কাকরাইল ছাড়লেন সাদপন্থিরা

0
0


দাওয়াতি কার্যক্রম না থাকা সাদপন্থিরা শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে কাকরাইল এলাকা ছেড়ে নিজ নিজ গন্তব্যে চলে গেছেন। এছাড়া যাদের দাওয়াতি কার্যক্রম রয়েছে, কেবলমাত্র তারা কাকরাইল মারকাজ মসজিদে অবস্থান করছেন।

অনুসারীদের কাকরাইল মসজিদ থেকে বেশ কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।

এর আগে শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) দুপুর ১২টা ১০ মিনিটে কাকরাইল মারকাজ মসজিদে শুরু হয় জুমার নামাজ এবং শেষ হয় সাড়ে ১২টায়। এরপর ১২টা ৫০ মিনিটের দিকে শুরু হওয়া মোনাজাত শেষে দুপুর ১টার দিকে দাওয়াতি কার্যক্রমে না থাকা সাদ অনুসারীরা কাকরাইল এলাকা ছাড়তে থাকেন।

মাওলানা সাদকে আগামী ইজতেমায় আসতে দেওয়া হবে না, জুবায়েরপন্থিদের এমন ঘোষণা ও দুই পক্ষের উত্তেজনার মধ্য দিয়ে শুক্রবার সকাল থেকেই কাকরাইল মসজিদ ও তার আশেপাশের এলাকায় অবস্থান নিতে শুরু করেন সাদপন্থিরা।

কাকরাইল মসজিদ থেকে জমায়েত ছড়ায় নয়া পল্টন ও মৎস্য ভবন পর্যন্ত। বেলা ১২টার আগে হাজার হাজার লোকে পরিপূর্ণ হয়ে যায় কাকরাইল এলাকা। নিরাপত্তার স্বার্থে কাকরাইল মসজিদের পাশে, রমনা ও প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনে যাওয়ার পথটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। কাকরাইল এলাকায় অবস্থান নেয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। পরে তারা রাস্তার ফুটপাতে নামাজ আদায় করেন। নামাজ শেষে সাদপন্থিদের কাকরাইল এলাকায় আসা-যাওয়ার পথে বেশ কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অনুসারীদের চলতি পথে সেসব নির্দেশনা মেনে চলতে বলা হয়েছে। সেই নির্দেশনা মেনেই অনুসারী কাকরাইল ছেড়েছেন।

আরও পড়ুন:

নির্দেশনাগুলো হচ্ছে, মৎস্যভবন থেকে শাহবাগের রাস্তা যাতায়াতের জন্য ব্যবহার করা যাবে, কিন্তু কোনো অবস্থান করা যাবে না। অবস্থান করা যাবে কাকরাইল মসজিদের পূর্ব এবং উত্তর ও দক্ষিণে। রমনা পার্কে কোনো সাথী প্রবেশ করবে না, কাকরাইল মসজিদের উত্তর অংশ থেকে হোটেল শেরাটন পর্যন্ত কেউ চলাচল করবে না, মসজিদ থেকে মগবাজার পর্যন্ত যাতায়াত করা যাবে, কিন্তু অবস্থান করা যাবে না। শাহবাগ থেকে টিএসসসি এবং পরে দোয়েল চত্বর হয়ে হাইকোর্ট মাজার পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় কেউ ঘোরাঘুরি করবে না ও কোনো প্রয়োজনেই সেখানে যাবে না, মেট্রোরেল দেখার জন্য মেট্রো স্টেশনে কেউ প্রবেশ করবে না; রাস্তার আশেপাশে কেউ মানবিক জরুরিরত (ইস্তিঞ্জা) পুরা করবে না; রাস্তায় কোনো ময়লা আবর্জনা ফেলা যাবে না। বরং কোনো আবর্জনা দেখলে নিজ দায়িত্বে পরিস্কার করে দেবো; কোনো ভাই অসুস্থ হলে মেডিকেল টিমের সঙ্গে যোগাযোগ করবে; কোনো স্থানে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটলে শুধু জিম্মাদাররাই তাৎক্ষণিক সমাধানের চেষ্টা করবে। অপরাধীকে প্রয়োজনে প্রশাসনের হাতে সোপর্দ করবে। নিজের হাতে অবশ্যই কেউ আইন তুলে নেবো না।

কাকরাইল ছাড়লেন সাদপন্থিরা

এই জমায়েত ও তাবলিগে বিরোধ নিয়ে কথা হয় একাধিক সাদপন্থি অনুসারীর সঙ্গে।

সহিদুল নামের একজন বলেন, তাবলিগে কোনো বিভক্তি নেই। হেফাজতে ইসলাম তাবলিগে প্রবেশ করে ঝামেলা তৈরি করেছে। আমরা আগেও এক প্লেটে খাবার খেয়েছি। আগামীতে তাবলিগে কোনো বিভক্তি থাকবে না।

মাওলানা সাদকে ইজতেমায় আসার সুযোগ দিতে সরকারের কাছে অনুরোধ জানান কামরুল ইসলাম নামের একজন।

তিনি বলেন, প্রতিবার জুবায়েরপন্থিরা ইজতেমা করে। তারা পুরো ইজতেমা ময়দান নোংরা করে ফেলে। এবার আমরা আগে করবো। সাদ সাহেব তার বয়ানের মাধ্যমে সব বিভক্তি দূর করবেন। আগামীতে আরও বড় জমায়েত করা হবে বলেও জানান এই অনুসারীরা।

কাকরাইল ছাড়লেন সাদপন্থিরা

এদিকে, কাকরাইল মসজিদে অবস্থানের ক্ষেত্রে তাবলিগের দুই গ্রুপের মধ্যে মাওলানা যুবায়েরপন্থিরা চার সপ্তাহ ও মাওলানা সাদপন্থিরা দুই সপ্তাহ করে পর্যায়ক্রমে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন। সেই নিয়ম অনুযায়ী, আজ সাদপন্থিরা কাকরাইল মসজিদে অবস্থান নেন।

সম্প্রতি কাকরাইল মসজিদ ও টঙ্গী ইজতেমা ময়দানকে দখল করার বিষয়কে কেন্দ্র করে তাবলিগের দুই গ্রুপের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। দুই গ্রুপই পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দিচ্ছে।

এসএম/এসএনআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।