নানান কারণে ফ্রিজের ভেতর অতিরিক্ত বরফ জমতে পারে। এটি শুধু ফ্রিজের কার্যক্ষমতা কমিয়ে দেয় না, বরং বিদ্যুৎ খরচও বাড়িয়ে দেয়। বিভিন্ন কারণে এমন হতে পারে। বেশিরভাগ সময় ব্যবহারের ভুল পদ্ধতি এবং অসাবধানতায় হতে পারে। যেমন-
ফ্রিজের দরজা সঠিকভাবে বন্ধ না করা
ফ্রিজের দরজা সঠিকভাবে বন্ধ না হলে বাইরের গরম বাতাস ফ্রিজে ঢোকে, যা ভেতরের ঠান্ডা বাতাসের সঙ্গে মিশে গিয়ে বরফ জমার কারণ হয়।
রবার গ্যাসকেট নষ্ট হয়ে যাওয়া
ফ্রিজের দরজার চারপাশে থাকা রবার গ্যাসকেট নষ্ট হলে বা ফেটে গেলে, ফ্রিজের ভেতরে বাইরের আর্দ্র বাতাস ঢুকে যায়। এই আর্দ্রতা ঠাণ্ডা হয়ে বরফ জমার কারণ হয়।
অতিরিক্ত খাবার রাখা
ফ্রিজে বেশি খাবার রাখলে বাতাসের চলাচল বাধাগ্রস্ত হয় এবং ভেতরের আর্দ্রতা বেড়ে যায়। ফলে বরফ জমে যায়।
ডিফ্রস্টিং সিস্টেমের ত্রুটি
স্বয়ংক্রিয় ডিফ্রস্ট সিস্টেম যুক্ত ফ্রিজে যদি কোনো ত্রুটি থাকে, তবে ফ্রিজ নিয়মিত বরফ গলাতে পারে না। এতে করে অতিরিক্ত বরফ জমতে শুরু করে।
ফ্রিজের থার্মোস্ট্যাট সেটিংস খুব কম
ফ্রিজের থার্মোস্ট্যাট খুব কম তাপমাত্রায় সেট করলে ফ্রিজের ভেতরের আর্দ্রতা দ্রুত বরফে পরিণত হয়।
ফ্রিজে অতিরিক্ত বরফ দূর করার সহজ উপায় জেনে নিন-
ডিফ্রস্ট বোতাম ব্যবহার করা
যদি আপনার ফ্রিজে স্বয়ংক্রিয় ডিফ্রস্ট বোতাম থাকে, তাহলে সেটি ব্যবহার করুন। এটি দ্রুত বরফ গলাতে সাহায্য করবে। তবে ডিফ্রস্ট করার পর ফ্রিজটি সঠিকভাবে শুকিয়ে নিন এবং তারপর পুনরায় চালু করুন।
ফ্রিজটি সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে বরফ গলানো
ফ্রিজের প্লাগ খুলে ফ্রিজটিকে সম্পূর্ণ বন্ধ করুন। দরজা খুলে রেখে দিন এবং বরফ গলানোর জন্য অপেক্ষা করুন। এক্ষেত্রে কিছু কাপড় বা তোয়ালে ফ্রিজের নিচে রেখে দিন যাতে গলে যাওয়া পানি শুষে নিতে পারে। বরফ পুরোপুরি গলে গেলে ফ্রিজের ভেতর মুছে পরিষ্কার করে আবার চালু করুন।
গরম পানি ব্যবহার করা
একটি পাত্রে গরম পানি নিয়ে তা ফ্রিজের ভেতরে রেখে দিন। গরম পানি থেকে উৎপন্ন বাষ্প বরফ দ্রুত গলাতে সাহায্য করবে।তবে সরাসরি ফ্রিজের ভেতরে গরম পানি ঢালা উচিত নয়, কারণ এতে ফ্রিজের ভেতরের অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তবে এসময় অবশ্যই ফ্রিজ বন্ধ এবং সব জিনিস বাইরে রাখতে হবে।
ফ্রিজ পরিষ্কার রাখা
নিয়মিত ফ্রিজের ভেতরে পরিষ্কার রাখুন এবং অতিরিক্ত খাবার সরিয়ে ফেলুন। ফ্রিজের ভেতরে যে খাবারগুলি রাখা হয়, সেগুলি ভালোভাবে ঢেকে রাখুন যাতে ভেতরের আর্দ্রতা না বাড়ে।
গ্যাসকেট পরীক্ষা ও মেরামত করা
ফ্রিজের দরজার গ্যাসকেট পরীক্ষা করে দেখুন এটি সঠিকভাবে কাজ করছে কি না। যদি গ্যাসকেটে কোনো ছিদ্র বা ফাঁক থাকে, তাহলে সেটি মেরামত বা পরিবর্তন করুন।
সঠিক তাপমাত্রায় রাখুন
আপনার রেফ্রিজারেটর ৩৭ থেকে ৪০ ডিগ্রি ফারেনহাইটে (৩ থেকে ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে) এবং আপনার ফ্রিজার ০ ডিগ্রি ফারেনহাইটে (−১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে) এ রাখুন। আপনার যন্ত্রের ভিতরে ডায়ালগুলো সামঞ্জস্য করুন যাতে প্রতিটি বিভাগ এই তাপমাত্রায় ধারাবাহিকভাবে থাকে। এইভাবে আপনার রেফ্রিজারেটরে অতিরিক্ত বরফ জমাতে উৎসাহিত না করে আপনার খাবার নিরাপদে সংরক্ষণ করা যেতে পারে।
আরও পড়ুন
সূত্র: উইকিহাউ
কেএসকে/এমএস