অবশেষে প্রায় ৭ বছর পর চাকরি ফেরত পাচ্ছেন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা হাসান রুহী। তাকে চাকরিতে পুনর্বহালের রায় বহাল রেখেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
এ বিষয়ে সরকারের করা আবেদন খারিজ করে বুধবার (১৩ নভেম্বর) আদেশ দেন আপিল বিভাগের সিনিয়র বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ।আদালতে আজ হাসান রুহীর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ব্যারিস্টার ওমর ফারুক।
বিনা অনুমতিতে কর্মস্থল ত্যাগ, কর্তৃপক্ষের আদেশ না মানা, বিভাগীয় কাজ সম্পাদনে চরম অবহেলা, অসৌজন্যমূলক আচরণ এবং কাজ না করে বেতন দাবি করে মহাপরিচালক বরাবর আবেদন করাসহ বিভিন্ন অভিযোগে ২০১৭ সালের ২১ সেপ্টেম্বর তাকে চাকরি হতে অপসারণ করা হয়।
পরে একই বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর তিনি মহাপরিচালক বরাবর আপিল করেন। একই বছরের ২০ ডিসেম্বর ওই আপিল নামঞ্জুর হয়। পরে তিনি প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন। ২০১৯ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর তার মামলা খারিজ করা হয়। এরপর হাসান রুহী আপিল ট্রাইব্যুনালে আপিল করেন।
২০২৩ সালের ৯ অক্টোবর প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনাল রায় দেন। রায়ে তার আপিল আংশিক মঞ্জুর হয়। ওই আদেশে বলা হয়, তিনি চাকরিতে পুনর্বহাল হবেন এবং বিধি অনুযায়ী সব বকেয়া বেতন ভাতা পাবেন। চাকরিতে অনুপস্থিতকালে বিনা বেতনে অসাধারণ ছুটি হিসেবে গণ্য হবে। এর বিরুদ্ধে সরকারপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করে।
ব্যারিস্টার ওমর ফারুক জানান, ২০০৮ সালে হাসান রুহী নিয়োগ পান। পরে কর্মক্ষেত্রে অনুপস্থিত থাকা, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আদেশ না মানা, অসৌজন্যমূলক আচরণ করার অভিযোগে তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। এর বিরুদ্ধে মামলার পর প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল তার বিপক্ষে রায় দেন। আপিলের পর আপিল ট্রাইব্যুনালে তার পক্ষে রায় আসে। ওই রায়ে বলা হয়, দ্বিতীয়বার শোকজ নোটিশের সময় তদন্ত রিপোর্ট দেওয়া হয়নি এবং নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ তাকে শাস্তি দেয়নি।
তিনি বলেন, মামলাটি আপিল বিভাগে আসার পর হাসান রুহী নিজে শুনানির জন্য আদালতে দাঁড়ান। পরে আদালত তাকে সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইডে পাঠান। লিগ্যাল এইড থেকে আইনজীবী হিসেবে আমাকে নিযুক্ত করা হয়। গতকাল শুনানি করি। আজ রায় হয়েছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি কেন দরখাস্ত করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে তার বকেয়া বেতন চেয়েছিলেন। এটি নাকি ওনার অপরাধ।
তিনি আরও বলেন, আমি দেখিয়েছি ওনার বিরুদ্ধে অভিযোগের কোনো বর্ণনা নেই। তিনি দ্বিতীয় শ্রেণীর কর্মকর্তা। তাকে তৃতীয় শ্রেণীর দেখিয়ে যেভাবে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ বরখাস্ত করেছে, আদালত তা শুনেছেন এবং রায় দিয়েছেন। তবে ২০১৮ সাল থেকে এখন পর্যন্ত অর্থাৎ যে সময় অনুপস্থিত ছিলেন, সে সময় তিনি বেতন-ভাতা পাবেন না। তা ছুটি হিসেবে গণ্য হবে। আর চাকরি ফেরত পাবেন।
এফএইচ/এমএএইচ/জিকেএস