Site icon Amra Moulvibazari

দুই ডায়াগনস্টিক সেন্টার জানালো ‘ক্যানসার’; দেশবিদেশ ঘুরে মিললো ভিন্ন রিপোর্ট

দুই ডায়াগনস্টিক সেন্টার জানালো ‘ক্যানসার’; দেশবিদেশ ঘুরে মিললো ভিন্ন রিপোর্ট


ফারহানা শেখ, ঢাকার মিরপুরের বাসিন্দা। তার চৌদ্দ বছরের সন্তান আরিফ মাহমুদ; সম্প্রতি বুকে ব্যাথা অনুভব করলে ছেলেকে স্থানীয় পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে বুকের সিটি স্ক্যান করান তিনি। রিপোর্টে বলা হয়, মেসোথেলিওমা নামক দূরারোগ্য ক্যানসারের অস্তিত্ব রয়েছে।

বিষয়টি আরও পরিস্কার হতে বনানীর প্রেসক্রিপশন পয়েন্ট নামের ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এফএনএসি নামক একটি পরীক্ষা করা হয় আরিফের। সেই রিপোর্টেও একই ধরনের ক্যানসারের উল্লেখ করা হয়।

পরপর দুটি রিপোর্টে ক্যানসারের অস্তিত্ব পাওয়ায় ঘোর অন্ধকার নেমে আসে পরিবারটির ওপর। ফারহানা শেখ বলছিলেন, ওর কোনো লক্ষণ নাই। কাশি-বুকে ব্যথা কিচ্ছু নাই, নরমাল। আমি তো চেক আপের জন্য পরীক্ষা করছিলাম। তখন কী অবস্থা হয়েছিল, এর ভাষা নাই।

দুইটি রিপোর্টে পরিবারটি যখন দিশেহারা, তখন একই পরীক্ষা করা হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানকার রিপোর্টে বলা হয় কোনো ক্যানসারের জীবানু পাওয়া যায়নি পরীক্ষায়। তারপরও আরও নিশ্চিতে রাজধানীর পান্থপথের আরেকটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এফএনএসি পরীক্ষা করা হলে সেখানকার রিপোর্টও বিএসএমএমইউ এর মতো উল্লেখ করা হয়।

দেশে দুই ধরনের রিপোর্ট পাওয়ার পর ভারতের কলকাতার একটি হাসপাতালে বায়োপসি করা হলে সেখাকার রিপোর্টেও ক্যানসারের কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি বলে উল্লেখ করা হয়।

এরমধ্যে নিজেদের রিপোর্টকে সঠিক বলে দাবি করলেও ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি হননি প্রেসক্রিপশন পয়েন্টের কর্মকর্তারা। আর পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারও তাদের রিপোর্টটির সত্যতা নিশ্চিত করেছে। প্রতিষ্ঠানটির কেউ ক্যামেরার সামনে কথা বলেনি।

রোগ নির্ণয়ে এমন বিপরীত রিপোর্ট পর্যালোচনা ও মান নির্ণয়ে কেন্দ্রীয়ভাবে ল্যাব থাকা জরুরি বলে মনে করেন চিকিৎসকরা।

বিএসএমএমইউ এর শিশু হেমাটোলজি ও অনকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান ডা. এটিএম আতিকুর রহমান বলেন, আমাদের কাছে মনে হচ্ছিল রোগীর অবস্থার সাথে রিপোর্টটি সঙ্গতিপূর্ণ নয়। কারণ এই রিপোর্টে বলা হয়েছে, এক ধরনের টিউমার, এক ধরনের ক্যানসার। টিউমার বা ক্যানসার যদি আমি মনেই করি কিংবা সন্দেহ করি, তাকে সাথে সাথে চিকিৎসা দেয়া যায় না।

তিনি আরও বলেন, এমন সন্দেহ যেখানে হবে সেক্ষেত্রে দেশে কেন্দ্রীয় একটা রেফারেল লাগবে। বোর্ডের মাধ্যমে একটা যৌথ সিদ্ধান্ত হলে এ ধরনের সন্দেহ বা ভুল দূর হবে। রোগ নির্ণয়ে এমন ভোগান্তির প্রতিকার চান ভুক্তভোগীরাও।

/এমএন



Exit mobile version