তাকবিরে তাহরিমার মাধ্যমে নামাজ শুরু করার পর নামাজের বাইরের সব কাজকর্ম হারাম বা নিষিদ্ধ হয়ে যায়। রাসুল (সা.) বলেন, সালাতের চাবি হল পবিত্রতা। তাকবিরে তাহরিমা নামাজের বাইরের সব কাজ কাজ হারাম করে দেয় আর সালাম তা হালাল করে। (সুনানে তিরমিজি)
নামাজরত অবস্থায় কারো সাথে কথা বলা বা কাউকে সালাম দেওয়াও নিষিদ্ধ। রাসুল (সা.) বলেছেন, নামাজে কারো সাথে কথা বলার সুযোগ নেই। নামাজ শুধু তাসবিহ, তাকবি ও কুরআন তিলাওয়াত। (সহিহ মুসলিম)
তাই নামাজ অবস্থায় ইচ্ছাকৃতভাবে বা ভুল করে কাউকে সম্বোধন করে কিছু বললে বা সালাম দিলে নামাজ ভেঙে যাবে। শুধু নিজে শুনতে পায় এতটুকু নিচু আওয়াজে কথা বলে ফেললেও নামাজ ভেঙে যাবে।
কেউ যদি নামাজ আদায়রত ব্যক্তিকে সালাম দেয়, নামাজি ইচ্ছাকৃতভাবে বা ভুল করে সশব্দে অর্থাৎ মুখে সালামের উত্তর দিলে নামাজ ভেঙে যাবে।
নামাজ অবস্থায় কেউ সালাম দিলে ইশারায়ও সালামের উত্তর দেওয়া ঠিক নয়। হানাফি মাজহাব অনুযায়ী নামাজ অবস্থায় ইশারায় সালামের উত্তর দেওয়া মাকরুহ বা অপছন্দনীয়। তবে কেউ এক হাত অথবা মাথা দিয়ে ইশারা করে সালামের উত্তর দিলেও নামাজ ভাঙবে না।
নামাজ অবস্থায় এক হাত অথবা মাথা দিয়ে ইশারা করে অন্যন্য কথা বা প্রশ্নের উত্তর দিলেও নামাজ নষ্ট হয় না। তবে নামাজে থাকা অবস্থায় এভাবে ইশারায় উত্তর দেওয়া অপছন্দনীয় কাজ।
নামাজ ইসলামের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। একজন মুসলমান যখন নামাজে দাঁড়ায়, তখন পূর্ণ একাগ্রতার সাথে আল্লাহমুখী হওয়া উচিত। কারণ সে তখন সে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের সঙ্গে একান্তে কথা বলার মতো অবস্থায় থাকে। রাসুলে কারিম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যখন তোমাদের কেউ সালাতে দাঁড়ায়, তখন সে তার রবের সাথে একান্তে কথা বলে। (সহিহ বুখারি)
হজরত আবু যর (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, নামাজরত ব্যক্তি যতক্ষণ এদিক সেদিক ভ্রুক্ষেপ না করে ততক্ষণ আল্লাহর রহমত তার প্রতি থাকে। আর যখন সে অন্য দিকে ভ্রুক্ষেপ করে তখন আল্লাহর রহমত তার থেকে সরে যায়। (সুনানে আবু দাউদ)
নামাজরত ব্যক্তির মনোযোগ নষ্ট হয় এমন কোনো কাজ করা অন্যায়। তাই একেবারে অপরিহার্য না হলে নামাজরত ব্যক্তিকে সালাম দেওয়া, তাকে কিছু জিজ্ঞাসা করা এবং জবাব দিতে বাধ্য করাও গুনাহর কাজ। এ কাজ থেকে বিরত থাকা জরুরি।
ওএফএফ/জিকেএস