীনের Tianducheng শহর। এটি ফ্রান্সের রাজধানীর একটি ক্ষুদ্র প্রতিরূপ। ২০০৭ সালে এটি নির্মাণ করা হয়। এবং এটি খুবই খারাপ ভাবেও ব্যর্থ হয়। দুর্ভাগ্যক্রমে চীন যেই আলোর নগরীর পুননির্মানের যে প্রচেষ্ঠা চালিয়েছিল তা রোমান্টিরকের চেয়ে বয়াবহে পরিণত হয়েছে। এবং আজ তা সম্পূর্ণই পরিত্যাক্ত।

এই বিশ্বের অদ্ভুত ৯ টি পরিত্যাক্ত স্থান!

৫- CRACO :

Cracko

দক্ষিণ ইতালির এই ছোট্ট পাহাড়ি শহরটি ৫৪০ খ্রিষ্ঠাব্দ থেকে অস্তিত্ব নিয়ে আছে। তবে শহরটি দুর্গম স্থানে অবস্থান করায় শেষ পর্যন্ত এটিই এর পতনের কারণ হয়ে দাড়িয়েছিল। দূর্বল কৃষি, ১৯৬৫ সালের ভূমিধস, ১৯৭২ সালের বন্যা, প্রভৃতি কারণে ১৯৯০ এর দশকের দিকে শহরটি পুরোপুরি পরিত্যাক্ত হয়েছিল। The Passion of the Christ মুভিটিতে এই শহরটি দেখানো হয়েছে।

৬- MIRNY MINE:

Mirny Mine

এটি বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মনুষ্য নির্মিত গর্ত। এটি সোভিয়েত ইউনিয়নের হীরের চাহিদা মেটানোর জন্য স্থালীন দ্বারা নির্মিত হয়েছিল। গর্তটি খননের পর এটি আরো গভীর করা খুব কঠিন হয়ে পড়েছিল । ফলে এই খনিটি পরিত্যক্ত করা হয়।

৭- MAUNSELL SEA FORTS :

যদিও এইগুলা দেখতে অনেকটা সাই-ফাই মুভির ওয়াচটাওয়ার এর মতো মনে হলেও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ইংল্যান্ডকে জার্মানি বিমান এর আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে টেমস নদীর মোহনায় এই বিশাল এন্টি এয়ারক্রাফট টাওয়ারগুলো নির্মিত করা হয়েছিল। তবে এখন এই টাওয়ারগুলো পরিত্যাক্ত।

৮- HASHIMA ISLAND :

Hashima Island

এই হাশিমা দ্বীপ একসময় বিশ্বের সর্বাধিক ঘনবসতিপূর্ণ দ্বীপ ছিল। কিন্তু এখন এটি পুরোপুরি খালি। এই দ্বিপের প্রতি লোকের আগ্রহ তখন হয়েছিল যখন এর নিচে একটা কয়লার খনির সন্ধান পাওয়া যায়। ফলে সময়ের সাথে সাথে এখানে শ্রমিকদের জন্য পাকাপোক্ত সব অ্যাপার্টমেন্ট, কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হয়। পরে কয়লা ফুরিয়ে গেলে মানুষও চলে যেতে থাকে। এবং সমুদ্রের মাঝখানে রয়ে যায় এই কংক্রিট ভুতের শহর।

৯- GREAT WALL OF CHINA :

Great Wall of China

পরিত্যাক্ত চীনের প্রাচীর। চীনের এই গ্রেট ওয়াল ২১,১৯৬.১৮ কি.মি . দীর্ঘ হওয়ায় এ জাতীয় বিশাল কাঠামো পরিচালনার ব্যয়ের কারণে এর কিছু অংশ ভগ্নদশায় পরিণত হয়েছে। এই ছবি গুলো তোলা হয়েছে বেইজিংয়ের আশি কি. মি . উত্তর পশ্চিমে অবস্থিত জিয়াংশুইহো গ্রাম থেকে। যা প্রকাশ করছে প্রকৃতি কীভাবে ধীরে ধীরে একসময়কার গর্বের সাথে দাড়িয়ে থাকা প্রাচীর কে গ্রাস করছে।

এই বিশ্বের অদ্ভুত ৯ টি পরিত্যাক্ত স্থান!

Exit mobile version