যারা হলে ছাত্ররাজনীতি চায় না, তারা বিশেষ গোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব করে

0
1


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখা ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে ছাত্ররাজনীতি চাই না বলে বয়ান তুলছে অনেকে। ছাত্ররাজনীতি চাই না বলে বিভিন্ন ব্যানারও তুলেছিল। পরবর্তী সময়ে দেখা গেলো তারা বিশেষ গোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব করে।

সাধারণ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমি হলপাড়ার প্রিয় ভাই ও বোনদের অনুরোধ করে বলতে চাই, আপনারা অবশ্যই আপনাদের যৌক্তিক মতামত প্রচার করবেন। কিন্তু যেকোনো ব্যানারে মিছিলে যাওয়ার আগে সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠের শিক্ষার্থী হিসেবে সচেতনতার সঙ্গে খেয়াল করে দেখবেন ব্যানারটি কার প্রতিনিধিত্ব করছে। খেয়াল করবেন, তারা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করে কি না। আমি বিশ্বাস করি- ছাত্রদল বামের ডানে, ডানের বামে। আমরা মধ্যপন্থায় বিশ্বাসী।

শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) টিএসসি পায়রা চত্বরে ‘একাত্তরের মেধা নিধন : ইতিহাসের ক্ষত ও বুদ্ধিবৃত্তিক পুনর্গঠন’ শীর্ষক আলোকচিত্র প্রদর্শনী ও আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

ঢাবি ছাত্রদল সভাপতি বলেন, ছাত্রদলের ইতিহাস ঐতিহ্য দেখবেন, কোন প্যাটার্ন ধারণ করে ছাত্ররাজনীতি পরিচালনা করে। ছাত্রদল এমন কার্যকলাপ করে না যা সাধারণ শিক্ষার্থীর মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। আমি বিশ্বাস করি, ছাত্রদল স্মার্ট ছাত্রদের সংগঠন। ছাত্রদল দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ ছাত্র সংগঠন একদিনে হয়ে উঠেনি। তিলে তিলে আজকের এই পর্যায়ে দাঁড়িয়েছে।

সাহস আরও বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনকে ছাত্ররাজনীতির আঁতুড়ঘর বলা হয়। কিন্তু আমি মনে করি, মধুর ক্যান্টিন ছাত্ররাজনীতির প্রাণকেন্দ্র, আর জাতীয় রাজনীতি কিংবা ছাত্ররাজনীতির আঁতুড়ঘর হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো। হলগুলোতে ছাত্ররাজনীতি সুশৃঙ্খলভাবে বজায় থাকলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম যুগ যুগ ধরে ইতিহাসে লেখা হয়ে থাকবে।

আরও পড়ুন

জুলাই আন্দোলন একক কারও কৃতিত্ব নয় উল্লেখ করে এই ছাত্রনেতা বলেন, এই আন্দোলনে অনেকের মিডিয়ায় ফেসভ্যালু বেড়ে গেছে। দেখে মনে হয় অনেক কিছু করে ফেলেছে। ছাত্রদলের ১৫৩ জন শহীদ হয়েছে। মেট্রোরেল মামলার প্রধান আসামি করা হয়েছিল আমাকে। আমাদের চারজন নেতাকে অমানবিক নির্যাতন করা হয়েছে।

তিনি বলেন, বিগত ১৫ বছরে হামলা, মামলা, গুম-খুনসহ ছাত্রলীগ যে সন্ত্রাসী কার্যক্রমের সৃষ্টি করেছে তার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে ৫ আগস্ট। সবাই মিলে আন্দোলন করেছি। কেউ নেতৃত্ব দিয়েছে, কেউ সেই নেতৃত্বকে বেগবান করেছে। তাই এই আন্দোলন একক কোনো কৃতিত্বে নয়।

তিনি আরও বলেন, ছাত্রলীগ যেভাবে ক্যাম্পাসগুলোতে শিক্ষার পরিবেশ ধ্বংস করে হলগুলোতে ত্রাসের রাজত্ব করেছিল, গেস্টরুম কালচার করে মিছিল মিটিংয়ে জোর করে নিয়ে গিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ট্রমার সৃষ্টি করেছিল, আমরা কখনোই তাদের মতো আচরণ করবো না। বিএনপি সরকার গঠন করলে অবশ্যই সাধারণ শিক্ষার্থীদের মতামতের ভিত্তিতে প্রতিটি ক্যাম্পাস বিনির্মাণে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেবে।

সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ আবুল কাউসার বলেন, সবচেয়ে বেশি বিকৃতির শিকার হয়েছে ইতিহাস। রাষ্ট্রে গণতন্ত্র না থাকলে এটি সমাজ সংস্কৃতি ইতিহাসে ছড়িয়ে পড়ে। গত ১৫ বছর ইতিহাস বিকৃতির নানা ঘটনা ঘটেছে। ইতিহাসের বয়ানকে নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। ইতিহাসকে আদালতের বিষয়বস্তুতে পরিণত করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ইতিহাসের গণতন্ত্রায়ণ প্রয়োজন। ইতিহাস নিয়ে গবেষণা হবে, গবেষক একেকজন একেক ফাইন্ডিং নিয়ে আসবেন। গ্রহণযোগ্য বিবেচনায় সেটি ইতিহাস হিসেবে টিকে থাকবে।

আলোকচিত্র প্রদর্শনীতে ১৪ ডিসেম্বরের শহীদ বুদ্ধিজীবীদের ছবি, বুদ্ধিজীবী হত্যার সংবাদের কাটিংসহ বিভিন্ন স্মৃতি সম্বলিত চিত্র প্রদর্শন করা হয়।

এমএইচএ/এমকেআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।