দেশে ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইনে তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন ও প্রচারণা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ এবং দণ্ডনীয় অপরাধ। কিন্তু জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ৪৪তম ব্যাচের র্যাগ উপলক্ষে তামাক আইন অমান্য করে সিগারেট কোম্পানির বিজ্ঞাপনে ছেয়ে গেছে পুরো ক্যাম্পাস।
শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়া সংলগ্ন এলাকায়, বটতলা প্রতিটি খাবারের দোকানে, আবাসিক হলগুলোর সামনেসহ পুরো ক্যাম্পাসজুড়ে সিগারেট কোম্পানির পোস্টার, বিলবোর্ড বা সাইনবোর্ডে ছেয়ে গেছে। রিয়েল ডায়মন্ডের ব্যানারে আবুল খায়ের গ্রুপের ‘ব্লাক ডায়মন্ড’ সিগারেটকে প্রমোট করা হচ্ছে।
আবার কয়েকটি জায়গায় তাদের ব্যানারে মুক্তভাবে বসেছে ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্যের স্টল। বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪৪তম ব্যাচের র্যাগের টাইটেল স্পন্সর হিসেবে ওই কোম্পানি তাদের প্রচারণা চালাচ্ছে।
এদিকে ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০০৫ ধারা ৫ এর ‘ক’ উপধারায় বলা হয়েছে, ‘প্রিন্ট বা ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায়, বাংলাদেশে প্রকাশিত কোনো বই, লিফলেট, হ্যান্ডবিল, পোস্টার, ছাপানো কাগজ, বিলবোর্ড বা সাইনবোর্ডে বা অন্য কোনোভাবে তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন প্রচার করবেন না, বা করাবেন না।’
আইনের (গ) উপধারায় আরও বলা হয়েছে, ‘তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন প্রচার বা তার ব্যবহার উৎসাহিত করার উদ্দেশ্যে, কোন দান, পুরস্কার, বৃত্তি প্রদান বা কোন অনুষ্ঠানের ব্যয়ভার বহন আদান-প্রদান করা যাবে না।’
এ আইন অমান্য করলে শাস্তি হিসেবে আইনের ধারা ৫ এর ৪ এ বলা হয়েছে, ‘কোনো ব্যক্তি এ ধারার বিধান লঙ্ঘন করলে, তিনি অনূর্ধ্ব তিন মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড বা অনধিক এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ডে দণ্ডনীয় হবেন এবং ওই ব্যক্তি দ্বিতীয়বার বা পুনরায় একই ধরনের অপরাধ সংঘটন করলে ওই দণ্ডের দ্বিগুণ হারে দণ্ডনীয় হবেন।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, আমরা এ বিষয়ে জানার পরপরই অনুষ্ঠানের কনভেনারের সঙ্গে যোগাযোগ করে স্টলগুলোকে সরিয়ে ফেলতে বলি। কিন্তু তারপরও এ ধরনের ঘটনা কোনোভাবেই কাম্য না। এ বিষয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে পদক্ষেপ দেবো এবং পরবর্তীতে সোচ্চার থাকবো।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সোহেল আহমেদ বলেন, এ বিষয়ে আমাকে অবহিত করা হয়নি। আমরা চেষ্টা করবো যাতে ধরনের ঘটনা পরবর্তীতে না ঘটে।
সৈকত ইসলাম/এমএএইচ/