জয়পুরহাটে বেসরকারি কোম্পানি ব্র্যাক সিডের আলুর বীজ লাগিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন একই এলাকার অর্ধশত কৃষক। উচ্চদামে আলুর বীজ কিনেও ২০-২৫ দিনে চারা না ওঠায় চরম বিপাকে পড়েছেন সদর উপজেলার ধারকী এলাকার এসব কৃষক।
মাঠের জমির বেশিরভাগ অংশ চারাবিহীন অবস্থায় খালি পড়ে রয়েছে। এতে চলতি মৌসুমে কৃষকদের চরম ক্ষতি হয়েছে বলে জানান তারা। এমন অবস্থায় ব্র্যাক সিডের বিরুদ্ধে প্রশাসনের আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।
ধারকী গ্রামের কৃষক ফিরোজ হোসেন প্রায় ২ বিঘা, আশরাফ আলী ৩ বিঘা, মুনজুরুল ৩ বিঘা, এরফান আলী ১ বিঘা, ফরিদ আকন্দ ২ বিঘাসহ প্রায় ৩৫ জন কৃষকের রোপণ করা ব্র্যাকের ক্যারেজ জাতের আলুর চারা গজায়নি। জমিতে দু’একটি গাছ জন্মালেও পুরো ক্ষেত খালি পড়ে রয়েছে। অথচ তারা জয়পুরহাট সদরের ব্র্যাক সিডের ডিলার গোলাম রব্বানী, ক্ষেতলালের ওসমান, স্থানীয় ব্যবসায়ী মেহেদী হাসান, মুক্তার হোসেনসহ কয়েকজন বীজ ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ক্যারেজ জাতের প্রায় ১২ লাখ টাকার বীজ আলু কিনেছিলেন। যা তারা ২০-২৫ দিন আগে প্রায় ৬০ বিঘা জমিতে রোপণ করলেও ১০ ভাগ চারাও গজায়নি।
ভুক্তভোগী কৃষকরা জানান, এ পর্যন্ত তাদের জমিতে খরচ হয়েছে বিঘা প্রতি প্রায় ৩২ থেকে ৩৫ হাজার টাকার মতো। যা থেকে তারা ১০ মণ আলুও পাবেন না বলে আশঙ্কা করছেন।
ধারকী গ্রামের কৃষক বজলু মিয়া (৪৮) বলেন, সদর উপজেলার ব্র্যাক সিডের ডিলার গোলাম রব্বানীর কাছ থেকে ১৫ বস্তা ব্র্যাকের ক্যারেজ আলু কিনে ৩ বিঘা জমিতে লাগিয়েছি, কিন্তু সেই জমিতে চারভাগের এক ভাগ গাছও ওঠেনি।
তিনি বলেন, এই তিনবিঘা জমিতে আমার খরচ হয়েছে প্রায় ১ লাখ টাকা। আলু ভালো হলে আমি সেখান থেকে প্রায় দুই লাখ টাকা লাভ করতাম। সেখানে এখন ২ থেকে আড়াই লাখ টাকার ক্ষতি সম্মুখীন হবো।
তবে ব্র্যাক সিডের ডিলার গোলাম রব্বানী জাগো নিউজকে বলেন, কৃষকদের কারণেই আলুর সমস্যা হয়েছে। আলুর জমির মাটি বেশি স্যাঁতস্যাঁতে থাকায় এই সমস্যা হয়েছে। এতে আমাদের কোনো দায়ভার নেই। বিষয়টি জানার পর কোম্পানিকে জানানো হয়েছে।
এ বিষয় জানতে চাইলে ব্র্যাকের টেরিটরি ম্যানেজার জহুরুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, কৃষকদের ভুলের কারণেই আলু পচে গেছে। কৃষকরা ভেজা মাটিতে আলু লাগানোর ফলেই এই সমস্যা হয়েছে।
জয়পুরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, এ বিষয়ে কৃষকদের কাছ থেকে একটি অভিযোগ পেয়েছি। এরইমধ্যে কৃষি অফিসার বরাবর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।
জয়পুরহাট সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাফসিয়া জাহান জাগো নিউজকে বলেন, কৃষকদের কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়ার পর আমরা সেখানে গিয়ে খোঁজ খবর নিচ্ছি। তদন্তের পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আল মামুন/এফএ/জিকেএস