রেফারিকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে কোচের কিংবা ফুটবলারের বরখাস্ত হওয়ার ঘটনা আছে অহরহ। কিন্তু কোচ ও ক্লাবকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করে রেফারিদের বরখাস্ত হওয়ার নজির হাতেগোনা। এবার সেই হাতেগোনার তালিকায় যুক্ত হলো নতুন আরও এক ঘটনা।
লিভারপুল ও ক্লাবটির সাবেক কোচ ইয়ুর্গেন ক্লপকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করে সাময়িক বরখাস্ত হয়েছেন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের রেফারি ডেভিড কোতে। ফিফার তালিকাভুক্ত এই রেফারির বিরুদ্ধে আনার অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছে ইংলিশ ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (এফএ)।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘এক্সে’ কোতের দুটি ভিডিও ক্লিপ ভাইরাল হয়। সেখানে দেখা যায়, সোফায় অখ্যাত এক ব্যক্তির পাশে বসে আছেন ইংলিশ এই রেফারি। পাশের ব্যক্তি কোতেকে জিজ্ঞেস করছেন লিভারপুল ও ক্লপ সম্পর্কে। সে প্রশ্নের জবাবেই করুচিপূর্ণ মন্তব্য করে বসেন কোতে।
ভিডিওটি কোন সময়ের, সেটা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি এবং সত্যতাও যাছাই করা যায়নি। তথ্য উদঘাটনে তদন্ত শুরু করার কথা জানিয়েছে এফএ।
ঘটনা যদি সত্য হয়, তাহলে কোতের রেফারি ক্যারিয়ারের সুনাম তলানীতে গিয়ে ঠেকবে। সংবেদনশীল এই ঘটনার তদন্ত শেষ হওয়ার পর এই বিষয়ে হালনাগাদ তথ্য জানাবে ইংলিশ ফুটবলের রেফারিং কমিটি (পিজিএমওএল)। তদন্ত চলাকালীন সময়ে রেফারি হওয়া কিংবা ভিএআরের দায়িত্ব পাওয়ার যোগ্য হবেন না কোতে।
২০১৮ সালে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের রেফারি প্যানেলে যুক্ত হন কোতে। ২০২৩ সালে কারাবাও কাপের ফাইনালে ম্যানচেস্টার ইউনাউটেড ও নিউক্যাসেলের মধ্যকার ম্যাচেও রেফারির দায়িত্ব পালন করেন ৪২ বছর বয়সী ইংলিশ। সর্বশেষ গত শনিবার লিভারপুল ও অ্যাস্টন ভিলার মধ্যকার ম্যাচে রেফারি ছিলেন তিনি। ২০২০ ও ২০২২ সালে ফিফার তালিকাভুক্ত রেফারিও হন কোতে।
ভাইরাল ভিডিওতে কোতের মন্তব্য শুনে ধারণা করা হচ্ছে, কোভিডের সময়কার লিভারপুলের কোনো ম্যাচ নিয়ে তা করেছেন তিনি। ওই ম্যাচে কোতে চতুর্থ রেফারির দায়িত্ব পালন করছিলেন। সে সময় লিভারপুলের কোচ ছিলেন ক্লপ। ২০১৫ সালে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার পর ২০২৩-২৪ মৌসুম শেষ করে অলরেডদের দায়িত্ব ছাড়েন এই জার্মান কোচ।
আলোচিত সেই ম্যাচে লিভারপুলের পারফরম্যান্স নিয়ে জিজ্ঞেস করলে কুরুচিপূর্ণ করেন কোতে। বলে ওঠেন, ‘লিভারপুল —–।’ আর ক্লপকে নিয়ে বলেন, ‘সত্যিকার —–।’
লিভারপুল ও ক্লপ নিয়ে কেন এমন মন্তব্য, উত্তরে কোতে বলেন, ‘লকডাউনে বার্নলির ম্যাচে যখন আমি তাদের (লিভারপুল) বিপক্ষে অভিযোগ তুলেছিলাম, তখন তিনি (ক্লপ) আমাকে মিথ্যা অপবাদ দিয়েছিল। আমার দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছিল। উগ্রতা দেখিয়ে আমি এই বিষয়ে কারো সঙ্গে কথা বলার আগ্রহ দেখাইনি। আমি তার (ক্লপ) সঙ্গে কথা না বলার যথাসাধ্য চেষ্টা করি। জেমস (লিভারপুলের অধিনায়ক জেমস মিলনার) সঠিক ছিলেন।’
পাশে বসা ওই লোকটি তখন বলেন, ‘দীর্ঘ গল্প সংক্ষিপ্ত। ইয়ুর্গেন ক্লপের একটি —-। লিভারপুলের সবাই মূর্খ-বিরক্তিকর। আমরা স্কাউসার্সদের (লিভারপুলের মানুষদের ডাক নাম) ঘৃণা করি।’
দ্বিতীয় ভিডিওতে কোতে বলেন, ‘এ বিষয়ে নিশ্চিত হতে হবে যে, শেষ ভিডিওটি কোথাও যাবে না। বিষয়টা গুরুত্ব সহকারে দেখবেন।’
পাশে থাকা অন্য লোক তখন বলেন, ‘সে (কোতে) একজন প্রিমিয়ার লিগের রেফারি। আমরা তার ক্যারিয়ার নষ্ট না করি। আমরা ভালো ছেলে। আমরা একজন লোকের ক্যারিয়ার নষ্ট করতে পারি না। আমরা তেমন খারাপ নই। এছাড়া সে একজন কিংবদন্তি। তার ক্যারিয়ার নষ্ট না করি।’
এমএইচ/জিকেএস